৪৩ বছর বয়সে কীভাবে নিজেকে ফিট রাখেন ধোনি

আইপিএল বাদে আর কোনো প্রতিযোগিতামূলক ক্রিকেটে না খেলেও এই বয়সে ধোনির ফিটনেস দেখে অবাক হারভাজান সিং।

চেন্নাইয়ের অনুশীলনে মাহেন্দ্র সিং ধোনি। ছবি: চেন্নাই সুপার কিংস ফেইসবুক

আন্তর্জাতিক ক্রিকেট থেকে অবসর নিয়েছেন বহুদিন আগে। মাহেন্দ্র সিং ধোনিকে এখন খেলতে দেখা যায় শুধুই আইপিএলে। বয়স চল্লিশের গণ্ডি পার করার পর খেলোয়াড়দের ফিটনেস ধরে রাখা একেবারেই সহজ নয়। সেখানে ৪৩ বছর বয়সেও কীভাবে নিজেকে ফিট রাখেন ধোনি? সাবেক ভারতীয় অধিনায়ককে সামনে পেয়ে এই প্রসঙ্গে প্রশ্ন করা থেকে নিজেকে আটকে রাখতে পারেননি তার সাবেক জাতীয় দল সতীর্থ হারভাজান সিং।

ক্রিকেট ওয়েবসাইট ইএসপিএনক্রিকইনফোর একটি ‘শো’তে আলাপচারিতায় সোমবার ৪৪ বছর বয়সী হারভাজান বলেন, সম্প্রতি এক অনুষ্ঠানে ধোনির ফিটনেস দেখে অবাক হয়ে যান তিনি।

“সম্প্রতি আমাদের এক বন্ধুর মেয়ের বিয়েতে তার সঙ্গে আমার দেখা হয়েছিল। তাকে খুব ফিট, শক্তপোক্ত দেখাচ্ছিল। আমি তাকে জিজ্ঞেস করলাম, ‘এই বয়সে তুমি যা করছো, এটা কি কঠিন নয়?’ সে বলল, ‘হ্যাঁ, কঠিন, কিন্তু এটাই একমাত্র কাজ, যা করতে ভালোবাসি। আমি এতে আনন্দ খুঁজে পাই। আমি এটাই করতে চাই, খেলতে চাই।’ যতক্ষণ ক্ষুধা থাকবে, ততক্ষণ খেলা চালিয়ে যাওয়া যায়। সারা বছর ক্রিকেট না খেলে কাজটা করা কঠিন। সে দেখিয়ে দিচ্ছে, কীভাবে তা করা যায়।”

“সে অবশ্যই অন্যদের চেয়ে ভালো কিছু করছে। সে কোনোমতে (দলে) টিকে নেই, সকল বোলারের ওপর আধিপত্যও বিস্তার করছে সে।”

এবারের আইপিএল সামনে রেখে চেন্নাই সুপার কিংস শিবিরে যোগ দেওয়ার পর থেকে অনুশীলনে ধোনি কীভাবে নিজেকে প্রস্তুত করছেন, সেটাও তুলে ধরলেন সাবেক স্পিনার হারভাজান।

“এক-দুই মাস ধরে সে অনুশীলন করছে। যত বেশি বল খেলবেন, তত টাইমিং আর ছন্দ পাবেন, ছক্কা মারতে পারবেন। চেন্নাইয়ের নেটে প্রতিদিন ২-৩ ঘণ্টা ব্যাটিং করছে সে। এমনকি এই বয়সেও সে মাঠে সবার আগে আসে এবং সবার পরে মাঠ ছাড়ে। এটাই পার্থক্য।”

২০১৯ বিশ্বকাপের পর অনেক দিন আন্তর্জাতিক ক্রিকেটের বাইরে থাকার পর ২০২০ সালের অগাস্টে জাতীয় দলকে বিদায় বলে দেন ধোনি। এরপর থেকে শুধু আইপিএলেই খেলছেন ভারতের ২০১১ বিশ্বকাপ ও ২০১৩ চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি জয়ী অধিনায়ক।

তার নেতৃত্বে চেন্নাই আইপিএল জিতেছে পাঁচবার। গত আসরের আগে তার জায়গায় চেন্নাইয়ের অধিনায়ক করা হয় রুতুরাজ গায়কোয়াড়কে। ব্যাট হাতে অবশ্য দারুণ সফল ছিলেন ধোনি। শেষ সময়ের দাবি দারুণভাবে মেটান এই কিপার-ব্যাটসম্যান। ৫৩.৬৬ গড়ে ১৬১ রান করেন ২২০.৫৪ স্ট্রাইক রেটে। ছক্কা মারেন ১৩টি।

বেশিরভাগ ইনিংসে ধোনি ব্যাটিং করেন সাত অথবা আট নম্বরে। অনেকে মনে করেন, তার আরও ওপরের দিকে ব্যাট করা উচিত।

হারভাজানের সঙ্গে ইএসপিএনক্রিকইনফোর ওই অনুষ্ঠানে থাকা সাবেক ভারতীয় ব্যাটসম্যান আকাশ চোপড়া বললেন, এই পর্যায়ে এসে ধোনির কোন পজিশনে ব্যাটিং করা উচিত, সেটা তিনি নিজেই ভালো জানেন।

“সে নিজের সঙ্গে খুবই সৎ। আর এটা অনেক গুরুত্বপূর্ণ। কেন? আমরা সবাই বলি যে, তার ওপরের দিকে ব্যাট করা উচিত। কিন্তু সে নিজের কাছে পরিষ্কার যে, ‘আমি ৪০ বল খেলতে পারব না। যদি ইনিংসের ১২ ওভার বাকি থাকে এবং আমি ব্যাট করতে নামি, তাহলে আমি শেষ করতে পারব না। সবাই হয়তো ভাবে, আমি মারতে পারব, কিন্তু আসল কথা হলো আমি জানি, তা পারব না।’ সে কী করতে পারে আর কী পারে না, তা খুব ভালো করেই জানে সে।”