এবার প্রত্যাশা পূরণের ধাপে বাংলাদেশ

প্রাথমিক পর্বের তিন ভাগের এক ভাগ ম্যাচ শেষ। কেমন করল বাংলাদেশ? সাদা চোখে বিচার করা কঠিন। তবে দলের লক্ষ্যের কথা ভাবলে, ফলের দিক থেকে এই পর্যায়টা খারাপ কাটেনি দলের। প্রথম তিন ম্যাচে চাওয়া ছিল অন্তত একটি জয়। বিশ্বকাপে বাংলাদেশের আসল লড়াই বলা যায় শুরু হচ্ছে পরের ধাপ থেকে, যেখানে বেশ কটি দলের বিপক্ষে জয়ই প্রত্যাশিত।

আরিফুল ইসলাম রনিআরিফুল ইসলাম রনিকার্ডিফ থেকে বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 9 June 2019, 09:25 AM
Updated : 9 June 2019, 09:25 AM

বিশ্বকাপের সূচি হওয়ার পর থেকে মাশরাফি মুর্তজা অনেকবারই বলেছেন, প্রথম তিন ম্যাচই বাংলাদেশের জন্য কঠিন চ্যালেঞ্জ। বিশ্বকাপ খেলতে দেশ ছাড়ার আগে, বিশ্বকাপের আগে অধিনায়কদের নিয়ে আইসিসির আয়োজন কিংবা আনুষ্ঠানিক সংবাদ সম্মেলনে, বাংলাদেশ অধিনায়ক বারবার মনে করিয়ে দিয়েছেন, বাংলাদেশের শুরুর সূচি বেশ কঠিন। এই কন্ডিশনে অভ্যস্ত ও মানিয়ে নেওয়ার মতো তিনটি দল বাংলাদেশের প্রথম তিন ম্যাচের প্রতিপক্ষ-দক্ষিণ আফ্রিকা, নিউ জিল্যান্ড ও স্বাগতিক ইংল্যান্ড।

দলের চিন্তা-ভাবনা ছিল সেই বাস্তবতাকে সম্ভাব্য ধরে নিয়েই। প্রথম তিন ম্যাচের চাওয়া ছিল, অন্তত একটি জয়, দুটি পেলে ভালো হয়। প্রথম ম্যাচে বাংলাদেশ হারিয়েছে দক্ষিণ আফ্রিকাকে। পরের ম্যাচে দারুণ লড়াই করেও কিউইদের কাছে হেরেছে জয়ের খুব কাছে গিয়ে। তৃতীয় ম্যাচে খুব একটা পাত্তা মেলেনি ইংল্যান্ডের সামনে।

সবশেষ ম্যাচের হতাশার পরও তাই বলা যায়, প্রথম তিন ম্যাচ থেকে বাংলাদেশের প্রত্যাশা পূরণ হয়েছে মোটামুটি। সামনের প্রত্যাশার কথা বললে, প্রত্যাশিত জয়গুলি আদায় করে নেওয়ার সত্যিকারের চ্যালেঞ্জ আসছে পরের ধাপ থেকে।

বাংলাদেশের পরের প্রতিপক্ষ শ্রীলঙ্কা, র‌্যাঙ্কিংয়ে যারা বাংলাদেশের নিচে। মঙ্গলবার ব্রিস্টলে ওই ম্যাচে ফেভারিট বাংলাদেশ, জয়টাও কাম্য। শ্রীলঙ্কার পর ১৭ জুন টন্টনে প্রতিপক্ষ র‌্যাঙ্কিংয়ে আরও নিচে থাকা আরেক দল ওয়েস্ট ইন্ডিজ। এই দুই দলের বিপক্ষেই বাংলাদেশের সাম্প্রতিক রেকর্ড দারুণ।

এছাড়াও র‌্যাঙ্কিংয়ে আরও নিচে থাকা আফগানিস্তান ও বাংলাদেশের ঠিক ওপরে থাকা পাকিস্তানের বিপক্ষে জয়ও খুবই প্রত্যাশিত। কদিন আগে ইংল্যান্ডকে হারিয়ে দিয়ে পাকিস্তান অবশ্য বুঝিয়ে দিয়েছে, তাদেরকে হারানো সহজ হবে না। তবে বাংলাদেশের বিপক্ষে সবশেষ চার ম্যাচেই হেরেছে পাকিস্তান, টানা পঞ্চম কেন নয়!

বিশ্বকাপ শুরুর আগে বাংলাদেশের পরিকল্পনা এগিয়েছিল এই পথ ধরেই। প্রথম তিন ম্যাচে অন্তত একটি জয় যদি আসে, আর পরে যদি হারানো যায় এই চার দলকে, তার পর অন্যান্য ম্যাচের ফলাফল আর কিছুটা ভাগ্যের ছোঁয়া মিলিয়ে সেমি-ফাইনালের ফল খুলে যেতেও পারে!

বাংলাদেশের বিশ্বকাপ অভিযান তাই ব্যর্থ হবে নাকি এগোবে লক্ষ্য পূরণের দিকে, সেটি নির্ধারিত করে দেবে আসলে সামনের ম্যাচগুলোর ফলই। বলা যায়, বিশ্বকাপে বাংলাদেশের আসল লড়াই শুরু হচ্ছে এখন। শক্তি-সামর্থ্যে এগিয়ে থাকা দলের বিপক্ষে কিছু করে ফেলার তাড়না একরকম। আবার জিততেই হবে, এমন প্রতিপক্ষের বিপক্ষে চাপ নিয়ে মাঠে নামা আরেক রকম। বাংলাদেশ দলকে এখন বইতে হবে সেই ভার, সামলাতে হবে সেই চাপ।

বিশ্বকাপের মঞ্চে সহজ হবে না আসলে কোনো ম্যাচই। সব দলেরই আছে লক্ষ্য, পরিকল্পনা আর শক্তির জায়গা। প্রতিপক্ষ সব দলও নিশ্চয়ই সম্ভাব্য জয়ের তালিকায় বাংলাদেশের বিপক্ষে ম্যাচটি রেখেছে, সেভাবেই ছক কাটছে। কঠিন লড়াইয়ের জন্যই তাই তৈরি থাকতে হবে দলকে।