অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে বিভীষিকাময় সিরিজ থেকে পাওয়া শিক্ষা পরের সিরিজে কাজে লাগাতে চান সহ-অধিনায়ক নাহিদা আক্তার।
Published : 04 Apr 2024, 05:48 PM
ঘরের মাঠে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের বছরে কঠিন বাস্তবতার মুখোমুখি বাংলাদেশ। গত বছরের ইতিবাচক পারফরম্যান্সে আত্মবিশ্বাসের যে ভিত গড়ে উঠেছিল, প্রবল ধাক্কায় তা নড়বড়ে করে দিল অস্ট্রেলিয়া। বিশ্ব চ্যাম্পিয়নদের সামনে দুই সংস্করণে স্রেফ কর্পূরের মতোই উড়ে গেল বাংলাদেশ। সামনেই আরেকটি কঠিন চ্যালেঞ্জ। দ্রুত নিজেদের গুছিয়ে নিয়ে ভারতের বিপক্ষে সিরিজে ঘুরে দাঁড়াতে প্রত্যয়ী সহ-অধিনায়ক নাহিদা আক্তার।
অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে সিরিজটি দারুণ আশা নিয়েই শুরু করেছিলেন নাহিদারা। গত বছর শেষ ছয় মাস দারুণ ক্রিকেট খেলেছেন তারা। পাকিস্তানের বিপক্ষে ঘরের মাঠে টি-টোয়েন্টি সিরিজ জেতার আগে ভারতকে হারিয়েছেন তারা একটি ম্যাচে। পরে দক্ষিণ আফ্রিকা সফরে গিয়েও একটি বিশ ওভারের ম্যাচ জিতেছে নিগার সুলতানার দল। সেই আত্মবিশ্বাস থেকেই অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে ভালো কিছুর আশায় ছিলেন তারা।
সেই প্রত্যাশার ছিটেফোঁটাও মেটেনি মাঠের পারফরম্যান্সে। মিরপুর শের-ই বাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়ামে ওয়ানডের পর টি-টোয়েন্টি সিরিজেও বাংলাদেশকে উড়িয়ে দিয়েছে অস্ট্রেলিয়া।
সিরিজ হারের পাশাপাশি বিশ্ব চ্যাম্পিয়নদের সঙ্গে নিজেদের সামর্থ্যের বিস্তর ফারাকটাও যেন টের পেয়েছে বাংলাদেশ। বিশ্বকাপের বছরে শঙ্কার কালো মেঘ তাই জমে উঠেছে বেশ। আগামী সেপ্টেম্বর-অক্টোবরে বাংলাদেশেই হবে মেয়েদের টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের নবম আসর।
বিশ্বকাপের প্রস্তুতি হিসেবে সামনেই ভারতের সঙ্গে খেলবে বাংলাদেশ। পাঁচ ম্যাচের সিরিজ খেলতে আগামী ২৩ এপ্রিল বাংলাদেশে আসছে ভারতীয়রা।
টি-টোয়েন্টি সিরিজ শেষে সংবাদ সম্মেলনে নাহিদা বললেন, নিজেদের ঘাটতি নিয়ে কাজ করে ভারতের বিপক্ষে ঘুরে দাঁড়াতে চান তারা।
"টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের আগে আমাদের আরও খেলা আছে। ভারতের বিপক্ষে পাঁচটি ম্যাচ খেলব। আমরা চেষ্টা করব, এই সিরিজে যে ঘাটতিগুলো ছিল সেগুলো নিয়ে কাজ করার। পরবর্তী সিরিজে ভালো খেলার চেষ্টা করব।"
অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে মাঠের লড়াই শুরুর আগে নির্বাচক সাজ্জাদ আহমেদ সরাসরি সিরিজ জয়ের লক্ষ্যের কথা বলেছিলেন। সিরিজ বা ম্যাচ জেতার কথা না বললেও, ইতিবাচক পারফরম্যান্সের আশা ব্যক্ত করেছিলেন অধিনায়ক নিগারও। কিন্তু মাঠে নেমে মুখ থুবড়ে পড়েছে তাদের আশা।
বিভীষিকাময় সিরিজটি অস্ট্রেলিয়ার সঙ্গে বাংলাদেশের পার্থক্যও বুঝিয়ে দিয়েছে। সহ-অধিনায়ক নাহিদা বিস্তর ফারাক দেখছেন অভিজ্ঞতায়।
"তারা অনেক অভিজ্ঞ দল। অনেকগুলো বিশ্বকাপ জিতেছে। আমাদের কিছু তরুণ ক্রিকেটার ছিল। আমরা চেষ্টা করেছি, ওদের বিপক্ষে কীভাবে ভালো ব্যাটিং-বোলিং করা যায়। ওদের থেকে অনেক কিছু শিখতে পেরেছি। আমাদের যে ঘাটতিগুলো হয়েছে, চেষ্টা করব সামনের দিনগুলোতে সেগুলো কাটিয়ে ওঠার। আশা করব, এই শিক্ষাটা যেন পরেরবার কাজে লাগাতে পারি।"
অবশ্য শুধু অভিজ্ঞতা নয়, ওয়ানডে ও টি-টোয়েন্টি সিরিজে দুই দলের স্কিলের পার্থক্যও দিনের আলোর মতো ছিল পরিষ্কার। ব্যাটিং, বোলিং ও ফিল্ডিং, তিন বিভাগেই অস্ট্রেলিয়ার কাছে ধরাশায়ী হয়েছে বাংলাদেশ। বোলিংয়ে বিচ্ছিন্নভাবে কিছু কিছু অংশে ভালো করলেও সামগ্রিকভাবে তা ছিল নগণ্য।
নিজেদের সামর্থ্যে বিশ্বাস রাখলেও স্কিলের পার্থক্যের কথা তুলে ধরলেন নাহিদা।
"সন্দেহ নেই, তারা অনেক ভালো ক্রিকেটার। তাদের স্কিল অনেক ওপরে। আমাদের ব্যাটারদের মধ্যেও অনেক ভালো স্কিল আছে। আমাদের মধ্যেও সেঞ্চুরি আসছে, ফিফটি আসছে। আমরা সবসময় বিশ্বাস রাখি, আমাদের যে ব্যাটাররা আছে, তারা আরও ভালো করতে পারবে।"