এবার বিসিবি থেকে অনুমতি না পেলেও তাসকিন আহমেদের বিশ্বাস, সামনে আইপিএলসহ বিশ্বের আরও অনেক লিগে খেলবেন তিনি।
Published : 09 May 2024, 05:20 PM
‘আফসোস নেই কোনো’- ছোট্ট হাসিতে বললেন তাসকিন আহমেদ। সেই হাসির আড়ালে হাহাকার চাপা দিলেন কি না, কে জানে! আইপিএল খেলার তাড়নার কথা তো আগে নানা সময়েই বলেছেন তিনি। এখন অবশ্য আর পেছন ফিরে তাকিয়ে কোনো হিসাব মেলাতে চান না অভিজ্ঞ এই পেসার। তার বিশ্বাস, সামনে আইপিএলসহ আরও অনেক লিগে খেলবেন তিনি।
দেশের বাইরের লিগে এখনও খেলতে পারেননি তাসকিন। তবে খেলার উপলক্ষ তৈরি হয়েছিল বলে তিনি জানিয়েছেন আগে। ডাক পেয়েছিলেন তিনি বিশ্বের শীর্ষ ফ্র্যাঞ্চাইজি ক্রিকেট লিগ আইপিএল থেকে।
জাতীয় দলের হয়ে দারুণ পারফরম্যান্সের ধারাবহিকতায় সেই হাতছানি এসেছিল তাসকিনের সামনে। গত কয়েকবছর ধরেই দারুণ ছন্দে তিনি। সাদা বলের দুই সংস্করণেই বাংলাদেশের অনেক সাফল্যের কারিগর তিনি। আইপিএল থেকেও তার ডাক আসে একাধিকবার। কিন্তু ওয়ার্কলোড ম্যানেজমেন্ট, ফিটনেসসহ নানা পারিপার্শ্বিক কারণে বিসিবির অনুমতি পাননি তিনি।
চলতি আইপিএলেই যেমন, কাঁধের চোটের পুনর্বাসন প্রক্রিয়ার মধ্যে থাকায় নিলাম থেকেই তুলে নেওয়া হয় তাসকিনের নাম। এর আগে আইপিএলের বিভিন্ন দল টুর্নামেন্টের মাঝপথে তাকে পেতে চাইলেও মেলেনি বিসিবির সবুজ সংকেত। তুমুল জনপ্রিয় লিগটি তাই এখনও অচেনা ভুবন তাসকিনের জন্য।
এখন তিনি ব্যস্ত জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে সিরিজে। কিন্তু আইপিএলের প্রসঙ্গ উঠে এলো মুস্তাফিজুর রহমানের সূত্রে। বিসিবির ছাড়পত্র পেয়েই এবার আইপিএলে খেলে ফিরেছেন বাঁহাতি এই পেসার। কিন্তু এই অনুমতি আগে বারবার চেয়েও পাননি তাসকিন। তাহলে কি দুজনের জন্য বোর্ডের নীতি দুই রকম?
জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে চতুর্থ টি-টোয়েন্টির আগে বৃহস্পতিবারের সংবাদ সম্মেলনে এই প্রশ্নটিই ছুটে গেল তাসকিনের দিকে। তবে তুলনার সেই প্রসঙ্গের গভীরে যেতে চাইলেন না ২৯ বছর বয়সী পেসার।
“যে জিনিসটা চলে গেছে, সেটা তো আর নিয়ন্ত্রণে নেই। ইনশাআল্লাহ সামনে (আইপিএল) খেলব, যখন ফাঁকা সময় পাব। শুধু আইপিএল নয়, এখন তো আরও অনেক লিগ আছে…।”
তাসকিনের মতোই একই অবস্থা আরেক বাঁহাতি পেসার শরিফুল ইসলামের। এবারের নিলাম থেকে সরিয়ে নেওয়া হয় শরিফুলের নামও। টুর্নামেন্টের মাঝপথে তার সঙ্গে যোগাযোগ করে লাক্ষ্ণৌ সুপার জায়ান্টস। কিন্তু নির্দিষ্ট সময়ের বাইরে ছাড়পত্র দিতে রাজি হয়নি বিসিবি। ফলে তরুণ বাঁহাতি পেসারেরও আইপিএল খেলা হয়নি।
তবে একই সময় আইপিএলে বেশ লম্বা সময়ই খেলে এসেছেন মুস্তাফিজ। জিম্বাবুয়ে সিরিজের জন্য দেশে ফেরার আগে চেন্নাই সুপার কিংসের হয়ে তিনি খেলেছেন ৯টি ম্যাচ। অবশ্য শুধু এবারই নয়, ২০১৬ সাল থেকে নিয়মিতই ভারতের ফ্র্যাঞ্চাইজি লিগটিতে খেলছেন মুস্তাফিজ।
বোর্ডের নীতির ব্যাপারটি এড়িয়ে যেতে চাইলেও প্রশ্ন আবার সরাসরি করা হলো তাসকিনকে। এবার তিনি বললেন, তাকে অনুমতি না দেওয়ার কারণ তিনি উপলব্ধি করতে পারেন।
“নীতি প্রায় একই(সবার জন্য)। হয়তো একেকজনের শরীরের ধরনের একেকরকম। এজন্য বোর্ডের চিন্তার জায়গা থাকে। এছাড়া ফাস্ট বোলার যাদেরই দেখছেন, সবারই কোনো না কোনো ইনজুরি ম্যানেজ করতে হচ্ছে। হয়তো আমার শরীরের ধরন বা বোলিংয়ের ধরন ভিন্ন, এজন্য আমি এবার যেতে পারিনি। আমার তো (শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে) টেস্টও খেলার কথা ছিল। শেষ মুহূর্তের কাঁধের চোট ম্যানেজ করার জন্য আমি বিরতিতে গিয়েছি। হয়তো ভবিষ্যতে (আইপিএল) খেলব… আফসোস নেই কোনো।”
জিম্বাবুয়ে সিরিজের জন্য আইপিএলের মাঝপথে মুস্তাফিজকে ফেরানো নিয়েও হয়েছে নানা আলোচনা। বিসিবির ক্রিকেট পরিচালনা বিভাগের প্রধান জালাল ইউনুস বলেছিলেন, এখন আর আইপিএল থেকে শেখার কিছু বাকি নেই মুস্তাফিজের। তাই বিশ্বকাপের আগে বিশ্রাম ও দলের সঙ্গে থেকে বোঝাপড়া বাড়ানোর জন্য আনা হয়েছে বাঁহাতি পেসারকে।
একই সুরে কথা বললেন তাসকিনও। তার ধারণা, আইপিএলের অভিজ্ঞতা বিশ্বকাপে কাজে লাগাতে পারবেন মুস্তাফিজ।
“আইপিএলে অনেক ভালো করেছে মুস্তাফিজ। যেহেতু ও এসেছে... আমার যতটুকু ব্যক্তিগত অভিজ্ঞতা থেকে বুঝতে পারছি, ওকে আনার কারণটা হচ্ছে দলের পরিকল্পনা ও কালচারের ক্ষেত্রে অবগত থেকে যেন (বিশ্বকাপে) যেতে পারে। কয়েকটা দিন বিশ্রামের ব্যবস্থাও করা হয়েছে। কারণ ও আমাদের মূল বোলারদের একজন।”
“অবশ্যই ওর ভালো আইপিএল গেছে এবং সেখান থেকে অনেক অভিজ্ঞতা নিয়েছে। আর আমরা যদি সবাই ফিট থাকি, ভালো ছন্দে থাকি তাহলে বোলিং থেকে ভালো কিছুই হবে।”