অভিজ্ঞ দুই আম্পায়ার জোয়েল উইলসন ও কুমার ধর্মসেনার এমন সিদ্ধান্ত মানতেই পারছেন না অস্ট্রেলিয়ার সাবেক অধিনায়ক।
Published : 31 Jul 2023, 10:28 PM
এবারের অ্যাশেজ ঘিরে এমনিতেই বিতর্কের শেষ নেই। নতুন করে এবার তুমুল আলোচনার জন্ম দিয়েছে বল পরিবর্তনের ঘটনা। অস্ট্রেলিয়ার দ্বিতীয় ইনিংসের মাঝপথে বল বদল করে ইংলিশদের তুলনামূলক ‘নতুন বল’ দিয়েছেন আম্পায়াররা, অভিযোগ রিকি পন্টিংয়ের। এমন কাণ্ডের জন্য তদন্তের দাবি তুলেছেন অস্ট্রেলিয়ান কিংবদন্তি।
ওভালে শেষ টেস্টের চতুর্থ দিন রোববার ঘটে এই ঘটনা। ৩৭তম ওভারে গতিময় বোলার মার্ক উডের বাউন্সার উসমান খাওয়াজার হেলমেটে ছোবল দিলে কিছুটা নষ্ট হয়ে যায় বলের আকৃতি। এরপরই বল পরিবর্তন করেন মাঠের দুই আম্পায়ার জোয়েল উইলসন ও কুমার ধর্মসেনা। বল বদলের পর ওই দিন আর খেলা হয় কেবল ১১ বল। এরপর বৃষ্টির বাগড়ায় আর খেলা হয়নি।
আইসিসির নিয়ম অনুযায়ী, খেলার মাঝে (টেস্টে ইনিংসে ৮০ ওভারের আগে) বল পরিবর্তনের প্রয়োজন হলে, পুরনো বলের কাছাকাছি অবস্থার আরেকটি বল নিতে হবে। কিন্তু উইলসন ও ধর্মসেনার পরিবর্তিত বলটি দেখা যায় পুরনোটির তুলনায় বেশ চকচকে ও নতুন।
তখনই ধারাভাষ্যকক্ষে এ নিয়ে শুরু হয়ে যায় আলোচনা। পরে দুই বলের ছবি ছড়িয়ে পড়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমেও।
ধারাভাষ্যকক্ষে বল নিয়ে আলোচনা চলে পঞ্চম দিনেও। এ দিন সকালে অস্ট্রেলিয়ার দ্রুত তিন উইকেট তুলে নেয় ইংলিশরা। আগের দিনের দুই অপরাজিত ওপেনার ডেভিড ওয়ার্নার ও খাওয়াজাকে পরপর দুই ওভারে ড্রেসিং রুমে ক্রিস ফেরত পাঠান ওকস। মার্ক উড বিদায় করেন মার্নাস লাবুশেনকে।
স্কাই স্পোর্টসে আলাপকালে পন্টিং বলেন, বল পরিবর্তনের বিষয়টি বোধহয় গুরুত্বের সঙ্গে নেননি আম্পায়াররা। কিংবা চতুর্থ আম্পায়ারের মাঠে নিয়ে আসা বলের বাক্সে ঠিকঠাক বল দেওয়া হয়নি।
“আমার সবচেয়ে বড় চিন্তার জায়গা হলো, আগের বল ও পরিবর্তিত বলের অবস্থার মধ্যে অনেক অসঙ্গতি ছিল। কোনোভাবেই এটি বলার উপায় নেই যে, বল দুটির অবস্থা কাছাকাছি ছিল।”
“দিনের শেষে আপনি যখন বল পরিবর্তন করবেন, তখন এটি নিশ্চিত করতে হবে, আপনি যেন সঠিকটা বাছাই করেন। এজন্য দুটি বলের অবস্থা যতটা সম্ভব কাছাকাছি হতে হবে। এখন যদি ওই (বলের), বাক্সের দিকে তাকাই সেখানে খুব বেশি পুরনো বল ছিল না। কিছু পুরনো বল ছিল, সেগুলো আম্পায়াররা নিয়ে আবার রেখে দেয়।”
আইসিসির এলিট প্যানেলের দুই অভিজ্ঞ আম্পায়ারের এমন কাণ্ড যেন মানতেই পারছেন না অস্ট্রেলিয়ার দুটি বিশ্বকাপ জয়ী অধিনায়ক পন্টিং।
“আমি কোনোভাবেই বুঝতে পারছি না, দুজন আন্তর্জাতিক আম্পায়ার যারা কি-না আগেও অনেকবার (বল পরিবর্তনের) এই কাজ করেছে, তারা কীভাবে এমন ভুল করতে পারে! এটি এই টেস্ট ম্যাচের জন্য অনেক বড় মুহূর্ত। আমার মনে হয়, এটির তদন্ত হওয়া উচিত যে, বাক্সে কি আদৌ সঠিক অবস্থার বল ছিল নাকি আম্পায়াররা শুধু এমনিই একটি বল তুলে নিয়ে ভেবেছে যে, এটি ব্যবহার করা ঠিক হবে।”
পঞ্চম দিনের সকালে অবশ্য আকাশ ছিল মেঘলা। পেসারদের জন্য কন্ডিশন ছিল সহায়ক। সেটাই কাজে লাগিয়েছেন ইংলিশ বোলাররা। পন্টিংয়ের ভাবনা অবশ্য ভিন্ন। তার মতে, আগের বলটি হলে এতটা সুবিধাও পেতেন না পেসাররা।
“আজ সকালে বোলিংয়ের জন্য কন্ডিশন ছিল আদর্শ…কিন্তু গত শেষ বিকেলে যেমনটা দেখেছি, আগের বলটি, আমার কোনো সন্দেহ নেই যে, পরিবর্তিত বলটি আজ সকালে যা সহায়তা করেছে আগের বলটি এর ধারেকাছে করত।”
“গত বিকেলের চেয়ে আজকে সকালে মুভমেন্ট, সিম মুভেমেন্ট, সুইং দ্বিগুণ ছিল। আমার মনে হয়, এটা বড় ভুল, যেটার তদন্ত হওয়া প্রয়োজন।”