আকবরের প্রথম সেঞ্চুরিতে বড় সংগ্রহের পথে রংপুর

ঢাকা মেট্রোর বিপক্ষে প্রথম দিনের খেলা শেষে ১৬২ রানে অপরাজিত এই কিপার-ব্যাটসম্যান।

ক্রীড়া প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 9 Nov 2023, 03:46 PM
Updated : 9 Nov 2023, 03:46 PM

প্রথম শ্রেণির ক্রিকেটে আগের ২৩ ইনিংস মিলিয়ে যে রান করেছিলেন আকবর আলি, তার প্রায় অর্ধেক-ই করে ফেললেন এক ইনিংসে! চাপের সময় নেমে এই কিপার-ব্যাটসম্যান পেলেন এই সংস্করণে প্রথম সেঞ্চুরি! তানবীর হায়দারকে নিয়ে বড় সংগ্রহের ভিত গড়ার পথে জাগালেন ডাবল সেঞ্চুরির আশা।

খুলনায় বৃহস্পতিবার প্রথম স্তরের ম্যাচে আকবরের দারুণ ব্যাটিংয়ে দিনটি নিজেদের করে নিয়েছে রংপুর বিভাগ। ঢাকা মেট্রোর বিপক্ষে টস হেরে ব্যাট করতে নেমে দলটি ৩ উইকেটে করেছে ২৭৭ রান।

২২৫ বলে তিন ছক্কা ও ১৪ চারে ১৬২ রানে খেলছেন আকবর। প্রথম শ্রেণির ক্রিকেটে তার আগের সেরা ৮৮। এত দিন এটাই ছিল তার একমাত্র পঞ্চাশ ছোঁয়া ইনিংস।  

কয়েক দিনের মধ্যে এটি আকবরের দ্বিতীয় তিন অঙ্ক ছোঁয়া ইনিংস। কদিন আগে বাংলাদেশ ইমার্জিং দলের হয়ে শ্রীলঙ্কা ইমার্জিং দলের বিপক্ষে দ্বিতীয় চার দিনের ম্যাচে তিনি খেলেন ১২৯ রানের চমৎকার ইনিংস। সেই ম্যাচের অবশ্য কোনো স্বীকৃত ছিল না। তবে সেখান থেকে ফিরে জাতীয় ক্রিকেট লিগের চলতি আসরে প্রথম খেলতে নেমেই স্বীকৃত ক্রিকেটে নিজের প্রথম সেঞ্চুরি পেয়ে গেলেন তিনি।

অধিনায়কের সঙ্গে ২৩৯ রানের জুটি উপহার দেওয়ার পথে ১৯৮ বলে সাত চার ও ১ ছক্কায় ৭৯ রান করেছেন তানবীর।

শেখ আবু নাসের স্টেডিয়ামে শুরুটা যদিও একদমই ভালো হয়নি রংপুরের। পরপর দুই ওভারে দুই ওপেনারকে ফিরিয়ে দেন শহিদুল ইসলাম। ষষ্ঠ ওভারে সাদমান ইসলামের হাতে ক্যাচ দেন মেহেদি মারুফ। অষ্টম ওভারে বোল্ড হয়ে যান অনিক সরকার।  

অনেকক্ষণ ক্রিজে থেকেও তেমন কিছু করতে পারেননি আব্দুল্লাহ আল মামুন। তার প্রতিরোধ ভাঙেন কাজী অনিক। এটাই প্রথম দিন মেট্রোর শেষ সাফল্য। বাকি সময় দলকে এগিয়ে নেন আকবর ও তানবীর।

১৪ ওভারে কেবল ১৮ রান দিয়ে ২ উইকেট নিয়ে মেট্রোর সেরা বোলার শহিদুল। কাজী অনিক ১৫ ওভারে ৩৫ রান দিয়ে নেন ১ উইকেট।

সংক্ষিপ্ত স্কোর:

রংপুর বিভাগ: ৮৩.৫ ওভারে ২৭৭/৩ (অনিক ৯, মারুফ ৫, আল মামুন ১৬, আকবর ১৬২*, তানবীর ৭৯*; আবু হায়দার ১৬.৫-০-১-৭৫-০, শহিদুল ১৪-৪-১৮-২, অনিক ১৫-৩-৩৫-১, ২৪-৪-৮০-০- আমিনুল ৯-০-৪৬-০, নাঈম ৩-০-১২-০, আল-আমিন ১-০-৮-০)

সেঞ্চুরির দুয়ারে মাহিদুল

খেলা যেভাবে এগোচ্ছিল তাতে মনে হচ্ছিল, দুইশ রানের আগেই হয়তো থমকে যেতে পারে ঢাকা বিভাগ। কিন্তু অষ্টম উইকেটে দারুণ জুটি উপহার দিলেন মাহিদুল ইসলাম ও সুমন খান। তাদের দৃঢ়তায় সিলেট বিভাগের বিপক্ষে তিনশ রানের আশা জাগিয়েছে ঢাকা।

জাতীয় ক্রিকেট লিগের প্রথম স্তরের ম্যাচে বৃহস্পতিবার লম্বা সময় রাজত্ব করেন সিলেটের বোলাররা। তবে চট্টগ্রামে দিনের শেষভাগে দারুণ লড়াই করে ঢাকা। প্রথম দিনের খেলা শেষে তাদের সংগ্রহ ৮ উইকেটে ২৪৪।

২২৮ বলে ৬ চারে ৮৯ রানে খেলছেন কিপার-ব্যাটসম্যান মাহিদুল। প্রথম আট ব্যাটস্যানের মধ্যে আর কেউ যেতে পারেনি ৩৫ পর্যন্ত। 

২৪ বছর বয়সী মাহিদুলের প্রথম শ্রেণির ক্রিকেটে এটি সপ্তম ফিফটি, চলতি আসরে প্রথম। তার সর্বোচ্চ রান ৯২।

জহুর আহমেদ চৌধুরি স্টেডিয়ামে টস জিতে ব্যাট করতে নেমে শুরু থেকে নিয়মিত বিরতিতে উইকেট হারায় ঢাকা। রানের খাতা খোলার আগেই ফেরেন রনি তালুকদার। ৪ রানে ফেরেন আরেক ওপেনার আব্দুল মজিদ।

বেশিদূর যেতে পারেননি সাইফ হাসান। মাহিদুলকে কিছুটা সঙ্গ দিয়ে বিদায় নেন তাইবুর রহমান। রান আউট হয়ে দ্রুত ফেরেন শুভাগত হোম চৌধুরি।

নাদিফ চৌধুরি ও নাজমুল ইসলাম আশা জাগালেও বড় করতে পারেননি ইনিংস। ১৪৬ রানে ৭ উইকেট হারিয়ে ধুঁকতে থাকা ঢাকা ঘুরে দাঁড়ায় মাহিদুল ও সুমন ব্যাটে। অষ্টম উইকেটে তারা উপহার দেন ৯৮ রানের জুটি।

ক্যারিয়ারের চতুর্থ ফিফটির আশা জাগিয়ে সুমন থামেন ৪৬ রানে। ঢাকা অধিনায়কের ৯৭ বলের ইনিংস গড়া চারটি চার ও একটি ছক্কায়। তার বিদায় দিয়েই সমাপ্তি হয় দিনের খেলার।

সংক্ষিপ্ত স্কোর:

ঢাকা বিভাগ ১ম ইনিংস: ৮৮.৫ ওভারে ২৪৪/৮ (মজিদ ৪, রনি ০, সাইফ ১৫, মাহিদুল ৮৯*, তাইবুর ৩২, শুভাগত ৫, নাদিফ ১২, নাজমুল ২৪, সুমন ৪৬; খালেদ ১৬-৪-৩২-২, রেজাউর ১৯-০-৭৭-১, রাহাতুল ৯-১-৪০-০, নাঈম ৩২-০-৪৮-২, শাহানুর ১১.৫-১-২৬-২, তাওফিক ১-০-৮-০)