বিশাখাপাত্নাম টেস্টের প্রথম দিনে ভারতের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ব্যক্তিগত ইনিংস স্রেফ ৩৪, ইংল্যান্ড তুলে নিয়েছে ৬ উইকেট।
Published : 02 Feb 2024, 05:09 PM
প্রথম ছয় ব্যাটসম্যানের সবাই থিতু হলেন উইকেটে। কিন্তু ইনিংস বড় করতে পারলেন কেবল একজন। লড়াইটা দাঁড়াল যেন ইয়াশাসবি জয়সওয়াল বনাম ইংল্যান্ড। যেখানে প্রথম দিনে জয়ী ভারতের তরুণ ওপেনার। সতীর্থদের ব্যর্থতার দিনে অসাধারণ এক ইনিংস খেললেন জয়সওয়াল।
বিশাখাপাত্নাম টেস্টের প্রথম দিনের শেষ সেশনে ৩টিসহ ভারতের ৬ উইকেট তুলে নিয়েছে ইংল্যান্ড। ৯৩ ওভারে স্বাগতিকদের রান ৩৩৬ রান।
সিরিজের প্রথম টেস্টে ৮০ রানের ইনিংস খেলা জয়সওয়াল এবার দিন শেষে অপরাজিত ১৭৯ রানে। তার ২৫৭ বলের ইনিংসে ১৭টি চারের পাশে ছক্কা ৫টি।
৬ টেস্টের ক্যারিয়ারে ২২ বছর বয়সী এই ব্যাটসম্যানের দ্বিতীয় সেঞ্চুরি এটি। গত জুলাইয়ে ওয়েস্ট ইন্ডিজ সফরে অভিষেক ইনিংসেই তিনি করেছিলেন ১৭১।
ভারতের চতুর্থ ক্রিকেটার হিসেবে বয়স ২৩ হওয়ার আগে দেশে ও দেশের বাইরে টেস্ট শতকের স্বাদ পেলেন তিনি। আগের তিন জন রাভি শাস্ত্রী, সাচিন টেন্ডুলকার ও ভিনোদ কাম্বলি। চার জনই রঞ্জি ট্রফিতে খেলেছেন মুম্বাইয়ের হয়ে।
ভারতের হয়ে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ব্যক্তিগত ইনিংস এ দিন শুবমান গিলের ৩৪।
হায়দরাবাদ টেস্টের তুলনায় বিশাখাপাত্নামের উইকেট ব্যাটিংয়ের জন্য যথেষ্ট ভালো। হায়দরাবাদের মতো টার্ন এখানে প্রথম দিন পাননি স্পিনাররা। তবে ইংল্যান্ডের চার বিশেষজ্ঞ বোলারই ভালো বোলিং করেছেন এ দিন।
অভিষিক্ত অফ স্পিনার শোয়েব বাশির ও লেগ স্পিনার রেহান আহমেদ ধরেন ২টি করে শিকার। প্রথম টেস্টে বল হাতে ইংল্যান্ডের জয়ের নায়ক বাঁহাতি স্পিনার টম হার্টলি ও অভিজ্ঞ পেসার জেমস অ্যান্ডারসনের প্রাপ্তি করে একটি উইকেট। ৪১ বছর বয়সী অ্যান্ডারসন ১৭ ওভারে রান দেন মাত্র ৩০।
টস জিতে ব্যাটিংয়ে নেমে দেখেশুনে শুরু করেন রোহিত শার্মা ও জয়সওয়াল। প্রথম ১০ ওভারে আসে কেবল ২৩ রান। ৫ ওভারের প্রথম স্পেলে স্রেফ ৬ রান দেন অ্যান্ডারসন।
ইংল্যান্ড প্রথম সাফল্য পায় বাশিরের হাত ধরে। আলগা শটে লেগ স্লিপে ক্যাচ দেন রোহিত (৪১ বলে ১৪)। ভারত অধিনায়কের বিদায়ে ভাঙে ৪০ রানের শুরুর জুটি।
শুবমান গিল শুরুটা ভালোই করেন। তবে আরও একবার ইনিংস টেনে নিতে ব্যর্থ তিনি। দ্বিতীয় স্পেলে ফিরে দ্বিতীয় ওভারে তাকে ফেরান অ্যান্ডারসন। অফ স্টাম্পের বাইরের বলে স্লিপে ধরা পড়েন ৪৬ বলে ৩৪ রান করা ব্যাটসম্যান।
অ্যান্ডারসনের বিপক্ষে এই নিয়ে ৭ ইনিংসে ৫ বার আউট হলেন গিল। গত টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের ফাইনালের পর ১২ ইনিংসে ১৮.৮১ গড়ে তার রান মোটে ২০৭। সর্বোচ্চ ইনিংস ৩৬।
প্রথম সেশনে আর কোনো উইকেট হারায়নি ভারত। শ্রেয়াস আইয়ারের সঙ্গে জুটি বেঁধে দলকে এগিয়ে নেন জয়সওয়াল। বাশিরকে পরপর ছক্কা ও চারে ফিফটি পূর্ণ করেন তিনি ৮৯ বলে। পরের পঞ্চাশ করতে তার লাগে কেবল ৬২ বল। হার্টলিকে বেরিয়ে এসে লং অন দিয়ে ছক্কায় উড়িয়ে পা রাখেন তিন অঙ্কে।
হার্টলির পরের ওভারেই শ্রেয়াসের বিদায়ে ভাঙে ১৩১ বলে ৯০ রানের জুটি। নিচু হওয়া ডেলিভারিতে কিপারের গ্লাভসে ধরা পড়েন ৫৯ বলে ২৭ রান করা ব্যাটসম্যান।
সারফারাজ খানকে পেছনে ফেলে ৩০ বছর বয়সে টেস্ট ক্যাপ পাওয়া রাজাত পাতিদার শুরুটা ভালো করেন। অনেকটা দুর্ভাগ্যজনকভাবে শেষ হয় তার ৭২ বলে ৩২ রানের ইনিংস। রেহানকে সামনে পা বাড়িয়ে ডিফেন্স করেন তিনি। বল তার পায়ের কাছে পড়ে পেছনে আরেক ড্রপ খেয়ে আঘাত হানে স্টাম্পে।
ভালো শুরু করার পর উইকেট বিলিয়ে আসেন আকসার প্যাটেল (৫১ বলে ২৭) ও শ্রিকর ভারত (২৩ বলে ১৭)। পয়েন্টে ক্যাচ দিয়ে বাশিরের দ্বিতীয় শিকারে পরিণত হন বাঁহাতি আকসার। ভারত আউট হন শেষ বেলায়, রেহানের বলে পয়েন্টে ক্যাচ দিয়ে।
রবিচন্দ্রন অশ্বিনের সঙ্গে দিন শেষ করেন জয়সওয়াল। দ্বিতীয় দিনে তার সামনে ডাবল সেঞ্চুরির হাতছানি।
সংক্ষিপ্ত স্কোর:
ভারত ১ম ইনিংস: ৯৩ ওভারে ৩৩৬/৬ (জয়সওয়াল ১৭৯*, রোহিত ১৪, গিল ৩৪, শ্রেয়াস ২৭, পাতিদার ৩২, আকসার ২৭, ভারত ১৭, অশ্বিন ৫*, অ্যান্ডারসন ১৭-৩-৩০-১, রুট ১৪-০-৭১-০, হার্টলি ১৮-২-৭৪-১, বাশির ২৮-০-১০০-২, রেহান ১৬-২-৬১-২)