ভারত-ইংল্যান্ড সিরিজ
ইংল্যান্ড অধিনায়ককে চাপমুক্ত রাখতে এবং নেতৃত্বে আরও বেশি ভূমিকা রাখতে তাকে কিপিং না করানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছেন দলটির সাদা বলের নতুন কোচ।
Published : 21 Jan 2025, 06:03 PM
জস বাটলারের নেতৃত্বে পরপর দুই বছরে দুটি বিশ্বকাপ শিরোপা ধরে রাখতে ব্যর্থ হয়েছে ইংল্যান্ড। সাম্প্রতিক সময়ে তার ব্যক্তিগত পারফরম্যান্সও আশানুরূপ নয়। সব মিলিয়ে, তার আত্মবিশ্বাস ঠেকেছে তলানিতে। কঠিন সময়ের মধ্যে থাকা ইংলিশ অধিনায়ককে পুনরুজ্জীবিত করাই এখন প্রধান লক্ষ্য ব্রেন্ডন ম্যাককালামের। ইংল্যান্ডের সাদা বলেও দায়িত্ব পাওয়া এই কোচের বিশ্বাস, বাটলারের সেরা সময় এলো বলে।
ওয়েন মর্গ্যানের নেতৃত্বে ২০১৯ সালে নিজেদের প্রথম ওয়ানডে বিশ্বকাপ জেতে ইংল্যান্ড। কিন্তু বাটলারের অধিনায়কত্বে ২০২৩ সালে মুকুট ধরে রাখতে পারেনি তারা। হতাশাজনক পারফরম্যান্সে বিদায় নেয় প্রাথমিক পর্ব থেকেই।
২০২২ সালে ইংল্যান্ডকে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের দ্বিতীয় শিরোপা এনে দেন বাটলার। কিন্তু গত বছর তারা ব্যর্থ হয় ট্রফি ধরে রাখতে। সেমি-ফাইনালে ভারতের বিপক্ষে হেরে ভাঙে তাদের শিরোপা স্বপ্ন।
টানা দুই বছরে এমন ব্যর্থতার পর সাদা বলের দায়িত্ব থেকে সরে দাঁড়ান ওই সময়ের কোচ ম্যাথু মট। গত অক্টোবরে টেস্টের কোচ ম্যাককালামকে বাকি দুই সংস্করণেও দায়িত্ব দেয় ইংল্যান্ড। নিউ জিল্যান্ডের সাবেক অধিনায়ক ও বিধ্বংসী ব্যাটসম্যানের কোচিংয়ে সাদা বলের নতুন যুগে পা দিতে যাচ্ছে ইংলিশরা। ভারত সফরে ওয়ানডে ও টি-টোয়েন্টি দিয়ে শুরু হবে তার চ্যালেঞ্জ। এরপর রয়েছে চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি।
পরিসংখ্যানে ফুটে উঠছে বাটলারের সাদামাটা পারফরম্যান্স। ওয়ানডেতে সবশেষ ১৫ ইনিংসে কেবল একটি ফিফটি ছোঁয়া ইনিংস খেলতে পেরেছেন তিনি। গত টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের পর থেকে পেশির চোটে অনেক দিন দলের বাইরেও ছিলেন তিনি। গত নভেম্বরে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে টি-টোয়েন্টি দিয়ে মাঠে ফিরে কিছুটা ব্যাটের ঝলক অবশ্য দেখিয়েছেন বাটলার।
তার নেতৃত্বে টি-টোয়েন্টি দিয়ে বুধবার শুরু ইংল্যান্ডের ভারত সফর। আগের দিন সংবাদ সম্মেলনে ম্যাককালাম বললেন, বাটলারকে সেরা রূপে ফেরানোই এখন তার মূল লক্ষ্য।
“ক্যারিয়ারের শেষ দিকে যখন কেউ নেতৃত্ব দেওয়ার সুযোগ পায়, তখন মাঝেমধ্যে তার মধ্যে সাফল্যের জন্য কিছুটা মরিয়া ভাব ফুটে ওঠে। (সাফল্য না পেলে) হতাশা তৈরি করতে পারে এবং খেলাটা তার কাছে ততটা উপভোগ্য হয়ে ওঠে না।”
“নিজেকে প্রমাণ করতে চাওয়ার পরিবর্তে কেউ যদি দলের অন্যদের সেরাটা বের করে আনার চেষ্টা করে, তাহলে মাঝেমধ্যে এটাই তাকে আরও চাপমুক্ত রাখতে এবং পারফর্ম করতে সাহায্য করে।”
ম্যাককালামের কোচিংয়ে কঠিন সময় থেকে ঘুরে দাঁড়িয়ে টেস্টে এখন দারুণ সময় কাটাচ্ছে ইংল্যান্ড। কিউই তারকার জাদুর কাঠির ছোঁয়ায় রঙিন পোশাকেও বদলে যাবে ইংলিশরা, আশা অনেকের।
সাদা বলের দায়িত্ব নেওয়ার পর থেকেই ম্যাককালামের নজর ছিল বাটলারের দিকে। অনেক দিন আগেই তিনি বলেছিলেন, ইংল্যান্ড অধিনায়ককে উজ্জীবিত করার কাজ চলছে। এখন জানালেন, “সে এখন হাসছে, আর এটা দারুণ ব্যাপার। সে এই মুহূর্তে খুব খুশি।”
বাটলারের সঙ্গে ম্যাককালামের বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক অনেক দিনের। আর এটাই সাদা বলের দলে দারুণ কাজ করবে বলে বিশ্বাস তার।
“জস ও আমি দীর্ঘদিন ধরে বন্ধু। আমরা যখন একসঙ্গে খেলতাম না, তখনও আমরা খেলাটি নিয়ে প্রায় একই দর্শন ধারণ করতাম। আর এই বন্ধুত্ব দলে বিভিন্ন বিষয় নিয়ে আমাদের দ্রুত কাজ করতে সাহায্য করেছে। আমি নিশ্চিত, আগামী কয়েক বছরে আমরা জসকে মাঠে খেলা উপভোগ করতে দেখব।”
ভারতের বিপক্ষে টি-টোয়েন্টিতে তিন নম্বরে ব্যাটিং করবেন বাটলার। আর এই সিরিজে কিপিং গ্লাভস হাতে দেখা যাবে না তাকে। ম্যাককালামের মতে, এটা বাটলারের নেতৃত্বের জন্য একটি ইতিবাচক সিদ্ধান্ত হতে যাচ্ছে।
“এটা (বাটলারের কিপিং না করা) আমাদের জন্য সত্যিই ইতিবাচক দিক হতে যাচ্ছে। কারণ, ২২ গজ দূরে থাকার চেয়ে এভাবে বোলারের সঙ্গে শেষ কথাটা বলার এবং শেষ মুহূর্তে ভালোভাবে বোঝাপড়া তৈরির সুযোগ পাবে জস।”