বছর সাতেক আগে ১০৭টি ড্রামের নমুনা পরীক্ষা করে দুটিতে ৩৭০ লিটার তরল কোকেনের অস্তিত্ব ধরা পড়ে।
Published : 19 Sep 2022, 09:23 PM
চট্টগ্রাম বন্দর দিয়ে তরল কোকেন আমদানির ঘটনায় চোরাচালান ও মাদক আইনের দুই মামলায় কাস্টমস ও বন্দরের দুই কর্মকর্তা সাক্ষ্য দিয়েছেন।
সোমবার চট্টগ্রামের চতুর্থ অতিরিক্ত মহানগর দায়রা জজ শরীফুল আলম ভূঁইয়া তাদের সাক্ষ্য নেন।
মহানগর দায়রা জজ আদালতের পিপি মো. ফখরুদ্দিন চৌধুরী বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, সে সময় চট্টগ্রাম কাস্টমসের সহকারী কমিশনারের দায়িত্বে থাকা মুকিতুল হাসান এবং চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের সহকারী টার্মিনাল ম্যানেজার রাজীব চৌধুরী সাক্ষ্য দিয়েছেন।
“কাস্টমস কর্মকর্তা জব্দ তালিকার সাক্ষী। উনিসহ অন্যান্য সরকারি সংস্থার কর্মকর্তাদের উপস্থিতিতে রাসায়নিক পরীক্ষার জন্য আলামত হিসেবে কন্টেইনারে রক্ষিত ড্রামের ভেতর কোকেন মিশ্রিত সূর্যমুখী তেল সংগ্ৰহ করা হয়। সে বিষয়ে তিনি সাক্ষ্য দিয়েছেন।”
অপর সাক্ষী রাজীব চৌধুরী বন্দরে জাহাজ আসা এবং জাহাজ থেকে ওই কন্টেইনারসহ অন্যান্য কন্টেইনার চট্টগ্রাম বন্দরে নামানোর বিষয়ে সাক্ষ্য দেন বলে জানান পিপি মো. ফখরুদ্দিন চৌধুরী।
এখন পর্যন্ত এ ঘটনায় মাদকের মামলাটিতে ২৮ জন এবং চোরাচালানের মামলায় ৭ জনের সাক্ষ্য নেওয়া হল। আগামী ২৬ অক্টোবর এ মামলায় পরবর্তী সাক্ষ্যগ্রহণের দিন ঠিক করেছে আদালত।
এর আগে গত ৭ ফেব্রুয়ারি কোকেন জব্দের ঘটনায় বিশেষ ক্ষমতা আইনে করা চোরাচালানের মামলাটিতে ১০ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করা হয়। এরপর ২ মার্চ চোরাচালান মামলায় প্রথম তিনজন সাক্ষী সাক্ষ্য দেন।
তার আগে ২০১৯ সালের ২৯ এপ্রিল মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনের মামলাটিয় ১০ আসামির বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন হয়েছিল।
এ দুই মামলার আসামিরা হলেন- খান জাহান আলী লিমিটেডের কর্মকর্তা গোলাম মোস্তফা সোহেল, মালিক নূর মোহাম্মদ, মোস্তফা কামাল, আইটি বিশেষজ্ঞ মো. মেহেদী আলম, গার্মেন্ট পণ্য রপ্তানিকারক প্রতিষ্ঠান মণ্ডল গ্রুপের বাণিজ্যিক নির্বাহী আতিকুর রহমান, কসকো বাংলাদেশ শিপিং লাইনস লিমিটেডের ব্যবস্থাপক (করপোরেট, বিক্রয় ও বিপণন) এ কে এম আজাদ রহমান, সিঅ্যান্ড এফ কর্মকর্তা সাইফুল ইসলাম, নূর মোহাম্মদের ভাই খান জাহান আলী লিমিটেডের পরিচালক মোস্তাক আহমদ খান, দুই যুক্তরাজ্য প্রবাসী ফজলুর রহমান ও বকুল মিয়া।
এদের মধ্যে এ কে এম আজাদ রহমান ও সাইফুল ইসলাম জামিনে আছেন; আর জেলহাজতে আছেন গোলাম মোস্তফা সোহেল, মোস্তফা কামাল ও আতিকুর রহমান। বাকি পাঁচজন পলাতক।
গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে ২০১৫ সালের ৭ জুন চট্টগ্রাম বন্দরে একটি কনটেইনার আটক করে সিলগালা করে দেয় শুল্ক গোয়েন্দা অধিদপ্তর। বলিভিয়া থেকে মেসার্স খান জাহান আলী লিমিটেডের নামে আমদানি করা সূর্যমুখী তেলবাহী কনটেইনারটি জাহাজে তোলা হয় উরুগুয়ের মন্টেভিডিও বন্দর থেকে। সেখান থেকে সিঙ্গাপুর হয়ে ওই বছরের ১২ মে পৌঁছায় চট্টগ্রাম বন্দরে।
পরে আদালতের নির্দেশে কন্টেইনার খুলে ১০৭টি ড্রাম থেকে নমুনা সংগ্রহ করা হয়। শুরুতে বন্দরের পরীক্ষায় এসব নমুনায় কোকেনের উপস্থিতি না মেলায় পরে ঢাকার বিসিএসআইআর এবং বাংলাদেশ ড্রাগ টেস্টিং ল্যাবরেটরিতে তরলের নমুনা পুনরায় পরীক্ষা করা হয়।
দুই পরীক্ষাগারেই নমুনা পরীক্ষা করে ১০৭টি ড্রামের মধ্যে দুটিতে ৩৭০ লিটার তরল কোকেনের অস্তিত্ব ধরা পড়ে।