“এবার ঈদ অত্যন্ত আনন্দ ও উৎসবের মধ্য দিয়ে পালিত হয়েছে এবং হচ্ছে,” বলেন তিনি।
Published : 13 Apr 2024, 08:37 PM
সোমালি জলদস্যুদের হাতে জিম্মি ‘এমভি আবদুল্লাহ’র নাবিকরা শিগগিরই মুক্ত হবে বলে আশা প্রকাশ করেছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী হাছান মাহমুদ।
তিনি বলেছেন, “সোমালিয়ার জলদস্যুদের হাতে জিম্মি জাহাজ ও নাবিকদের উদ্ধারের ব্যাপারে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ অগ্রগতি আছে। খুব সহসা আপনারা সুখবর শুনতে পাবেন।”
শনিবার বিকালে চট্টগ্রামের লালদিঘী মোড়ে ‘চাটগাঁইয়া ঈদ আনন্দ উৎসব’র উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বক্তৃতা শেষে সাংবাদিকদের তিনি এ কথা বলেন।
গত ১২ মার্চ দুপুরে ভারত মহাসাগরে সোমালি জলদস্যুদের কবলে পড়ে বাংলাদেশের কবির গ্রুপের এসআর শিপিংয়ের মালিকানাধীন জাহাজ এমভি আবদুল্লাহ।
মোজাম্বিক থেকে ৫৫ হাজার টন কয়লা নিয়ে কয়লা নিয়ে সংযুক্ত আরব আমিরাতে যাচ্ছিল জাহাজটি। জিম্মি ২৩ নাবিকের সবাই বাংলাদেশি।
অস্ত্রের মুখে জাহাজের নিয়ন্ত্রণ নেওয়ার পর সোমালিয়া উপকূলে নিয়ে যায় জলদস্যুরা। সেখানে পৌঁছানোর পর বারবার জাহাজের অবস্থান পরিবর্তন করা হয়। ছিনতাইয়ের ৯ দিনের মাথায় জলদস্যুদের সাথে তৃতীয় পক্ষের মাধ্যমে যোগাযোগ হয় জাহাজের মালিকপক্ষের।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, “আমি শুধু এটুকুই বলি, নাবিকরা খুব সহসাই মুক্তি লাভ করবে ইনশাআল্লাহ, আমরা জাহাজটাও মুক্ত করে নিয়ে আসতে পারব। গুরুত্বপূর্ণ অগ্রগতি ইতিমধ্যেই সাধিত হয়েছে।”
দেশের মানুষ খুব দুঃখ ও কষ্টের মধ্যে আছে, সাধারণ মানুষ ভালোভাবে ঈদ পালন করতে পারেনি-বিএনপি মহাসচিব ফখরুলের এমন বক্তব্যের প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন হাছান মাহমুদ।
আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক হাছান বলেন, “হয়তো মির্জা ফখরুল সাহেবদের মনে শান্তি নাই, উনাদের মনে অশান্তি বিধায় বাংলাদেশের মানুষের মনে শান্তি নাই বলছেন। মানুষের মনে সম্প্রীতি ও উৎসব আছে।
“এবার ঈদ অত্যন্ত আনন্দ ও উৎসবের মধ্য দিয়ে পালিত হয়েছে এবং হচ্ছে। মানুষ এখনও ঈদ উৎসবের মধ্যে আছে। আপনারা দেখেছেন, ঈদযাত্রাও এবার অনেক নির্ঝঞ্জাট ছিল। ঈদের সময় অনেক ঘটনা ঘটে। সে ধরণের দুর্ঘটনা এবার অপেক্ষাকৃত অনেক কম ঘটেছে। মানুষ অত্যন্ত উৎসাহ-উদ্দীপনা নিয়েই ঈদ উদযাপন করছে।”
এর আগে ‘চাটগাঁইয়া ঈদ আনন্দ উৎসব’র উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে হাছান মাহমুদ বলেন, “আমাদের নেত্রী বঙ্গবন্ধুকন্যা জননেত্রী শেখ হাসিনা এবং আমরা সবসময় বলি, ধর্ম যার যার উৎসব সবার। আজকে ঈদ উৎসবকে উপলক্ষ করে ‘চাটগাঁইয়া ঈদ আনন্দ উৎসব’র আয়োজন করেছেন।
“এই উৎসবে হিন্দু মুসলিম বৌদ্ধ খ্রিস্টান-সবাই শামিল হয়েছে। অর্থাৎ ধর্ম যার যার- উৎসব যে সবার, সেটি আসলে বাস্তবে রূপায়িত হয়েছে এই উৎসবের মাধ্যমে।”
চট্টগ্রাম-৭ আসনের সংসদ সদস্য বলেন, “আমাদের দেশে যখন প্রবারণা পূর্ণিমার সময় ফানুস ওড়ানো হয়, তখন সব সম্প্রদায়ের মানুষ এই উৎসবে শামিল হয়। ছোটবেলা থেকে আমি নিজেও ফানুস ওড়ানোর উৎসবে শামিল হতাম।
“একইভাবে যখন দুর্গাপুজা উৎসব হয়, তখনও সব সম্প্রদায়ের মানুষ সেখানে শামিল হয়। অর্থাৎ আমরা এখানে হিন্দু মুসলিম বৌদ্ধ খ্রিস্টান-সবাই মিলেমিশে একাকার।”
চট্টগ্রামের ইতিহাস তুলে ধরে হাছান বলেন, “বঙ্গবন্ধু ছয় দফা প্রথম জনসভা করে জনসমক্ষে ঘোষণা করেছেন এই লালদীঘির ময়দানে।
“এর আগে ছয় দফা ঘোষণা করেছিল, কিন্তু জনসভা করেছিল ছয় দফার উপরে এই লালদীঘির ময়দানে। বাংলাদেশের স্বাধীনতার ঘোষণা চট্টগ্রাম থেকে প্রথম বঙ্গবন্ধুর পক্ষে পাঠ করেছিলেন এম এ হান্নান।”
পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, “মাস্টারদা সূর্যসেন, প্রীতিলতা ওয়াদ্দেদারসহ অনেককে সাথে নিয়ে ব্রিটিশের বিরুদ্ধে চট্টগ্রামকে কয়েকদিন স্বাধীন রেখেছিলেন। ১৮৫৭ সালে সুবেদার রজব আলী চট্টগ্রামের প্যারেড গ্রাউন্ডে ব্রিটিশের বিরুদ্ধে বিদ্রোহ করেছিলেন।”
‘চাটগাঁইয়া ঈদ আনন্দ উৎসব’ আয়োজক কমিটির সভাপতি জহরলাল হাজারী, সাধারণ সম্পাদক চৌধুরী ফরিদ, কাউন্সিলর রুমকি সেন গুপ্তা, চট্টগ্রাম মহানগর ছাত্রলীগের সাবেক সাধরণ সম্পাদক নুরুল আজিম রনিসহ আয়োজক কমিটির সদস্যরা অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন।