বিপিএলের গত আসলে কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্সের হয়ে ভালো পারফর্ম করলেও এবার একদমই নিষ্প্রভ ছিলেন পাকিস্তানি কিপার-ব্যাটসম্যান।
Published : 07 Feb 2024, 02:42 PM
গ্যালারির বড় পর্দায় রিপ্লে দেখেই নিজের পরিণতি বুঝে গেলেন মোহাম্মদ রিজওয়ান। রিভিউয়ের পুরোটা না দেখে ও আম্পায়ারের সিদ্ধান্তের অপেক্ষা না করেই ড্রেসিং রুমের দিকে হাঁটা দিলেন কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্সের ব্যাটসম্যান। এবারের বিপিএলে আরও একটি ম্যাচে তার ইনিংস শেষ হলো ব্যর্থতাকে সঙ্গী করে।
খুলনা টাইগার্সের বিপক্ষে মিরপুর শের-ই-বাংলা স্টেডিয়ামে বুধবার ২১ রান করে আউট হন রিজওয়ান। নাসুমের দুর্দান্ত আর্ম ডেলিভারির কোনো জবাব পাননি তিনি। আম্পায়ার আউট না দিলেও রিভিউয়ে দেখা যায়, একদম মিডল ও লেগ স্টাম্পের মাঝামাঝি লাগছিল বল।
এবারের আসরে প্রথমবারের মতো বিশ রান স্পর্শ করলেন তিনি এই ম্যাচেই। তবে তার এই ২১ রান এসেছে ২৮ বলে।
বিপিএলের এই মৌসুমে রিজওয়ানের ব্যাটের নিয়মিত চিত্র এটি। আসর শুরু করেছিলেন তিনি ফরচুন বরিশালের বিপক্ষে দুই চার এক ছক্কায় ১৪ বলে ১৭ রান করে। এবার ওই এক ম্যাচেই তার বলের চেয়ে রান ছিল বেশি। পরের ম্যাচে সিলেট স্ট্রাইকার্সের বিপক্ষে তার ১৪ রান আসে ১৬ বলে।
রংপুর রাইডার্সের বিপক্ষে তিনি আউট হন ২১ বলে ১৭ রান করে। চট্টগ্রাম চ্যালেঞ্জার্সের বিপক্ষে স্রেফ ৭৩ রান তাড়ায় ১৬ রানে অপরাজিত থাকেন তিনি ২৪ রান করে। এরপর বুধবারের ইনিংস।
সব মিলিয়ে ৫ ম্যাচে তার রান ৮৫ রান। এক ম্যাচে অপরাজিত থাকায় ব্যাটিং গড় ২১.২৫। তবে স্ট্রাইক রেট মাত্র ৮২.৫২, বিপিএলের মান ও যাবতীয় পারপার্শ্বিকতা বিবেচনায়ও যা যাচ্ছেতাই।
এবারের বিপিএলে অন্তত ৫০ রান করা ব্যাটসম্যানদের মধ্যে এত কম স্ট্রাইক রেট নেই আর কারও। এই ম্যাচ পর্যন্ত ৭ ম্যাচে ৭৩ রান করা নাজমুল হোসেন শান্তর স্ট্রাইক রেট ৮২.৯৫।
গত আসরে কুমিল্লার সাফল্যের কারিগরদের একজন ছিলেন রিজওয়ান। ম্যাচপ্রতি বিশাল অঙ্কের পারিশ্রমিকে খেলতে এসে প্রত্যাশার প্রতিদান ভালোই দিয়েছিলেন তিনি। ১০ ম্যাচে ৩৫১ রান করেছিলেন, গড় ছিল ৫০.১৪, স্ট্রাইক রেট ১২৬.২৫।
গতবারের চেয়ে তার ম্যাচপ্রতি পারিশ্রমিক এবার একটু কম। তার পরও অঙ্কটা চোখধাঁধানো। কিন্তু এবার তিনি চূড়ান্ত ব্যর্থ। পারিশ্রমিক বেশি হওয়া মানেই অবশ্যই ভালো পারফরম্যান্সের নিশ্চয়তা নয়। ক্রিকেটে যে কাউকেই ব্যর্থতা আলিঙ্গন করতে পারে। এই ম্যাচের নিজের ফর্মহীনতা নিয়ে প্রশ্নে তিনি বলেছিলেন, ‘আমি যন্ত্র নই।’ তার সেই কথায়ও ভুল নেই কোনো। তবে এই ধরনের ফ্র্যাঞ্চাইজি টুর্নামেন্টে বিদেশি ক্রিকেটারদের কাছে দলগুলির প্রত্যাশা একটু বেশিই থাকে। রিজওয়ানের মতো নির্ভরযোগ্য ও তারকা ক্রিকেটারদের কাছে চাওয়াটা থাকে আরও বেশি। সেখানেই বড় ঘাটতি ছিল এবারে পাকিস্তানি এই কিপার-ব্যাটসম্যানের।
এই পারফরম্যান্সকে উন্নত করার সুযোগও আর পাচ্ছেন না তিনি। এই ম্যাচ দিয়েই শেষ হওয়ার কথা এবারের বিপিএলে তার অভিযান।