বল দেখে ‘রিয়্যাক্ট করে’ শান্তর বাজিমাত 

বিশ্ব চ্যাম্পিয়নদের বিপক্ষে দলকে জিতিয়ে ব্যাটিংয়ে নিজের পরিকল্পনার কথা জানালেন নাজমুল হোসেন শান্ত।

ক্রীড়া প্রতিবেদকচট্টগ্রাম থেকেবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 9 March 2023, 03:04 PM
Updated : 9 March 2023, 03:04 PM

প্রায় মাস ছয়েক ধরে টি-টোয়েন্টি সংস্করণে দারুণ ছন্দে আছেন নাজমুল হোসেন শান্ত। সবশেষ বিশ্বকাপের পর বিপিএলেও ছুটিয়েছেন রানের ফোয়ারা। তবে প্রশ্ন ছিল তার স্ট্রাইক রেট নিয়ে। এবার ইংল্যান্ডের বিপক্ষে সিরিজের প্রথম ম্যাচে সেটিরও জবাব দিয়েছেন তিনি। ঝড়ো ফিফটিতে দলকে জিতিয়ে তিনি জানিয়েছেন, বল দেখে সেই অনুযায়ী প্রতিক্রিয়া দেখানোর কথা।

১৫৭ রানের লক্ষ্যে তিন নম্বরে ব্যাট করতে নামেন শান্ত। জয়ের জন্য তখন প্রয়োজন ৯৯ বলে ১২৪ রান। পরের ওভারে লিটন দাস ফিরে গেলে কিছুটা শঙ্কা জাগে ইনিংসে। তবে ইতিবাচক ব্যাটিংয়ে স্রেফ ৩০ বলে ৫১ রান করে সব আশঙ্কা উড়িয়ে দেন শান্ত। বাংলাদেশের ৬ উইকেটের জয়ে তার হাতেই ওঠে ম্যাচ সেরার পুরস্কার। 

এই ম্যাচের আগে বাংলাদেশের সবশেষ টি-টোয়েন্টি ছিল বিশ্বকাপে। ওই আসরে দলের সর্বোচ্চ ১৮০ রান করেছিলেন শান্ত। তবে স্ট্রাইক রেট ছিল ১২০-এর কম। তখন শান্ত জানান, দলের পরিকল্পনা মাথায় রেখে ওই চাহিদা মিটিয়েই ব্যাটিং করেছেন তিনি। 

বিশ্বকাপের পর প্রথম ম্যাচে পুরোপুরি ভিন্ন রুপে আবির্ভুত তিনি। এবার ৮ চারের ইনিংসে রান করেছেন ১৭০ স্ট্রাইক রেটে। সংবাদ সম্মেলনে তাই প্রশ্ন উঠল, এবার কি তাহলে দল থেকে ভিন্ন দায়িত্ব পেয়েছেন শান্ত? 

“না! ওরকম কিছু (দায়িত্ব) ছিল না। আমরা ভালো একটা শুরু পেয়েছিলাম। ওই মোমেন্টামটা ধরে রাখার চেষ্টা করেছি। এমনিতে স্বাভাবিক পরিকল্পনাই ছিল। খুব বেশি বাড়তি কিছু করব, এমন চিন্তা ছিল না। আমি শুধু বল দেখেছি এবং ওভাবে রিয়্যাক্ট করেছি।”

বল দেখে ‘রিয়্যাক্ট’ করার সবচেয়ে বড় সুফল তিনি পেয়েছেন মার্ক উডের করা সপ্তম ওভারে। গতিময় এই পেসারের পরপর চার বলে চারটি বাউন্ডারি মারেন শান্ত। ওই ওভারে ব্যাটিংয়ে ভাবনা জানতে চাইলে একই কথা বলেন বাঁহাতি ব্যাটসম্যান।  

“(উডকে ৪টি চার) ওরকম আগে থেকে কোনো পরিকল্পনা ছিল না। বল দেখেছি, ওই অনুযায়ী রিয়্যাক্ট করেছি। এছাড়া ওরকম কিছু ছিল না। গ্যাপটা কাজে লাগানোর চেষ্টা করেছি। তাই হয়তো বাউন্ডারিগুলো মারতে পেরেছি।”

সবশেষ বিপিএলে সিলেট স্ট্রাইকার্সের রানার্স-আপ হওয়ার পেছনে বড় অবদান রাখেন তিনি। ৪ ফিফটিতে ৩৯.৬৯ গড়ে টুর্নামেন্টের সর্বোচ্চ ৫১৬ রান করেন শান্ত। নিয়মিত রান করায় নিজের খেলা সম্পর্কে আরও পরিষ্কার ধারণা পাচ্ছেন বলে জানালেন তিনি। 

“(বিপিএল থেকে পাওয়া এবারের আত্মবিশ্বাসে) একটু ভিন্নতা তো আছে। কারণ এবার আমি ধারাবাহিক রান করেছি। একজন ব্যাটার হিসেবে যখন ধারাবাহিক রান করব, তখন একটা আলাদা আত্মবিশ্বাস থাকে।” 

“খেলা সম্পর্কেও অনেক ধারণা আসে। আমার কাছে মনে হয়েছে, আমি কিভাবে ইনিংসটা গড়ব বা শুরু করব, এই ব্যাপারে আমার ধারণা ভালো ছিল। ওইটাই শুধু এপ্লাই করার চেষ্টা করেছি।”

শান্তর দারুণ ফর্মের শুরু অবশ্য বিপিএলেরও আগে থেকে। গত বছর অস্ট্রেলিয়া বিশ্বকাপের ওই পারফরম্যান্সের আত্মবিশ্বাসই এখন কাজে লাগছে কি না জানতে চাওয়া হয় তার কাছে।


“বড় একটা টুর্নামেন্টে দলের হয়ে ভালো করতে পারলে, সেটি অবশ্যই অনেক আত্মবিশ্বাস দেয়। ওটাই শুধু চেষ্টা করি, আত্মবিশ্বাসটা নিয়ে ব্যাটিং করার। তবে প্রত্যেক দিনই নতুন দিন, নতুনভাবে শুরু করতে হয়। আগের কিছু মাথায় থাকে না। তবে ভেতরে একটা ভালো লাগা কাজ করে। যখনই ব্যাটিংয়ে যাই নতুন দিন হিসেবে প্রথম থেকে শুরুর চেষ্টা করি।”