জেইক ফ্রেজার-ম্যাকগার্ককে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে অস্ট্রেলিয়ার টপ অর্ডারে জায়গা পাকা করে নিতে চান ম্যাথু শর্ট।
Published : 12 Sep 2024, 02:23 PM
গত জুনে টি-টোয়েন্টি থেকে অবসরের ঘোষণা দেওয়ার পর ইনস্টাগ্রামে একটি ছবি দিয়েছিলেন ডেভিড ওয়ার্নার। জেইক ফ্রেজার-ম্যাকগার্কের সঙ্গে সেই ছবির ক্যাপশনে বিদায়ী ব্যাটসম্যান লিখেছিলেন, ‘অল ইউরস নাউ, চ্যাম্পিয়ন।’ সেটিকে তখন অবধারিত বলেই মনে হচ্ছিল। ওয়ার্নারে উত্তরসূরী হবেন ফ্রেজার-ম্যাকগার্ক, এটা নিয়ে সন্দেহ করার লোক খুব একটা ছিল না। মাস তিনেক পরে এখন সেই ফ্রেজার-ম্যাকগার্ক বাইরে বসে দেখলেন, ওয়ার্নারের জায়গা নিতে জোর দাবি নিয়ে হাজির ম্যাথু শর্ট।
সুযোগটি প্রথমে অবশ্য ফ্রেজার-ম্যাকগার্কই পেয়েছিলেন। অস্ট্রেলিয়ান ক্রিকেটে আগ্রাসী ব্যাটিংয়ের পথ ধরে গত আইপিএল রাঙিয়ে বিশ্ব ক্রিকেটে নজর কাড়েন প্রতিভাবান এই ব্যাটসম্যান। অস্ট্রেলিয়ার হয়ে দুটি ওয়ানডেতেও ঝলক দেখান। সেই পথ ধরেই গত সপ্তাহে স্কটল্যান্ডের বিপক্ষে সিরিজ দিয়ে দেশের হয়ে টি-টোয়েন্টি অভিষেক হয় ২২ বছর বয়সী বিস্ফোরক ব্যাটসম্যানের।
কিন্তু সুযোগ কাজে লাগাতে ব্যর্থ হন এই ওপেনার। স্কটিশদের বিপক্ষে প্রথম ম্যাচে তিনি আউট হন শূন্য রানে। পরেরটি করতে পারেন ১৬, শেষ ম্যাচে আবার ফেরেন রান না করেই।
এরপর তার ওপর অস্ট্রেলিয়ার নির্বাচক ও টিম ম্যানেজমেন্টের ভরসার জায়গা নড়ে যায়। ইংল্যান্ডের বিপক্ষে টি-টোয়েন্টি সিরিজের প্রথম ম্যাচে বুধবার ট্রাভিস হেডের সঙ্গে ওপেন করতে পাঠানো হয় ম্যাথু শর্টকে। ফ্রেজার-ম্যাকগার্ক জায়গা হারান একাদশে।
বিগ ব্যাশসহ অস্ট্রেলিয়ার ঘরোয়া ক্রিকেটে নিয়মিত পারফরমারদের একজন শর্ট। অস্ট্রেলিয়ার হয়ে ৩টি ওয়ানডে ও ৯টি টি-টোয়েন্টি খেলেছেন আগেই। ক্যারিয়ারের দ্বিতীয় টি-টোয়েন্টিতে দক্ষিণ আফ্রিকায় ৩০ বলে ৬১ রানের ইনিংসও খেলেছেন। তবে তারকাবহুল লাইনআপে জায়গা থিতু করার পর্যাপ্ত সুযোগ পাননি।
এখন ওয়ার্নার নেই, ফ্রেজার-ম্যাকগার্ক জায়গা হারালেন। সেই সুযোগে তিনি নামতে পারলেন মাঠে। সুযোগটি হারালেন না হেলায়। হেডের সঙ্গে ৫.৫ ওভারে ৮৬ রানের বিধ্বংসী জুটি গড়লেন। নিজে খেললেন ২৬ বলে ৪১ রানের ইনিংস। নিশ্চিত করে দিলেন, ফ্রেজার-ম্যাকগার্ক বা অন্য কেউই সহজে তাকে পেছনে ফেলতে পারবে না।
সাউথ্যাম্পটনে অস্ট্রেলিয়ার ২৮ রানে জয়ের পর শর্ট সরাসরিই বললেন, ওয়ার্নারের জায়গাটি পাকাপাকিভাবেই নিজের করে নিতে চান তিনি।
“গত রাতে জানতে পারি (একাদশে থাকার কথা)। অবশ্যই এখন ডেভিড ওয়ার্নার নেই, জানাই ছিল যে জায়গাটি উন্মুক্ত। তবে জেইক ফ্রেজার-ম্যাকগার্ক স্কটল্যান্ডে ম্যাচগুলিতে সুযোগ পেল, কাজেই আমার অবস্থান তো অনিশ্চিত ছিলই। আমি খুশি যে আজকে সুযোগটি নিতে পেরেছি এবং আমার ভূমিকা পালন করে দলের জয়ে সহায়তা করেছি।”
“এটা আমার ব্যক্তিগত একটা লক্ষ্য। গত এক-দেড় বছরে দলের ভেতরে-বাইরে আসা–যাওয়া করতে হয়েছে আমাকে। এখন ডেভ যেহেতু নেই, অবশ্যই চেষ্টা করছি সুযোগ কাজে লাগানোর এবং দলে জায়গা পাকা করার।”
শর্ট খেলতে পারলে দলীয় ভারসাম্যের জন্যও আরও ভালো হয় অস্ট্রেলিয়ার। টপ-অর্ডারে ব্যাট করাই তার পছন্দ, তবে খেলতে পারেন সাত নম্বর পর্যন্ত যে কোনো পজিশনে। এর চেয়েও গুরুত্বপূর্ণ ব্যাপার, ২৮ বছর বয়সী ক্রিকেটারের অফ স্পিনও দারুণ কার্যকর। এখানেও তাই তিনি ফ্রেজার-ম্যাকগার্ক ও অন্যদের চেয়ে খানিকটা এগিয়ে।
তবে অস্ট্রেলিয়ার মতো দলে প্রতিযোগিতা এমন তীব্র, বুধবারের ম্যাচের মতো পারফরম্যান্স ধারাবাহিকভাবে করে গেলেই কেবল শর্টের ইচ্ছাপূরণ হতে পারে।