বিভিন্ন নৃ-গোষ্ঠীর সংস্কৃতি বাংলাদেশের অমূল্য সম্পদ: অনুপম সেন

নৃ-গোষ্ঠীর সংস্কৃতির বিকাশে সাম্প্রদায়িকতা ও ধর্মান্ধতা বড় অন্তরায় বলে মনে করেন একুশে পদকপ্রাপ্ত এই শিক্ষাবিদ।

চট্টগ্রাম ব্যুরোবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 27 Feb 2023, 05:26 PM
Updated : 27 Feb 2023, 05:26 PM

জাতীয় উন্নয়নের জন্যই বিভিন্ন নৃ-গোষ্ঠীর সংস্কৃতির বিকাশে ইতিবাচক দৃষ্টিভঙ্গি দরকার বলে মন্তব্য করেছেন সমাজবিজ্ঞানী অধ্যাপক ড. অনুপম সেন।

তিনি বলেছেন, “বাংলাদেশের বিভিন্ন নৃ-গোষ্ঠীর বৈচিত্র্যপূর্ণ সংস্কৃতি এ দেশের অমূল্য সম্পদ। সাংস্কৃতিক নানা উপাদান এসব জাতিগোষ্ঠীর সক্ষমতার বহিঃপ্রকাশ। জাতীয় উন্নয়নের জন্যই সকল নৃ-গোষ্ঠীর সংস্কৃতির বিকাশে ইতিবাচক দৃষ্টিভঙ্গি দরকার।

“দেশের সংখ্যাগুরু মানুষের উচিত, সংখ্যায় কম মানুষের সংস্কৃতির বিকাশে এগিয়ে আসা। ভাষা যদি না থাকে, তবে সংস্কৃতি বিলুপ্ত হবে। তাই প্রয়োজন বাংলাদেশের অনেক নৃ-গোষ্ঠীর ভাষা ও সংস্কৃতির সঠিক লালন।”

সোমবার সন্ধ্যায় চট্টগ্রামের অমর একুশে বইমেলা মঞ্চে ‘নৃগোষ্ঠী উৎসব’র আলোচনা সভায় তিনি এসব কথা বলেন।

অধ্যাপক অনুপম সেন বলেন, “নৃ-গোষ্ঠীগুলোর সংস্কৃতির বিকাশে সাম্প্রদায়িকতা ও ধর্মান্ধতা বড় অন্তরায়। বাংলাদেশের নৃ-গোষ্ঠী ও জাতিসত্ত্বা সমূহের মধ্যে চাকমা, মারমা, ত্রিপুরা, তঞ্চংগ্যা, ম্রো, লুসাই, বোম, পাংখোয়া, খুমি, চাক, খেয়াং রয়েছে।

“অসাম্প্রদায়িক সংস্কৃতির উপাদান মানুষে মানুষে বিভাজন রুখতে পারে। ১৯৭২ থেকে ১৯৭৫ সালের বঙ্গবন্ধুর শাসনামলে, শিক্ষা, স্বাস্থ্য, অবকাঠামোগত উন্নয়ন ইত্যাদি বিভিন্ন ক্ষেত্রে পার্বত্য চট্টগ্রামের বাসিন্দাদের প্রতি বঙ্গবন্ধুর আন্তরিকতা ও উদারতার ধারা অব্যাহত ছিল। এছাড়াও বঙ্গবন্ধুর শাসনামলেই পার্বত্য চট্টগ্রামের সকল নৃ-গোষ্ঠীয় ছাত্রছাত্রীদের জন্য বৈদেশিক বৃত্তি মঞ্জুর করা হয়েছিল।”

প্রিমিয়ার বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ড. অনুপম বলেন, “প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিশেষ উদ্যোগে সমতলের নৃ-গোষ্ঠীর জীবনমান উন্নয়নে ১৯৯৬ সাল থেকে একটি নীতিমালার আলোকে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় হতে “বিশেষ এলাকার জন্য উন্নয়ন সহায়তা (পার্বত্য চট্টগ্রাম ব্যতীত)” শীর্ষক কর্মসূচি বাস্তবায়ন করা শুরু হয়।

“কর্মসূচিটি চলমান। বাংলাদেশ সরকার পার্বত্য চট্টগ্রামের অধিবাসীদের আশা-আকাঙ্ক্ষা ও প্রত্যাশা পূরণে সর্বদা সচেষ্ট। টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রার অন্যতম অঙ্গীকার হচ্ছে, টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রার ১৭টি লক্ষ্য থেকে কোনো জাতিগোষ্ঠীই বাদ পড়বে না।”

মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তরের পরিচালক ড. আজাদ বুলবুলের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন খাগড়াছড়ি জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান কংজুরী চৌধুরী, আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা পুরস্কার প্রাপ্ত ভাষাবিদ মথুরা বিকাশ ত্রিপুরা, নাবিক ও প্রবাসী কল্যাণ পরিদপ্তরের পরিচালক সুমন বড়ুয়া, কলামিস্ট মাসুম চৌধুরী ও কাউন্সিলর পুলক খাস্তগীর।

স্বাগত বক্তব্য রাখেন বইমেলা কমিটির আহ্বায়ক কাউন্সিলর ড. নিছার উদ্দিন আহমেদ মঞ্জু। উপস্থিত ছিলেন শিক্ষা কর্মকর্তা উজালা রাণী চাকমা।

উৎসবে রাঙামাটি, খাগড়াছড়ি ও বান্দরবানের বিভিন্ন জাতি গোষ্ঠীর শিল্পীরা গান ও নৃত্য পরিবেশন করে।