বোর্ডে আচরণে সন্তুষ্ট না হলেও বিতর্ক পেছনে ফেলে সামনে তাকাচ্ছেন শাহিন শাহ আফ্রিদি।
Published : 02 Apr 2024, 11:36 AM
শাহিন শাহ আফ্রিদির সঙ্গে করমর্দন করছেন পাকিস্তান ক্রিকেট বোর্ডের (পিসিবি) চেয়ারম্যান মোহসিন নাকভি। দুজনের মুখেই হাসি। পাকিস্তান ক্রিকেট দলের অফিসিয়াল ফেইসবুক পাতায় শোভা পাচ্ছে এই ছবি। এই স্থিরচিত্রই ছড়িয়ে দিচ্ছে বার্তা, নেতৃত্বের পরিবর্তন নিয়ে পাকিস্তান ক্রিকেটের ঝড় আপাতত থামছে।
পিসিবির বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ক্রিকেটারদের ফিটনেস ক্যাম্প সরাসরি কাছ থেকে দেখতে ও ক্রিকেটারদের উজ্জীবিত করতে কাকুল মিলিটারি একাডেমিতে গিয়েছিলেন পিসিবির চেয়ারম্যান। তবে আনুষ্ঠানিকতার আবরণে ঢেকে রাখা মূল কারণটা কারও বুঝতে সমস্যা হওয়ার কথা নয়। মূলত আফ্রিদির মনের আগুন নেভাতেই ছুটে গিয়েছিলেন পাকিস্তান ক্রিকেটের প্রধান।
পাকিস্তানের সাদা বলের ক্রিকেটের নেতৃত্বে পরিবর্তনকে ঘিরেই সবকিছুর সূত্রপাত। শাহিনকে টি-টোয়েন্টি অধিনায়ক থেকে সরিয়ে সাদা বলের দুই সংস্করণের দায়িত্ব দেওয়া হয় বাবর আজমকে। স্রেফ এক সিরিজেই শেষ হয় আফ্রিদির নেতৃত্বে অধ্যায়।
পাকিস্তানের সংবাদমাধ্যমের খবর, নেতৃত্বের বদলটা যেভাবে করা হয়েছে, তাতে হতাশ ও বিরক্ত ছিলেন আফ্রিদি। অধিনায়কত্ব নেওয়ার সময় তিনি চেয়েছিলেন লম্বা সময়ের জন্য দায়িত্ব। সেই প্রতিশ্রুতিও তাকে দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু বাস্তবে তা হয়নি। নেতৃত্ব থেকে সরানো নিয়েও ২৩ বছর বয়সী পেসারকে কোনো কিছু ব্যাখ্যা করা হয়নি বা পরিষ্কার করে কিছু বলা হয়নি। যোগাযোগের এই ঘাটতি আফ্রিদির মনে আঘাত দেয় বলে খবর প্রকাশিত হয়।
এরপর তার যন্ত্রণার আগুনে ঘি ঢেলে দেয় পিসিবির একটি কাণ্ড। বাবর আজমের নেতৃত্বে ফেরানোকে সমর্থন জানিয়ে আফ্রিদির একটি বিবৃতি প্রকাশ করে বোর্ড। কিন্তু পাকিস্তানের বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমের খবর, আফ্রিদি আদতে ওসব কিছু বলেননি এবং বিবৃতি নিয়ে তিনি কিছুই জানতেন না!
এসব নিয়ে আফ্রিদির ক্ষোভের বিস্ফোরণ প্রায় ঘটতেই যাচ্ছিল। বিবৃতি দিয়ে বা সংবাদ সম্মেলন করে সবকিছু ফাঁস করে দেওয়ার উদ্যোগ নিয়েছিলেন আফ্রিদি। পিসিবি তা জানতে পেরে জরুরিভিত্তিতে আলোচনা করে তাৎক্ষনিকভাবে তাকে নিবৃত্ত পরে। ঘটনা এত দূর গড়ায় যে, পিসিবি চেয়ারম্যান কাকুলে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নেন।
কাকুলের মিলিটারি একাডেমিতে আপাতত ক্রিকেটারদের ফিটনেস ক্যাম্প চলছে। আফ্রিদি ছাড়াও সব ক্রিকেটারের সঙ্গেই সেখানে বৈঠক করেন পিসিবির চেয়ারম্যান।
ইএসপিএনক্রিকইনফোর খবর, বিবৃতির ব্যাপারটি নিয়ে আফ্রিদির কাছে ভুল স্বীকার করা হয়েছে বোর্ডের পক্ষ থেকে। ক্রিকেট ওয়েবসাইটটি জানিয়েছে, সবকিছু নিয়ে আফ্রিদির ক্ষোভ এখনও মিলিয়ে যায়নি, তবে সন্তুষ্ট না হলেও আপাতত তিনি এসব পেছনে ফেলে সামনে তাকাচ্ছেন। বাবর আজমের সঙ্গে তার দীর্ঘদিনের বন্ধুত্বের সম্পর্কও মজবুত আছে বলে জানিয়েছে ওই একই সংবাদমাধ্যম।
নিউ জিল্যান্ডের বিপক্ষে সামনের টি-টোয়েন্টি সিরিজে আফ্রিদির খেলা নিয়ে শঙ্কাও নেই। ১৮ এপ্রিল শুরু হতে যাওয়া পাঁচ ম্যাচের সিরিজ দিয়েই শুরু হবে বাবর আজমের নেতৃত্বের নতুন অধ্যায়। কাকুলে পাকিস্তানের ক্রিকেটারদের ক্যাম্প শেষ হবে আগামী সোমবার।