প্রস্তুতির ঘাটতি নিয়েই আইরিশ চ্যালেঞ্জ জিততে চান তামিম

বৃষ্টিতে অনুশীলন বাধাগ্রস্থ হয়েছে বারবার, মূল মাঠে এখনও পা পড়েনি বাংলাদেশ দলের, তাই মানসিক প্রস্তুতিতে ভরসা রেখেই লড়াইয়ে নামার অপেক্ষায় বাংলাদেশ অধিনায়ক।   

ক্রীড়া প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 7 May 2023, 05:01 PM
Updated : 7 May 2023, 05:01 PM

মাঠের লড়াই শুরু মঙ্গলবার। তবে বাংলাদেশ দল আগ্রহভরে অপেক্ষায় আছে আগের দিনটির জন্য। সিরিজ শুরুর আগে এ দিনই যে প্রথম লড়াইয়ের ময়দান দেখতে পারবে দল! প্রথমবার নিজেদের ঝালিয়ে নিতে পারবে সেখানে। প্রস্তুতি কতটা হয়েছে, পরিষ্কার এই তথ্যেই। আবহাওয়া ও অন্যান্য পারিপার্শ্বিকতা মিলিয়ে ব্যাট-বলের প্রস্তুতি যে ভালো কিছু হয়নি, তা অকপটে বললেন তামিম ইকবালও। এখন মানসিকভাবে নিজেদের তৈরি করেই আইরিশ চ্যালেঞ্জ জিততে চান বাংলাদেশ অধিনায়ক।

নিজেদের দেশে প্রবল বৃষ্টির শঙ্কায় আইসিসি ক্রিকেট বিশ্বকাপ সুপার লিগের এই সিরিজটি আয়ারল্যান্ড আয়োজন করেছে ইংল্যান্ডে। তবে বৃষ্টির চোখরাঙানি আছে সেখানেও। বাংলাদেশ দল তো এর মধ্যেই সেই ভোগান্তির শিকার। বেশ আগেভাগে সফরে চলে গেলেও বৃষ্টির কারণে পর্যাপ্ত অনুশীলন করতে পারছে না তারা। শুক্রবার একমাত্র প্রস্তুতি ম্যাচটি ভেস্তে গেছে। রোববারও তামিমদের অনুশীলন করতে হয়েছে স্রেফ ইনডোরে।

প্রস্তুতি যে খুব ভালো কিছু হয়নি, তা মেনে নিলেন তামিমও। বিসিবির ভিডিও বার্তায় বাংলাদেশ অধিনায়ক বললেন, মানসিক প্রস্তুতির ভরসায় লড়াইয়ে নামবেন তারা।

“আসলে এসব জিনিস তো আমাদের নিয়ন্ত্রণে নেই। হয়তো বা সেরা প্রস্তুতি আমরা নিতে পারিনি আবহাওয়ার কারণে। তবে যতটুকু সুযোগ আমরা পেয়েছি, যেমন আজকে ইনডোরে, এখানে আসার পর এক দিন বিরতির পর অনুশীলন করতে পেরেছি… যতটুকু প্রস্তুত হওয়া সম্ভব, আমরা চেষ্টা করছি সবাই। বাকিটা আমাদের মানসিকভাবে তৈরি হতে হবে। মানসিকভাবে আমরা যতটুকু প্রস্তুত হতে পারি।”

“লক্ষ্য তো একটিই, ভালো খেলা এবং জেতা। যে মাঠে খেলব, আশা করি কাল আমরা ওখানে যাব এবং আবহাওয়া যদি সুযোগ করে দেয় তাহলে অনুশীলনও করব। তার পর দেখা যাক।”

যে মাঠে তিন ম্যাচের সিরিজটি হবে, সেই চেমসফোর্ডে চলছে এসেক্সের কাউন্টি চ্যাম্পিয়নশিপের খেলা। বাংলাদেশ দলকে তাই এই কদিন অনুশীলন করতে হয়েছে অন্যান্য মাঠে। রোববার এসেক্সের ম্যাচটি শেষ হচ্ছে। সোমবার চেমসফোর্ডে অনুশীলন করে তাই পরদিন মূল লড়াইয়ে নামত হবে তামিমদের। এখানেও অনেকটা অসহায়ই শোনাল তামিমের কণ্ঠ।

“যদি আমরা প্রত্যেকটি সেশন ওখানে অনুশীলন করতে পারতাম, তাহলে এর মতো কিছু হয় না। তবে যখন এই জিনিসগুলো আমাদেরকে দেওয়া হয়নি…, কারণ ওখানে খুব সম্ভবত কাউন্টি চ্যাম্পিয়নশিপের একটা ম্যাচ চলছে। এগুলো তো আমি একজন ক্রিকেটার কিংবা অধিনায়ক বা দলের কারও নিয়ন্ত্রণে নাই। তাই ‘এটা করতে পারতাম, ওটা পারতাম’, এসব না ভেবে, ৯ তারিখ আমাদের একটা গুরুত্বপূর্ণ খেলা আছে, ওটার জন্য আমরা মানসিকভাবে যতটুকু প্রস্তুতি নিতে পারি…আমি নিশ্চিত মানসিকভাবে আমরা যতটা প্রস্তুত হতে পারব, ওটাই আমাদের সহায়তা করবে।   

চেমসফোর্ডের কাউন্টি গ্রাউন্ড এমনিতে বাংলাদেশ ক্রিকেটের স্মরণীয় এক মাইলফলকের স্বাক্ষী। এই মাঠেই বাংলাদেশের বিশ্বকাপ অভিষেক। ১৯৯৯ বিশ্বকাপে এখানে নিউ জিল্যান্ডের বিপক্ষে খেলেছিল আমিনুল ইসলামের নেতৃত্বে দল। ওই বিশ্বকাপে পরে দক্ষিণ আফ্রিকা ও জিম্বাবুয়ের ম্যাচটিও হয়েছিল। এরপর গত ২৪ বছরে এখানে আন্তর্জাতিক ক্রিকেট হয়নি। এই মাঠ ও এখানকার উইকেট সম্পর্কে তাই পরিষ্কার ধারণা নেই দলের কারও।

তামিম জানালেন, সোমবার মাঠে গিয়ে উইকেট দেখে তারা দল সাজানোর পরিকল্পনা করবেন।

“(উইকেট) না দেখা পর্যন্ত তো বলা যায় না। সাধারণত ইংল্যান্ডে আবাহাওয়া আগে থেকে অনুমান করা কিছুটা কঠিন। কারণ আজ হয়তো বৃষ্টি, কাল দেখবেন রৌদ্রোজ্জ্বল। যেসব জিনিস আমাদের নিয়ন্ত্রণের মধ্যে নেই, সেসব নিয়ে ভেবে সময় নষ্ট না করে, যেগুলো আমাদের নিয়ন্ত্রণে আছে, সেসব নিয়ে ভাবলে তা আমাদের কাজে দেবে।”

“ওই মাঠে আমার খেলার কোনো অভিজ্ঞতা নাই, উইকেটের ব্যাপারেও খুব বেশি ধারণা নেই। কিন্তু যতটুকু তথ্য আমরা নিতে পারছি অতীত এবং বর্তমানের খেলাগুলো দেখে, অতটুকু তথ্য আমরা নিচ্ছি। উইকেট দেখার পর বলতে পারব কোন কম্বিনেশন নিয়ে আমরা খেলব।”

অনুশীলনের ঘাটতি যতই থাকুক, মাঠ-উইকেট যতটাই অচেনা হোক, সব বাস্তবতা মাথায় রেখেও বাংলাদেশ এই সিরিজে নামবে ফেভারিট হিসেবেই। সিরিজে একটি ম্যাট হারলেও বাংলাদেশের জন্য তা হওয়ার কথা ব্যর্থতা। তামিম অবশ্য কন্ডিশনের কারণেই সমীহ করছেন আইরিশদের।

“ফেভারিট শব্দটা আমি খুব বেশি ব্যবহার করতে চাই না। অবশ্যই আমরা এখানে এসেছি ভালো খেলার জন্য এবং জেতার জন্য। কোনো সংশয় নেই। তবে কিন্তু ক্রিকেট এমন একটা খেলা যে, আপনি অনুমান করতে পারবেন না যে প্রথম থেকে কী হবে না হবে। তারাও খেলবে এবং এই কন্ডিশনে তারা ভালো দল। এই কন্ডিশনে তারা অভ্যস্ত। আমি নিশ্চিত, ভালো ম্যাচ হবে।”

মঙ্গলবার সিরিজ শুরুর পর দ্বিতীয় ম্যাচ বৃহস্পতিবার, শেষটি রোববার।