জোড়া সেঞ্চুরিতে সেমির আগে ভারতের বড় জয়

অ্যাঞ্জেলো ম্যাথিউসের সেঞ্চুরির পরও পুঁজি খুব একটা বড় ছিল না শ্রীলঙ্কার। মাঝারি সংগ্রহ নিয়ে দলটিকে লড়াইও করতে দেয়নি ভারত। রোহিত শর্মা ও লোকেশ রাহুলের সেঞ্চুরিতে সেমি-ফাইনালের আগে অনায়াস জয় পেয়েছে দুইবারের বিশ্ব চ্যাম্পিয়নরা। 

স্পোর্টস ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 6 July 2019, 01:18 PM
Updated : 6 July 2019, 05:36 PM

লিডসের হেডিংলিতে শনিবার ৭ উইকেটে জিতেছে ভারত। ৩৯ বল বাকি থাকতে ছুঁয়ে ফেলে ২৬৫ রানের লক্ষ্য।   
 
বাজে শুরু করা শ্রীলঙ্কাকে টেনেছিলেন ম্যাথিউস। আশা জাগিয়েছিলেন লড়াইয়ের পুঁজি গড়ার। তবে শেষে কেউ তুলতে পারেননি প্রত্যাশিত ঝড়।

৭ উইকেটে শ্রীলঙ্কা করতে পারে ২৬৪ রান। ভারতের শুরুর জুটিই গড়ে দেয় ম্যাচের ভাগ্য। প্রথম ব্যাটসম্যান হিসেবে এক আসরে পাঁচ সেঞ্চুরির কীর্তি গড়েন রোহিত। বিশ্বকাপে প্রথম সেঞ্চুরি তুলে নেন রাহুল। অনায়াসে সপ্তম জয় পায় বিরাট কোহলির দল। 
 
এই জয়ে আপাতত শীর্ষে উঠে এসেছে ভারত। দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে চলমান ম্যাচে অস্ট্রেলিয়া না জিতলে নিউ জিল্যান্ডের বিপক্ষে প্রথম সেমি-ফাইনালে খেলবেন কোহলি-রোহিতরা।
 
শুরুতেই দুই ওপেনার করুনারত্নে ও কুসল পেরেরাকে কট বিহাইন্ড করে লঙ্কানদের নাড়িয়ে দেন জাসপ্রিত বুমরাহ। আগের ম্যাচের সেঞ্চুরিয়ান আভিশকা ফার্নান্দোও থিতু হয়ে হার্দিক পান্ডিয়ার স্লোয়ার-বাউন্সারে ধরা পড়েন মহেন্দ্র সিং ধোনির গ্লাভসে।
 
আসরে প্রথমবারের মতো খেলতে নামা রবীন্দ্র জাদেজা স্টাম্পড করে বিদায় করেন কুসল মেন্ডিসকে। ৫৫ রানে ৪ উইকেট হারিয়ে ধুঁকতে থাকা শ্রীলঙ্কা ঘুরে দাঁড়ায় ম্যাথিউসের ব্যাটে। অভিজ্ঞ এই মিডল অর্ডার ব্যাটসম্যানকে দারুণ সঙ্গ দেন লাহিরু থিরিমান্নে।
 
শুরুতে সময় নেওয়া দুই ব্যাটসম্যান ধীরে ধীরে বাড়ান রানের গতি। ৮৪ বলে পঞ্চাশ স্পর্শ করে জুটির রান। ১৩৯ বলে যায় তিন অঙ্কে। চার বাউন্ডারিতে ৫৩ রান করা থিরিমান্নেকে বিদায় করে ১২৪ রানের জুটি ভাঙেন কুলদীপ যাদব।
 
ধনাঞ্জয়া ডি সিলভার সঙ্গে ৭৪ রানের আরেকটি ভালো জুটিতে দলকে আড়াইশ রানে নিয়ে যান ম্যাথিউস। দুটি ‘ডাক’ দিয়ে টুর্নামেন্ট শুরু করা ডানহাতি এই ব্যাটসম্যান টুর্নামেন্ট শেষ করলেন বিশ্বকাপে প্রথম সেঞ্চুরি দিয়ে।

ওয়ানডেতে ম্যাথিউসের তিন সেঞ্চুরির তিনটিই ভারতের বিপক্ষে। বুমরাহর বলে রোহিত শর্মাকে ক্যাচ দিয়ে শেষ হয় ১০ চার ও ২ ছক্কায় গড়া তার ১১৩ রানের লড়াকু ইনিংস। ২৯ রানে অপরাজিত থাকেন ডি সিলভা।
 
৩৭ রানে ৩ উইকেট নিয়ে ভারতের সেরা বোলার বুমরাহ। বাকি চার বোলার নেন একটি করে উইকেট।
 
রান তাড়ায় ছন্দে থাকা রোহিত ছিলেন আক্রমণাত্মক, সাবধানী ব্যাটিংয়ে তাকে সঙ্গ দেন রাহুল। 
 
শটের পসরা সাজিয়ে বসা রোহিত ৪৮ বলে স্পর্শ করেন ফিফটি। ৯২ বলে যান তিন অঙ্কে। টানা তৃতীয় ও ওয়ানডে ক্যারিয়ারে ২৭তম সেঞ্চুরি তুলে নেওয়ার পর তিনি ফিরলে ভাঙে ১৮৯ রানের উদ্বোধনী জুটি। ভারত সহ-অধিনায়ক ১৪ চার ও দুই ছক্কায় করেন ১০৩ রান। 
 
ভালো শুরুগুলো বড় করতে না পারা রাহুল তুলে নেন ওয়ানডেতে নিজের দ্বিতীয় সেঞ্চুরি। ম্যাচ শেষ করতে পারেননি তিনিও। বিশ্বকাপে নিজের সবশেষ ম্যাচ খেলা লাসিথ মালিঙ্গা কট বিহাইন্ড করে থামান তাকে। আগের সেরা ১০০ ছাড়িয়ে রাহুল ‌‌১১ চার ও ১ ছক্কায় করেন ‌১১১ রান।
 
চারে নেমে রিশাব পান্ত দ্রুত ফিরলে পান্ডিয়াকে নিয়ে বাকিটা সারেন কোহলি।
 
দারুণ ছন্দে থাকা রোহিত রেকর্ড গড়া সেঞ্চুরির জন্য জেতেন ম্যাচ সেরার পুরস্কার।  
 
সংক্ষিপ্ত স্কোর:
 
শ্রীলঙ্কা: ৫০ ওভারে ২৬৪/৭ (করুনারত্নে ১০, কুসল পেরেরা ১৮, ফার্নান্দো ২০, মেন্ডিস ৩, ম্যাথিউস ১১৩, থিরিমান্নে ৫৩, ডি সিলভা ২৯*, থিসারা পেরেরা ২, উদানা ১*; ভুবনেশ্বর ১০-০-৭৩-১, বুমরাহ ১০-২-৩৭-৩, পান্ডিয়া ১০-০-৫০-১, জাদেজা ১০-০-৪০-১, কুলদীপ ১০-০-৫৮-১)
 
ভারত: ৪৩.৩ ওভারে ২৬৫/৩ (রাহুল ১১১, রোহিত ১০৩, কোহলি ৩৪*, পান্ত ৪, পান্ডিয়া ৭*; মালিঙ্গা ১০-১-৮২-১, রাজিথা ৮-০-৪৭-১, উদানা ৯.৩-০-৫০-১, থিসারা ১০-০-৩৪-০, ডি সিলভা ৬-০-৫১-০)
 
ফল: ভারত ৭ উইকেটে জয়ী
 
ম্যান অব দা ম্যাচ: রোহিত শর্মা