দ. আফ্রিকার কাছে হেরে সেমিতে ইংল্যান্ডকে পেল অস্ট্রেলিয়া

অধিনায়ক ফাফ দু প্লেসির সেঞ্চুরিতে অস্ট্রেলিয়াকে চ্যালেঞ্জিং লক্ষ্য দিয়েছিল দক্ষিণ আফ্রিকা। দারুণ সেঞ্চুরিতে দলকে লড়াইয়ে রেখেছিলেন ডেভিড ওয়ার্নার। তবে শেষরক্ষা করতে পারেননি। প্রাথমিক পর্বের শেষ ম্যাচে রোমাঞ্চকর লড়াইয়ে বিশ্ব চ্যাম্পিয়নদের হারিয়ে আসর শেষ করেছে প্রোটিয়ারা।   

স্পোর্টস ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 6 July 2019, 04:12 PM
Updated : 6 July 2019, 09:09 PM

ম্যানচেস্টারের ওল্ড ট্র্যাফোর্ডে শনিবার ১০ রানে হেরেছে অস্ট্রেলিয়া। ৩২৬ রানের লক্ষ্য তাড়ায় ১ বল বাকি থাকতে ৩১৫ রানে থামে অ্যারন ফিঞ্চের দল।

দক্ষিণ আফ্রিকার কাছে হেরে দ্বিতীয় হওয়ায় সেমি-ফাইনালে স্বাগতিক ইংল্যান্ডকে এড়াতে পারল না অস্ট্রেলিয়া। অন্য সেমি-ফাইনালে নিউ জিল্যান্ডের বিপক্ষে খেলবে শীর্ষে থেকে প্রাথমিক পর্ব শেষ করা ভারত। 

দুই ওপেনারের গড়ে দেওয়া ভিত কাজে লাগিয়ে দলকে লড়াই করার মতো সংগ্রহ এনে দেন দু প্লেসি ও রাসি ফান ডার ডাসেন। দক্ষিণ আফ্রিকা ৬ উইকেটে করে ৩২৫ রান। অস্ট্রেলিয়ার বাজে শুরুর পরও দুর্দান্ত শতকে দলকে কক্ষপথে রেখেছিলেন ওয়ার্নার। পেয়েছিলেন অ্যালেক্স কেয়ারির দারুণ সহায়তা। তবে স্নায়ু চাপ ধরে রেখে আসরে তৃতীয় জয় পায় দক্ষিণ আফ্রিকা।  

টস জিতে ব্যাট করতে নেমে কুইন্টন ডি কক ও এইডেন মারক্রামের আক্রমণাত্মক ব্যাটিংয়ে প্রথম ১০ ওভারে কোনো উইকেট না হারিয়ে ৭৩ তুলে ফেলে দক্ষিণ আফ্রিকা। স্কোরবোর্ডে আর ৬ রান যোগ হতে ন্যাথান লায়নের বলে মারক্রাম স্টাম্পড হলে ভাঙে উদ্বোধনী জুটি। পরে এই অফ স্পিনারের বলেই ক্যাচ দিয়ে ফেরেন ৫১ বলে ৭ চারে ৫২ রান করা ডি কক।

শুরু থেকে বলের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে রান তুলে ৫৪ বলে পঞ্চাশে পৌঁছান দু প্লেসি। ৯৩ বলে সেঞ্চুরি। আসরে প্রথম, বিশ্বকাপে দ্বিতীয় আর ক্যারিয়ারে দ্বাদশ ওয়ানডে সেঞ্চুরি। ফন ডার ডাসেনের সঙ্গে গড়ে তোলেন ১৪৯ বলে ১৫০ রানের জুটি।

বেরেনডর্ফের ওই ওভারেই তিন অঙ্ক ছোঁয়ার পরের বলেই শর্ট থার্ড ম্যানে ক্যাচ দিয়ে ফেরেন দু প্লেসি। সঙ্গী বিদায় নিলেও দিক হারাননি ফন ডার ডাসেন। প্রথম ২৫ বলে ৫ রান করা ডান হাতি এই ব্যাটসম্যান ৬৯ বলে করেন ফিফটি। শেষ দিকে কিছুটা ঝড়ো ব্যাটিং করে ইনিংসের শেষ বলে সীমানায় ক্যাচ দিয়ে ফেরেন তিনি।

৯৭ বলে ৪টি করে চার ও ছক্কায় ৯৫ রান করেন ফন ডার ডাসেন। তার আগের সেরা ছিল ৯৩, জানুয়ারিতে পাকিস্তানের বিপক্ষে ওয়ানডে অভিষেকে।

রান তাড়ায় শুরুটা ভালো হয়নি অস্ট্রেলিয়ার। ছন্দে থাকা অ্যারন ফিঞ্চকে দ্রুত ফেরান নিজের সবশেষ ওয়ানডে খেলা ইমরান তাহির। হ্যামস্ট্রিংয়ে চোট পেয়ে মাঠ ছাড়েন উসমান খাওয়াজা। দ্রুত বিদায় নেন স্টিভেন স্মিথ।

এসবের কিছু যেন স্পর্শ করেনি ওয়ার্নারকে। এক প্রান্ত আগলে রেখে টানতে থাকেন দলকে। দুই অলরাউন্ডার মার্কাস স্টয়নিস ও গ্লেন ম্যাক্সওয়েল তাকে খুব একটা সঙ্গ দিতে পারেননি। কিপার ব্যাটসম্যান কেয়ারি ক্রিজে গিয়েই শট খেলতে শুরু করেন, দ্রুত জমে যায় ওয়ার্নারের সঙ্গে তার জুটি। তাদের আক্রমণাত্মক ব্যাটিংয়ে ম্যাচে ফেলে অস্ট্রেলিয়া।

ডোয়াইন প্রিটোরিয়াসের বলে মিড অনে দুর্দান্ত এক ক্যাচে ওয়ার্নারকে ক্রিস মরিস। ভাঙে ১০৮ রানের জুটি। আসরে তৃতীয় ও ওয়ানডেতে সপ্তদশ সেঞ্চুরি পাওয়া ওয়ার্নার ১১৭ বলে ১৫ চার ও দুই ছক্কায় করেন ১২২ রান।

বিস্ফোরক ব্যাটিংয়ে অস্ট্রেলিয়ার আশা বাঁচিয়ে রাখেন কেয়ারি। ছাড়িয়ে যান আগের ম্যাচে করা ক্যারিয়ার সেরা ৭১ রান। কিপার-ব্যাটসম্যানের তাণ্ডব থামান মরিস। ৬৯ বলে ৮৫ রান করে ফিরে যান কেয়ারি।

কেয়ারি ফেরার পর ক্রিজে আসেন খাওয়াজা। লোয়ার অর্ডার ব্যাটসম্যানদের নিয়ে চেষ্টা করেছিলেন প্রাণপণ। তবে আন্দিলে ফেলুকোয়ায়ো ও কাগিসো রাবাদার ঠাণ্ডা মাথার বোলিংয়ে জয় তুলে নেয় দক্ষিণ আফ্রিকা।

রাবাদা ৩ উইকেট নেন ৫৬ রানে। দুটি করে উইকেট নেন ফেলুকোয়ায়ো ও প্রিটোরিয়াস।

দলকে সামনে থেকে নেতৃত্ব দেওয়া দু প্লেসি জেতেন ম্যাচ সেরার পুরস্কার।

সংক্ষিপ্ত স্কোর:

দক্ষিণ আফ্রিকা: ৫০ ওভারে ৩২৫/৬ (মারক্রাম ৩৪, ডি কক ৫২, দু প্লেসি ১০০, ফন ডার ডাসেন ৯৫, দুমিনি ১৪, প্রিটোরিয়াস ২, ফেলুকোয়ায়ো ৪; স্টার্ক ৯-০-৫৯-২, বেরেনডর্ফ ৮-০-৫৫-১, লায়ন ১০-০-৫৩-২, কামিন্স ৯-০-৬৬-১, স্মিথ ১-০-৫-০, স্টয়নিস ৩-০-১৯-০, ম্যাক্সওয়েল ১০-০-৫৭-০)

অস্ট্রেলিয়া: ৪৯.৫ ওভারে ৩১৫ (ওয়ার্নার ১২২, ফিঞ্চ ৩, খাওয়াজা ১৮, স্মিথ ৭, স্টয়নিস ২২, ম্যাক্সওয়েল ১২, কেয়ারি ৮৫, কামিন্স ৯, স্টার্ক ‌১৬, বেরেনডর্ফ ১১*, লায়ন ৩; তাহির ৯-০-৫৯-১, রাবাদা ১০-০-৫৬-৩, প্রিটোরিয়াস ৬-২-২৭-২, মরিস ৯-০-৬৩-‌১, শামসি ৯-০-৬২-০, ফেলুকোয়ায়ো ২.৫-০-২২-২, দুমিনি ৪-০-২২-০)

ফল: দক্ষিণ আফ্রিকা ১০ রানে জয়ী

ম্যান অব দা ম্যাচ: ফাফ দু প্লেসি