চার ম্যাচের সবকটিতে জিতে পয়েন্ট টেবিলের শীর্ষে ফিরল খুলনা টাইগার্স।
Published : 29 Jan 2024, 08:45 PM
ঝড়ো ব্যাটিংয়ে দুর্দান্ত ঢাকাকে দারুণ শুরু এনে দিলেন মোহাম্মদ নাইম শেখ। বাঁহাতি এই ওপেনারের বিদায়ের পর যেন তাসের ঘরের মতো ভেঙে পড়ল ঢাকার ইনিংস। ছোট লক্ষ্যে অধিনায়কোচিত ইনিংস খেললেন এনামুল হক। তাকে যোগ্য সঙ্গ দিলেন আফিফ হোসেন। অনায়াস জয়ে পয়েন্ট টেবিলের শীর্ষে ফিরল খুলনা টাইগার্স।
সিলেট আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়ামে সোমবার ঢাকাকে ১০ উইকেটে হারিয়েছে খুলনা। ১৩১ রানের লক্ষ্য ৩২ বল বাকি থাকতে ছুঁয়ে ফেলেছে এনামুলের নেতৃত্বাধীন দল।
বিপিএলে প্রায় সাত বছর পর দেখা মিলল ১০ উইকেটের জয়ের। এর আগে সবশেষ ২০১৭ সালের ডিসেম্বরে চিটাগং ভাইকিংসকে একই ব্যবধানে হারায় সিলেট সিক্সার্স। বিপিএলে এর বাইরে ১০ উইকেটের জয় আছে দুটি।
টুর্নামেন্টের দারুণ শুরু করা খুলনার টানা চতুর্থ জয় এটি। দিনের প্রথম ম্যাচ জিতে পয়েন্ট টেবিলের শীর্ষে উঠেছিল চট্টগ্রাম চ্যালেঞ্জার্স। ঢাকাকে হারিয়ে শীর্ষস্থান পুনরুদ্ধার করল খুলনা। জয়ে আসর শুরুর পর ঢাকা হারল টানা তিন ম্যাচে।
কিপটে বোলিংয়ে স্রেফ ১৫ রানে ৩ উইকেট নেন মোহাম্মদ নাওয়াজ। ১৩ রানে ধরেন ২ শিকার ধরে মোহাম্মদ ওয়াসিমও রাখেন বড় অবদান। পরে ৫৮ রানের অপরাজিত ইনিংসে দলকে জিতিয়ে মাঠ ছাড়েন এনামুল।
রান তাড়ায় তাসকিন আহমেদের করা ইনিংসের প্রথম বলে দারুণ ফ্লিক শটে ছক্কা মারেন এনামুল। পরের ওভারে মোসাদ্দেক হোসেনকে জোড়া চার মারেন এভিন লুইস। তাসকিনকে ছক্কায় ওড়ান ক্যারিবিয়ান ওপেনার।
সাইম আইয়ুবের পরের ওভারও ছক্কায় শুরু করেন লুইস। এক বল পর চার মারতে গিয়ে চোট পান তিনি। তবু খেলা চালিয়ে যান। তবে পরের ওভারে আর পারেননি। ১৩ বলে ২৬ রানে আহত অবসর হয়ে ড্রেসিং রুমে ফেরেন লুইস।
খুলনার স্কোরবোর্ডে তখন ৪.৩ ওভারে ৫০ রান। লুইস ফিরলেও রানের গতি কমতে দেননি এনামুল। পাওয়ার প্লের শেষ ওভারে তিনি মারেন তিনটি চার। একাদশ ওভারে একশ পূর্ণ করে খুলনা।
চলতি আসরে নিজের দ্বিতীয় ও সব মিলিয়ে চতুর্দশ ফিফটি করতে ৩৭ বল খেলেন এনামুল। ৪৮ বলের ইনিংসে তিনি ৪ চারের সঙ্গে মারেন ২টি ছক্কা। তিন নম্বরে নামা আফিফ হোসেন খেলেন ১ চার ও ৩ ছক্কায় ২৭ বলে ৩৭ রানের ইনিংস।
ম্যাচের প্রথমভাগে টস জিতে ব্যাটিংয়ে নেমে দুই ওভার দেখেশুনে খেলেন নাইম ও সাইম। তৃতীয় ওভারে নাহিদুল ইসলামের প্রথম বলে ছক্কা মারেন সাইম। শেষ দুই বলে নাইম মারেন চার ও ছক্কা।
পরের ওভারে শানাকার বলে ছক্কা ও চার মারেন সাইম। এরপরও পাকিস্তানি ওপেনারের অতিরিক্ত ডট খেলার কারণে তেমন বাড়েনি রানের গতি। পাওয়ার প্লের শেষ ওভারে ১৩ রানে থাকা নাইম ক্যাচ ছাড়েন এনামুল।
জীবন পেয়ে ঝড় তোলেন নাইম। মুকিদুল ইসলামের বলে লং অন দিয়ে মারেন বিশাল ছক্কা। আফিফ হোসেনকে পরপর তিন বলে তিনি মারেন দুটি ও একটি চার। ওভারের পাঁচ বলে ১৭ রান পাওয়ার পরও অতি আগ্রাসী হতে গিয়ে বিপদ ডাকেন নাইম। শেষ বলে এক্সট্রা কভার দিয়ে ছক্কা মারতে গিয়ে সীমানার কাছে ধরা পড়েন তিনি। ২ চারের সজ্ঞে ৪ ছক্কায় স্রেফ ২১ বলে ৪১ রান করেন ২৪ বছর বয়সী ব্যাটসম্যান।
এরপর মুখ থুবড়ে পড়ে ঢাকার ইনিংস। শুরু থেকেই মন্থর ব্যাটিং করা সাইম ১ চার ও ৩ ছক্কায় ৩৫ রান করতে খেলেন ৩৭ বল। অভিষিক্ত এসএম মেহেরব হোসেন, গুলবাদিন নাইব, ইরফান শুক্কুর, অধিনায়ক মোসাদ্দেক হোসেনরা দ্রুতই ফিরলে একশর আগে গুটিয়ে যাওয়ার শঙ্কায় পড়ে যায় ঢাকা।
অ্যালেক্স রস (১৪ বলে ২১) ও শেষ দিকে আরাফাত সানির (১৪ বলে ১৫) ব্যাটে ১২০ পার হয় ঢাকার ইনিংস। ওই রান নিয়ে একদমই লড়াই করতে পারেনি দলটি।
সংক্ষিপ্ত স্কোর:
দুর্দান্ত ঢাকা: ২০ ওভারে ১৩০/৯ (সাইম ৩৫, নাইম ৪১, গুলবাদিন ৩, মেহেরব ৩, রস ২১, ইরফান ২, মোসাদ্দেক ০, তাসকিন ৪, উসমান ১, আরাফাত ১৫*, শরিফুল ১*; নাহিদুল ২-০-২০-০, ওয়াসিম ৪-০-১৩-২, শানাকা ২-০-১৫-১, নাওয়াজ ৪-০-১৫-৩, আফিফ ২-০-২৬-১, মুকিদুল ৩-০-২৩-২, নাসুম ৩-০-১৬-০)
খুলনা টাইগার্স: ১৪.৪ ওভারে ১৩১/০ (এনামুল ৫৮*, লুইস ২৬ আহত অবসর, আফিফ ৩৭*; তাসকিন ২-০-১৯-০, মোসাদ্দেক ২-০-১৯-০, সাইম ১-০-১২-০, শরিফুল ২-০-১৯-০, গুলবাদিন ২-০-১৭-০, উসমান ৩-০-১৪-০, আরাফাত ২-০-২৫-০, মেহেরব ০.৪-০-৪-০)
ফল: খুলনা টাইগার্স ১০ উইকেটে জয়ী
ম্যাচ অব দা ম্যাচ: মোহাম্মদ নাওয়াজ