বিএসসি ১৯৮৭ সালে ডেনমার্ক থেকে ৬০ কোটি টাকায় অয়েল ট্যাংকার ‘বাংলার জ্যোতি’ ও ‘বাংলার সৌরভ’ সংগ্রহ করেছিল।
Published : 11 Mar 2025, 08:56 PM
আগুনে ক্ষতিগ্রস্ত দুই অয়েল ট্যাংকার ‘বাংলার জ্যোতি’ ও ‘বাংলার সৌরভ’ প্রায় ৪৬ কোটি টাকায় বিক্রি করেছে রাষ্ট্রায়ত্ত প্রতিষ্ঠান বাংলাদেশ শিপিং করপোরেশনের (বিএসসি)।
দরপত্রে সর্বোচ্চ দরদাতা নির্দিষ্ট সময়ে টাকা পরিশোধ না করায় দ্বিতীয় সর্বোচ্চ দর দেওয়া ‘জিরি সুবাদার শিপ রিসাইক্লিং ইন্ডাস্ট্রিজের’ কাছে ট্যাংকার দুটি বিক্রি করেছে বিএসসি।
ইতোমধ্যে বিএসসির পক্ষ থেকে জাহাজ দুটি হস্তান্তর করা হয়েছে।
জিরি সুবাদার শিপ রিসাইক্লিং ইন্ডাস্ট্রিজ শুল্ক-করসহ ট্যাংকার দুটি কিনতে বিএসসিকে ৪৫ কোটি ৮৬ লাখ ৬১ হাজার ৮৭৫ টাকা পরিশোধ করেছে।
মঙ্গলবার বিকালে নিজেদের কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলন করে বিএসসির ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) কমডোর মাহমুদুল মালেক এসব তথ্য জানান।
বিএসসি ১৯৮৭ সালে ডেনমার্ক থেকে ৬০ কোটি টাকায় অয়েল ট্যাংকার ‘বাংলার জ্যোতি’ ও ‘বাংলার সৌরভ’ সংগ্রহ করেছিল।
দুর্ঘটনায় পড়ার আগ পর্যন্ত ট্যাংকার দুটি ৪২৫ লাখ টন তেল পরিবহন করেছে। আর এসময়ে ‘বাংলার জ্যোতি’ ৩২২ কোটি টাকা এবং ‘বাংলার সৌরভ’ ২৮৫ কোটি টাকা নিট আয় করেছে বলে বিএসসির দাবি।
গত বছরের ৩০ সেপ্টেম্বর চট্টগ্রাম বন্দরের ডলফিন জেটিতে পাইপলাইনের মাধ্যমে তেল খালাসের সময় ‘বাংলার জ্যোতির’ সামনের অংশে বিস্ফোরণের পর আগুন লাগে। দুর্ঘটনায় জাহাজের একজন ক্যাডেটসহ চারজন নিহত হন। এসময় জাহাজটিতে ১১ হাজার ৭০০ টন ক্রুড অয়েল ছিল।
এই ঘটনার পাঁচদিন পর ৫ অক্টোবর বন্দরের বর্হিনোঙ্গরে থাকা অপর একটি মাদার ভ্যাসেল থেকে তেল লাইটার করে নিয়ে আসার পথে আগুন লাগে ‘বাংলার সৌরভে’। জাহাজ থেকে নামার সময় পানিতে পড়ে আহত হয়ে একজন ক্রু হাসপাতালে মারা যান। ওইসময় জাহাজটিতে ১১ হাজার ৫৫ টন তেল ছিল।
অগ্নিকাণ্ডের ঘটনার পর বিএসসি কর্তৃপক্ষ ওই সময়ে জাহাজ দুটিকে তাদের বহর থেকে বাদ দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেয় এবং বিক্রির জন্য দরপত্র আহ্বান করে।
বিএসসির এমডি মাহমুদুল মালেক বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, ৩৬ কোটি ৬৯ লাখ সংরক্ষিত মূল্যের আন্তর্জাতিক দরপত্রে ১৬টি প্রতিষ্ঠান অংশ নিয়েছিল।
গত ৭ জানুয়ারি খোলা দরপত্রে শুল্ক-কর ছাড়া ৪০ কোটি ৪৪ লাখ ৭৪ হাজার ৪০৯ টাকা দর দিয়ে মাস্টার অ্যান্ড ব্রাদার্স নামের একটি প্রতিষ্ঠান সর্বোচ্চ দরদাতা হলে তাদের কাছে জাহাজ দুটি বিক্রির সিদ্ধান্ত হয়।
বিএসসির কর্মকর্তারা বলেছেন, এ বছরের ২ ফেব্রুয়ারি মধ্যে মাস্টার অ্যান্ড ব্রাদার্স টাকা পরিশোধ না করায় দ্বিতীয় সর্বোচ্চ দরদাতা জিরি সুবাদার শিপ রিসাইক্লিং ইন্ডাস্ট্রিজের কাছে ট্যাংকার দুটি বিক্রির অনুমোদন দেওয়া হয়। তারা দর দিয়েছিল ৩৬ কোটি ৬৯ লাখ ২৯ হাজার ৫০০টাকা।
শুল্ক-করসহ তারা পরিশোধ করেছে মোট ৪৫ কোটি ৮৬ লাখ ৬১ হাজার ৮৭৫ টাকা। গত ৫ মার্চ জাহাজ দুটি জিরি সুবাদারকে হস্তান্তর করে বিএসসি কর্তৃপক্ষ।
সীতাকুণ্ড এলাকার পুরাতন জাহাজ ভাঙ্গা প্রতিষ্ঠান জিরি সুবাদার শিপ রিসাইক্লিং ইন্ডাস্ট্রিজ অয়েল ট্যাংকার দুটির বিচিং শুরু করেছে বলে জানা গেছে।