১৯৮৫ সালে মজদুর পার্টি ও বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টি একীভূত হলে দলের সভাপতি নির্বাচিত হন আবুল বাশার।
Published : 07 Nov 2022, 09:12 PM
বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টির সাবেক সভাপতি ও জাতীয় শ্রমিক ফেডারেশনের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি কমরেড আবুল বাশারের মৃত্যুবার্ষিকীতে তাকে স্মরণ করেছে দলের চট্টগ্রাম জেলা কমিটি।
সোমবার বিকেলে নগরীর দোস্ত বিল্ডিংয়ে দলীয় কার্যালয়ে কমরেড আবুল বাশারের দ্বাদশ মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে এ স্মরণসভার আয়োজন করা হয়।
সভায় সভাপতির বক্তব্যে ওয়ার্কার্স পার্টি চট্টগ্রাম জেলা কমিটির সভাপতি অ্যাডভোকেট আবু হানিফ বলেন, “আবুল বাশার সদ্য প্রতিষ্ঠিত পাকিস্তানে শ্রমিক আন্দোলনকে একটি আপসহীন ধারায় প্রতিষ্ঠার জন্য সরকার-মালিকের কঠিন নির্যাতনের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ানো শিখিয়ে ছিলেন। আইয়ুবের স্বৈরাচারী শাসনের মধ্যেই তিনি পূর্ব বাংলায় একটি ঐক্যবদ্ধ শ্রমিক সংগঠন ও আন্দোলনের জন্ম দেন।
“বাংলাদেশে স্বাধীনতা ও একটি জনগনতান্ত্রিক রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার সংগ্রামে তিনি শ্রমিকদের সচেতন করেন। তার নেতৃত্বে হাজারো শ্রমিক মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণ করেন। এই দেশের পাটকলসহ প্রায় সকল রাষ্ট্রায়ত্ব শিল্পের শ্রমিকদের অবিসংবাদিত নেতা ছিলেন আবুল বাশার।”
দলের চট্টগ্রাম জেলা কমিটির সাধারণ সম্পাদক শরীফ চৌহান বলেন, “ন্যূনতম মজুরিসহ শ্রমিকদের সকল গণতান্ত্রিক আন্দোলনকে সফল করতে আজ আবুল বাশারের সংগ্রামী অভিজ্ঞতা ও চেতনাকে কাজে লাগানো প্রয়োজন।”
তিনি বলেন, “বন্ধ পাটকল চালু করা, শ্রমিকদের নুন্যতম মজুরি ২০ হাজার টাকা করা এবং শ্রমিক, কৃষক, দিনমজুরদের জন্য পূর্ণ রেশনিং চালুসহ শ্রমিকদের ট্রেড ইউনিয়ন করার অধিকার প্রতিষ্ঠার সংগ্রামকে বেগবান করতে আবুল বাশারের পথ ধরেই একটি ঐক্যবদ্ধ শ্রমিক আন্দোলন গড়ে তুলতে পারলেই শ্রমিকদের সংগ্রাম পূর্ণতা পাবে।”
১৯৩৪ সালে লক্ষ্মীপুরে জন্ম নেওয়া আবুল বাশার ষাটের দশকে চট্টগ্রামের শ্রমিক আন্দোলনে জড়িয়ে পড়েন। ন্যাপের রাজনীতি থেকে পরে তিনি পূর্ব বাংলার কমিউনিস্ট পার্টির সম্পাদক হন। ষাটের দশকে তিনি হয়ে ওঠেন পূর্ব পাকিস্তান মজদুর ফেডারেশনের গুরুত্বপূর্ণ নেতা।
শ্রমিক আন্দোলন করতে গিয়ে বহুবার জেলও খাটতে হয়েছে আবুল বাশারকে। একাত্তরে তিনি মুক্তিযুদ্ধে প্রত্যক্ষ অংশগ্রহণ করেন। স্বাধীনতার পর ১৯৭৩ সালে জাতীয় শ্রমিক ফেডারেশ গঠন করে শ্রমিক আন্দোলনকে বেগবান করেন।
১৯৮৫ সালে মজদুর পার্টি ও বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টি একীভূত হলে ওয়ার্কার্স পার্টির সভাপতি নির্বাচিত হন বাশার। ২০১০ সালের ৭ নভেম্বর মৃত্যুর দিন পর্যন্ত তিনি পার্টির পলিট ব্যুরোর সদস্য ছিলেন।
জাতীয় শ্রমিক ফেডারেশন চট্টগ্রাম জেলা কমিটির সাধারণ সম্পাদক দিদারুল আলম চৌধুরীর সঞ্চালনায় অন্যদের মধ্যে ট্রেড ইউনিয়ন কেন্দ্র চট্টগ্রাম জেলার সাধারণ সম্পাদক মছিউদৌলা, জাতীয় গার্মেন্টস ফেডারেশন চট্টগ্রাম বিভাগীয় সভাপতি ফয়েজ আহম্মদ, শ্রমিক নেতা আবদুল খালেক, ওয়ার্কার্স পার্টি চট্টগ্রাম জেলা কমিটির সদস্য মনসুর মাসুদ, মোখতার আহম্মদ, আমিন জুট মিল ওয়ার্কার্স ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক শামসুল আলম, জাতীয় কৃষক সমিতির জেলা আহ্বায়ক মাহবুব আলম, সিজেএমসিএল ওয়ার্কার্স ইউনিয়ন নেতা মকবুল আহম্মদ, যুব নেতা ডা. মোহাম্মদ মহসীন সভায় বক্তব্য দেন।