এবার বিশ্ব চ্যাম্পিয়নদের হারানোর চ্যালেঞ্জ

বিশ্বকাপের ম্যাচ পরদিন, কিন্তু সংবাদ সম্মেলনে বারবার মাশরাফি বিন মুর্তজাকে ফিরে যেতে হচ্ছিল ১৪ বছর পেছনে। ২০০৫ সাল, ন্যাটওয়েস্ট সিরিজ, অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে বাংলাদেশের জয়। অধিনায়ক যতই সামনে তাকাতে চান, সেই ম্যাচ নিয়ে প্রশ্ন শেষই হচ্ছিল না। বাংলাদেশ ক্রিকেটের সবচেয়ে স্মরণীয় জয়গুলির একটি, সেটি একটি কারণ। তবে আরেকটি বড় কারণ, ওই ম্যাচের পর ওয়ানডেতে আর অস্ট্রেলিয়াকে কখনও হারাতে পারেনি বাংলাদেশ।

আরিফুল ইসলাম রনিআরিফুল ইসলাম রনিনটিংহ্যাম থেকে বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 19 June 2019, 07:44 PM
Updated : 19 June 2019, 09:09 PM

বর্তমান বিশ্বচ্যাম্পিয়ন, রেকর্ড পাঁচবারের চ্যাম্পিয়ন, এবারও অন্যতম ফেভারিট। অস্ট্রেলিয়ার এসব বাস্তবতার পাশাপাশি আছে বাংলাদেশের বিপক্ষে মুখোমুখি লড়াইয়ের ইতিহাসও। টেস্ট খেলুড়ে দেশগুলির মধ্যে কেবল অস্ট্রেলিয়াকেই ওয়ানডেতে একাধিকবার হারাতে পারেনি বাংলাদেশ। মাশরাফিদের বিশ্বকাপ অভিযানে সবচেয়ে কঠিন চ্যালেঞ্জগুলোর একটি তাই অপেক্ষায় বৃহস্পতিবার নটিংহ্যামে।
 
চ্যালেঞ্জ জয় কতটা সম্ভব? মাশরাফি বলছেন খুব কঠিন, তবে অসম্ভব নয়। একটা সমীকরণও অবশ্য দাঁড় করিয়েছেন বাংলাদেশ অধিনায়ক। কন্ডিশন, ফর্ম আর পারিপার্শ্বিকতা মিলিয়ে দুই দলের শক্তির যা পার্থক্য, তাতে শুধু নিজেদের উজাড় করে দিলেই হবে না, অস্ট্রেলিয়ার বাজে দিনের কামনাও করতে হবে। 
 
“অস্ট্রেলিয়া সবসময়ই বিশ্বকাপে ভিন্ন দল। বড় মঞ্চে সবসময়ই ভালো করে। কালকে টুর্নামেন্টের অন্যতম সেরা দলের সঙ্গে খেলা আমাদের। এখানে নিজেদের সেরাটা দেওয়া ছাড়া আর বিকল্প নেই।”
 
“শুধু নিজেদের সে্রাটা দিলেই চলবে না। নিজেরা শতভাগ দেওয়ার পর চাইতে হবে যেন অস্ট্রেলিয়া ৭০ ভাগের বেশি দিতে না পারে।”
 
এবার বিশ্বকাপের আলোচিত চরিত্র বৃষ্টি তার উপস্থিতি জানান দিতে পারে এই ম্যাচেও। পূর্বাভাস বলছে, বিচ্ছিন্নভাবে বৃষ্টি হতে পারে বৃহস্পতিবার। তবে বিশ্ব মঞ্চে যখন মুখোমুখি এই দুই দল, বৃষ্টির প্রসঙ্গ চলে আসে এমনিতেও। সবশেষ দুটি আইসিসি টুর্নামেন্টেই এই দুই দলের ম্যাচে ছিল বৃষ্টির ছোবল।
 
সেই দুই ম্যাচ থেকে পাওয়া একটি করে পয়েন্ট বড় ভূমিকা রেখেছিল বাংলাদেশের সামগ্রিক সাফল্যে। ২০১৫ বিশ্বকাপের কোয়ার্টার-ফাইনাল আর ২০১৭ আইসিসি চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির সেমি-ফাইনালে ওঠার পেছনে ওই একটি করে পয়েন্ট ছিল মহা মূল্যবান।
  এবারও একটি পয়েন্ট পেলে বাংলাদেশের অখুশি হওয়ার কথা নয়। তবে পয়েন্ট টেবিলে যে পর্যায়ে আছে দল, তাতে একটি পয়েন্ট খুব সাহায্য সামনে নাও করতে পারে দলকে। মাশরাফিও তাই খেলেই জিততে চান।
 
“এক পয়েন্ট পেলে আমরা খুশি হব কিনা, এই সমীকরণ মেলানোর সময় আসলে হয়নি। কারণ আমরা জানি না এই এক পয়েন্ট আদৌ কোনো কাজে লাগবে কিনা সামনে। আমরা তাই খেলেই পয়েন্ট পেতে চাই। যেটা বলছি, কাজটা কঠিন, তবে অসম্ভব নয়। আমরা সামর্থ্য মতো খেলতে পারলে, কিছু জিনিস পক্ষে আসলে অবশ্যই সম্ভব।”
 
এমনিতে এই মাঠ দারুণ রান প্রসবা। এখানেই পাকিস্তানের বিপক্ষে ৪৪৪ রানের বিশ্ব রেকর্ড গড়েছিল ইংল্যান্ড। পরে সেটি ছাড়িয়ে ৪৮১ করেছিল অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে। এবারের বিশ্বকাপে অবশ্য ব্যাট-বলের দারুণ লড়াই দেখা গেছে। 
 
বাংলাদেশের বিপক্ষে দারুণ লড়াই আশা করছে অস্ট্রেলিয়াও। দক্ষিণ আফ্রিকাকে হারিয়ে শুরু করার পর গত ম্যাচে ওয়েস্ট ইন্ডিজকে যেভাবে হারিয়েছে বাংলাদেশ, সেটি দেখে বেশ সতর্ক অস্ট্রেলিয়ানরা। সহ-অধিনায়ক অ্যালেক্স কেয়ারি তাই আশা করছেন জমজমাট ম্যাচের।
 
“বাংলাদেশ খুব ভালো ক্রিকেট খেলছে। ফর্মে থাকা একটি দলের সঙ্গে খেলতে পারা দারুণ রোমাঞ্চকর। তবে আমরাও খুব ভালো ফর্মে আছি। আশা করি, কালকে দুর্দান্ত ম্যাচ হবে।”