আদালত আগামী ১১ সেপ্টেম্বর মামলার পরবর্তী শুনানির দিন ধার্য করেছে।
Published : 09 Aug 2023, 08:40 PM
চট্টগ্রাম বন্দর দিয়ে তরল কোকেন আমদানির ঘটনায় দায়ের করা চোরাচালান ও মাদক আইনের দুই মামলায় আদালতে সাক্ষ্য দিয়েছেন মামলাটির দ্বিতীয় তদন্ত কর্মকর্তা মো. কামরুজ্জামান।
সোমবার চট্টগ্রামের চতুর্থ অতিরিক্ত মহানগর দায়রা জজ শরীফুল আলম ভূঞাঁর আদালতে তিনি সাক্ষ্য দেন।
আলোচিত এই ঘটনার দুটি মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ছিলেন নগর গোয়েন্দা পুলিশের সেসময়ের সহকারী কমিশনার মো. কামরুজ্জামান।
চট্টগ্রাম মহানগর দায়রা জজ আদালতের পিপি মো. আবদুর রশীদ বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “আদালতে মামলার দ্বিতীয় তদন্ত কর্মকর্তা মো. কামরুজ্জামান সাক্ষ্য দিয়েছেন। সাক্ষ্যে তিনি তদন্তের পাওয়া বিষয় তুলে ধরেন। তাকে আসামিপক্ষের আইনজীবীরা জেরা করেছেন। আদালত আগামী ১১ সেপ্টেম্বর মামলার পরবর্তী শুনানির দিন ধার্য করেছেন।”
এখন পর্যন্ত এ ঘটনায় মাদকের মামলাটিতে ২৯ জন এবং চোরাচালানের মামলায় ৮ জনের সাক্ষ্য নেয়া হলো।
গত বছরের ৭ ফেব্রুয়ারি কোকেন জব্দের ঘটনায় বিশেষ ক্ষমতা আইনের মামলাটিতে ১০ আসামির বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করা হয়। এরপর ২০২২ সালের ২ মার্চ চোরাচালান মামলায় প্রথম তিনজন সাক্ষী সাক্ষ্য দেন।
তার আগে ২০১৯ সালের ২৯ এপ্রিল মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনের মামলাটিতে ১০ আসামির বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন হয়েছিল।
এই দুই মামলার আসামিরা হলেন- খান জাহান আলী লিমিটেডের কর্মকর্তা গোলাম মোস্তফা সোহেল, মালিক নূর মোহাম্মদ, মোস্তফা কামাল, আইটি বিশেষজ্ঞ মো. মেহেদী আলম, গার্মেন্ট পণ্য রপ্তানিকারক প্রতিষ্ঠান মণ্ডল গ্রুপের বাণিজ্যিক নির্বাহী আতিকুর রহমান, কসকো বাংলাদেশ শিপিং লাইনস লিমিটেডের ব্যবস্থাপাক (করপোরেট, বিক্রয় ও বিপণন) একেএম আজাদ রহমান, সিএন্ডএফ কর্মকর্তা সাইফুল ইসলাম, নূর মোহাম্মদের ভাই খান জাহান আলী লিমিটেডের পরিচালক মোস্তাক আহমদ খান, দুই যুক্তরাজ্য প্রবাসী ফজলুর রহমান ও বকুল মিয়া।
এদের মধ্যে একেএম আজাদ রহমান ও সাইফুল ইসলাম জামিনে, গোলাম মোস্তফা সোহেল, মোস্তফা কামাল ও আতিকুর রহমান হাজতে আছেন। বাকি পাঁচজন পলাতক।
বলিভিয়া থেকে মেসার্স খান জাহান আলী লিমিটেডের নামে আমদানি করা সূর্যমুখী তেলবাহী কনটেইনারটি জাহাজে তোলা হয় উরুগুয়ের মন্টেভিডিও বন্দর থেকে। সেখান থেকে সিঙ্গাপুর হয়ে ওই বছরের ১২ মে পৌঁছায় চট্টগ্রাম বন্দরে কনটেইনার।
গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে ২০১৫ সালের ৭ জুন চট্টগ্রাম বন্দরে কনটেইনারটি আটক করে সিলগালা করে শুল্ক গোয়েন্দা অধিদপ্তর।
পরে আদালতের নির্দেশে কন্টেইনার খুলে ১০৭টি ড্রাম থেকে নমুনা সংগ্রহ করা হয়। শুরুতে বন্দরের পরীক্ষায় এসব নমুনায় কোকেনের উপস্থিতি না মেলায় পরে ঢাকার বিসিএসআইআর এবং বাংলাদেশ ড্রাগ টেস্টিং ল্যাবরেটরিতে তরলের নমুনা পরীক্ষা করা হয়।
দুই পরীক্ষাগারেই নমুনা পরীক্ষা করে ১০৭টি ড্রামের মধ্যে দুটিতে ৩৭০ লিটার তরল কোকেনের অস্তিত্ব ধরা পড়ে।
এ ঘটনায় ২০১৫ সালের ২৮ জুন চট্টগ্রামের বন্দর থানায় নূর মোহাম্মদ ও গোলাম মোস্তফা সোহেলকে আসামি করে মাদক আইনে মামলা করেন পুলিশের এসআই ওসমান গণি। পরে আদালত মামলায় চোরাচালানের ধারা সংযোগের নির্দেশ দেয়।
এরপর ২০১৫ সালের ১৯ নভেম্বর চট্টগ্রাম নগর গোয়েন্দা পুলিশের তৎকালীন সহকারী কমিশনার মো. কামরুজ্জামান আটজনের বিরুদ্ধে আলোচিত এ মামলার অভিযোগপত্র জমা দেন।
এতে আমদানিকারক প্রতিষ্ঠান খান জাহান আলী লিমিটেডের মালিক নুর মোহাম্মদকে অব্যাহতির সুপারিশ করা হয়।
এ কারণে ‘তদন্তে ত্রুটি আছে’ উল্লেখ করে আদালত ২০১৫ সালের ৭ ডিসেম্বর র্যাবের একজন অতিরিক্ত পুলিশ সুপার পদমর্যাদার কর্মকর্তা দিয়ে পুনরায় তদন্তের নির্দেশ দিয়েছিল।
এরপর ২০১৭ সালের ১৩ এপ্রিল অধিকতর তদন্ত শেষে মহানগর হাকিম হারুনুর রশিদের আদালতে সম্পূরক অভিযোগপত্র জমা দেন র্যাব-৭ এর সেসময়ের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মুহাম্মদ মহিউদ্দিন ফারুকী।