‘এখনো গেল না আঁধার’

অশুভ শক্তির বিনাস আর সৃষ্টির বারতা নিয়ে পুরানো বছরকে বিদায় জানিয়েছে চট্টগ্রামবাসী।

চট্টগ্রাম ব্যুরোবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 13 April 2017, 03:28 PM
Updated : 13 April 2017, 03:28 PM

বৃহস্পতিবার বিকালে পুরানো বছরকে বিদায় জানিয়ে শোভাযাত্রার আয়োজন করেছে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় চারুকলা ইনস্টিটিউট।

এছাড়াও ডিসি হিলে ‘সম্মিলিত পহেলা বৈশাখ উদযাপন পরিষদ’ ও সিআরবি শিরিষ তলায় নববর্ষ উদযাপন পরিষদ’ আলাদা আলাদা ভাবে বিদায় জানিয়েছে বাংলা ১৪২৩ কে।

মঙ্গলবার রাতে শিক্ষার্থীদের আঁকা দেয়ালচিত্র ‘পোড়া মবিল’ দিয়ে মুছে দেওয়ার প্রতিবাদ জানিয়ে চারুকলা ইনস্টিটিউটের শিক্ষার্থীরা শোভাযাত্রায় অংশ নিয়েছে কালো ব্যাজ ধারণ করে।

চট্টগ্রামে বাংলা বর্ষবরণ প্রস্তুতির মধ্যে মঙ্গলবার রাতে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় চারুকলা ইনস্টিটিউটের সামনের দেয়ালচিত্রে ‘পোড়া মবিল’ ছিটিয়ে নষ্ট করা হয়।

দুটি মোটর সাইকেলে চার যুবক এসে দেয়ালচিত্রটি নষ্ট করে দিয়ে যায় বলে প্রত্যক্ষদর্শীকে উদ্ধৃত করে চকবাজার থানার ওসি নুরুল হুদা জানিয়েছিলেন।

চারুকলা ইনস্টিটিউটের সহযোগী অধ্যাপক জাহেদ আলী চৌধুরী যুবরাজ বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে জানান, দেয়ালচিত্র মুছে দেওয়ার প্রতিবাদ জানিয়ে আমরা ইনস্টিটিউটের শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা কালো ব্যাজ ধারণ করেছি।

বৈশাখী দেয়ালচিত্রে দুর্বৃত্তের ছোড়া মবিল তাদের আয়োজন ও উদ্যোগকে এতটুকুও দমিয়ে রাখতে পারেনি। তবে পোড়া মবিলে নষ্ট করে দেওয়া বৈশাখী দেয়ালচিত্রে নতুন করে কিছু আঁকা হবে না। সেটি রেখে দেওয়া হবে প্রতিবাদের ভাষা হিসেবে। 

চারুকলা ইনস্টিটিউটের সহকারী অধ্যাপক জিহান করিম বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “বাইরের দেয়ালে যেটি কালো মবিলে নষ্ট করে দেওয়া হয়েছে, সেটিতে আমরা নতুন করে কিছু করছি না। প্রতিবাদের ভাষা হিসেবে সেটি সেভাবেই রেখে দেওয়ার চিন্তা রয়েছে।

“বাংলা বছরের প্রথমদিন শুক্রবার সকালে মঙ্গল শোভাযাত্রায় অংশ নিতে আসা লোকজন নষ্ট করে দেওয়া দেয়ালচিত্রটি দেখবে এবং বাঙালির চিরায়ত সংস্কৃতির ওপর দুর্বৃত্তরা কিভাবে আঘাত করেছে, তা বুঝতে পারবে। এটি রেখে দেওয়া মানে আমাদের প্রতিবাদ।”

নষ্ট করে দেওয়া দেয়ালচিত্রের পাশে পিভিসি বোর্ড লাগিয়ে তার শিরোনাম করা হয়েছে ‘অন্ধকারের উৎস হতে উৎসারিত আলো...’

পাশের দেয়ালে লেখা হয়েছে রবি ঠাকুরের কবিতার পঙতি-

“এখনো গেল না আঁধার/ এখনো রহিল বাঁধা”

“আর রেখো না আঁধারে/ আমারে দেখতে দাও”

ডিসি হিল

ডিসি হিলে নাচ-গান-আবৃত্তি পরিবেশনের মধ্য দিয়ে পুরানো বছরকে বিদায় জানায় সম্মিলিত পহেলা বৈশাখ উদযাপন পরিষদ।

পরিষদের সংগঠক আহমেদ ইকবাল হায়দার বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে জানান, বিকাল ৪টায় জাতীয় সংগীতের মধ্য দিয়ে শুরু হয় বর্ষ বিদায়ের আয়োজন। একক ও দলীয় নাচ আর গান, আবৃত্তি পরিবেশন করেন শিল্পীরা।

প্রতিবারের মত এবছরও দুই গুণি সাংবাদিক নাছির উদ্দিন চৌধুরী ও প্রবীণ মঞ্চ সজ্জাকারী সাধন দে’কে সম্মাননা দিয়েছে সম্মিলিত পহেলা বৈশাখ উদযাপন পরিষদ।

সিআরবি শিরিষতলা

সিআরবি শিরিষতলায় বর্ষ বিদায়ের অনুষ্ঠানের উদ্বোধন করেন দৈনিক আজাদীর সম্পাদক এম এ মালেক।

নববর্ষ উদযাপন পরিষদের সদস্য সচিব স্বপন মজুমদার বিডিনিউজ টোযেন্টিফোর ডটকমকে বলেন, বর্ষ বিদায়ের অনুষ্ঠানে নাচ-বাউল গান ও আবৃত্তি পরিবেশন করা হয়।