প্রথম দিনের অনুশীলনে নিজেকে আলাদা করে চেনালেন কোহলি

ঢাকায় প্রথম দিনের অনুশীলনে ফুরফুরে মেজাজে দেখা গেল ভারতীয় ক্রিকেটারদের।

শাহাদাৎ আহমেদ সাহাদশাহাদাৎ আহমেদ সাহাদবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 2 Dec 2022, 12:59 PM
Updated : 2 Dec 2022, 12:59 PM

মোহাম্মদ সিরাজ, শার্দুল ঠাকুরদের সঙ্গে হাসি ঠাট্টায় মত্ত রোহিত শর্মা। কিছুক্ষণ পর যোগ দেন খানিক দূরে বসে থাকা বিরাট কোহলি। অধিনায়কের সামনে দাঁড়িয়ে হাতের অঙ্গভঙ্গিতে মজার কিছু বলতে দেখা যায় তাকে। একসঙ্গে হেসে ওঠেন অনুশীলন শেষ করে বিশ্রাম নিতে থাকা ক্রিকেটাররা। এমন হালকা মেজাজেই কেটেছে বাংলাদেশ সফরে ভারতের প্রথম দিনের অনুশীলনের পুরোটা সময়।

সূচি অনুযায়ী শুক্রবার দুপুর দেড়টায় অনুশীলন শুরুর কথা ছিল ভারতের। তবে ঘণ্টাখানেক আগেই মিরপুর শের-ই-বাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়ামে চলে আসে তারা। প্রায় চার ঘণ্টার সেশনে রুটিন মাফিক সবকিছুই করেন ভারতীয় ক্রিকেটাররা। তবে এর মধ্যেও নিজেকে আলাদা করে ফুটিয়ে তুললেন বিরাট কোহলি।

‘হোম অব ক্রিকেট’এ এসে আগে ওয়ার্ম-আপ সেরে নেয় রোহিতের দল। হালকা গা গরমের পর প্রায় এক ঘণ্টা ধরে নিজেদের মধ্যে দুই ভাগ ‘পা দিয়ে ভলিবল’ খেলেন তারা।

ওই খেলায় দূর থেকেই আলাদা করা যাচ্ছিল হাতাকাটা জার্সিতে একমাত্র খেলোয়াড় কোহলিকে। কখনও হেড করে, আবার কখনও বুক দিয়ে বল নামিয়ে প্রতিপক্ষ দলকে বোকা বানাতে ব্যস্ত ছিলেন তিনি। একেকটি সফল শট হাত উচিয়ে উদযাপন করতে দেখা যায় তাকে।

ওয়ার্ম-আপ শেষে স্কিল ট্রেনিংয়ের পালা। ব্যাটিং কোচ বিক্রম রাঠোর, প্রধান কোচ রাহুল দ্রাবিড়রা মূল মাঠ ছেড়ে চলে যান একাডেমিতে। তাদের সঙ্গে রোহিত-কোহলিরাও ধরেন সে পথ।

সবার আগে একাডেমিতে গেলেও নেট সেশন শুরু করতে প্রায় আধঘণ্টা সময় নেন কোহলি। পাশাপাশি তিন নেটে ব্যাটিং শুরু করেন পেস অলরাউন্ডার শার্দুল ঠাকুর এবং দুই ওপেনার রোহিত ও লোকেশ রাহুল। দুই পাশের নেটে থ্রোয়ার থাকলেও মাঝের নেটে বোলিং করেন আকসার প্যাটেল ও মোহাম্মদ সিরাজ। এছাড়া বেশ কয়েকজন নেট বোলারও ছিলেন।

প্রায় ৪৫ মিনিটের নেট ব্যাটিংয়ে বাড়তি কিছু করেননি রোহিত-রাহুলরা। তবে আকসারের বাঁহাতি স্পিন ও এক বাঁহাতি নেট বোলারের বিপক্ষে সাবলীল ছিলেন না ভারতের এ দুই ওপেনার। আকসারের বল বেশ কয়েকবার রোহিতের ব্যাটের বাইরের কানায় লাগে। রাহুলের প্যাডে আঘাত করে এলবিডব্লিউর উদযাপনও করতে দেখা যায় নেট বোলারকে। 

পাশের নেটে শার্দুলের পালা শেষ হলে রিশাভ পান্তকে নিয়ে শুরু করেন কোহলি। বিক্রম রাঠোরের থ্রো ডাউনে সাবলীল ব্যাটিং করেন দুজনই। যেসব শটে ১ রানের মতো মনে হচ্ছিল, সেগুলোয় প্রান্ত বদলে ব্যাটিং করেন কোহলি ও পান্ত। প্রায় ১৫ মিনিট এভাবে খেলার পর বোলারদের নেটে যান কোহলি।

রোহিত-রাহুলের মতো কোহলিও আকসারের বলে স্বস্তিতে ছিলেন না। কখনও লাগে ব্যাটের বাইরের কানায়, কখনও তার ব্যাট ঘেঁষে চলে যায় বল।

তবে সিরাজসহ অন্য পেসারদের বিপক্ষে দৃষ্টিনন্দন সব অফ ড্রাইভ, অন ড্রাইভ বা পুল শট খেলেন ভারতের এই ব্যাটিং জিনিয়াস। ব্যাটের সামনে পাওয়া বল অবলীলায় হাওয়ায় ভাসিয়ে খেলেন তিনি। রোহিত-লোকেশরা ৪০ মিনিটে ইতি টানলেও তিন নেট মিলে প্রায় ৫৫ মিনিট ব্যাটিং করেন কোহলি।

যথারীতি সংবাদকর্মীদের মধ্যেও তাকে ঘিরেই ছিল বেশি আগ্রহ। তার নেট সেশন, তার হাঁটা-চলা, সবকিছুতেই তাক করে ছিল অনেক অনেক ক্যামেরার চোখ।

টপ অর্ডারের এ তিন ব্যাটসম্যানের সঙ্গে শার্দুল-পান্ত ছাড়াও নেট সেশনে ব্যাটিং করেন ইশান কিশান, রজত পাতিদাররা। রবীন্দ্র জাদেজা ও ইয়াশ দয়ালের চোটে ওয়ানডে দলে জায়গা পাওয়া শাহবাজ আহমেদ ও কুলদিপ সেন লম্বাসময় বোলিং করেছেন।

অনুশীলন শেষে বিশ্রাম নেওয়ার সময় সতীর্থদের সঙ্গে হাসিখুশি সময় কাটান কোহলি-রোহিতরা। পরে একাডেমি থেকে বেরিয়ে যাওয়ার সময় মেটাতে হয় টিম বয়, নেট বোলারদের সেলফির আবদার।

তিন ওয়ানডে দুই টেস্ট খেলতে বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় আসেন ভারতীয় দলের এক বহর। পরে দুই বহরে ভাগ হয়ে রাত ও ভোরে নিউ জিল্যান্ড সফরের ক্রিকেটাররা বাংলাদেশে পা রাখেন। প্রথম দিনের অনুশীলনে দেখা যায়নি নিউ জিল্যান্ড থেকে আসা শিখর ধাওয়ান, শ্রেয়ার আইয়ারদের।

রোববার মিরপুর শের-ই-বাংলা স্টেডিয়ামে শুরু তিন ম্যাচের ওয়ানডে সিরিজ।