তুষারের সেঞ্চুরি, মুকিদুলের ৬ উইকেট

ম্যাচের প্রথম দুই বলে নেই দুই উইকেট! সেখান থেকে দুর্দান্ত এক ইনিংস খেললেন তুষার ইমরান। জাতীয় ক্রিকেট লিগে আগের ম্যাচে ৯৯ রানে আউট হওয়ার আক্ষেপ কিছুটা ঘোচালেন এবার সেঞ্চুরি করে। কিন্তু খুলনা বিভাগের বেশিরভাগ ব্যাটসম্যানই যোগ দিলেন ব্যর্থতার মিছিলে। ক্যারিয়ার সেরা বোলিংয়ে গতবারের চ্যাম্পিয়নদের আড়াইশর নিচে গুটিয়ে দিয়েছেন মুকিদুল ইসলাম।

ক্রীড়া প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 29 March 2021, 01:01 PM
Updated : 29 March 2021, 01:10 PM

দ্বিতীয় রাউন্ডের প্রথম দিন সোমবার খুলনাকে ২২১ রানে থামিয়ে রংপুর বিভাগ দিন শেষ করে ৩ উইকেটে ১০৩ রানে। এখনও ১১৮ রানে পিছিয়ে আছে তারা।

প্রথম শ্রেণির ক্রিকেটে বাংলাদেশের সর্বোচ্চ রান ও সেঞ্চুরির মালিক তুষার আগে থেকেই। ৩২তম সেঞ্চুরিতে তিনি সমৃদ্ধ করেছেন রেকর্ড। এগিয়ে গেছেন প্রথম ব্যাটসম্যান হিসেবে ১২ হাজার রানের মাইলফলক ছোঁয়ার আরও কাছে।

৩৭ বছর বয়সী এই ব্যাটসম্যান ১৩৬ বলে ২১ চারে করেন ১১৬ রান। প্রথম শ্রেণির ক্রিকেটে তার মোট রান এখন ১১ হাজার ৯২০।

তুষার ছাড়া দুই অঙ্কে যেতে পারেন আর কেবল দুজন। অধিনায়ক নুরুল হাসান সোহান ৩১ ও নাহিদুল ইসলাম করেন ২৯ রান।

খুলনার প্রথম ও শেষ ৩ উইকেট নেন মুকিদুল। ২০ বছর বয়সী পেসার ৬৪ রানে নেন ৬ উইকেট। সাত ম্যাচের ক্যারিয়ারে এই নিয়ে দ্বিতীয়বার পেলেন পাঁচ উইকেটের স্বাদ। ৩৭ রানে ৫ উইকেট তার আগের সেরা বোলিং।

রংপুর ক্রিকেট গার্ডেনে প্রথম স্তরের ম্যাচে টস জিতে ব্যাটিংয়ে নেমে খুলনার শুরুটা হয় দুঃস্বপ্নের মতো। প্রথম দুই বলে রবিউল ইসলাম রবি ও ইমরুল কায়েসকে ফিরিয়ে মুকিদুল জাগান হ্যাটট্রিকের সম্ভাবনা।

শর্ট ফাইন লেগে রিশাদ হোসেনের হাতে ক্যাচ দেন রবি। তিনে নেমে ইমরুল হন এলবিডব্লিউ। হ্যাটট্রিক ঠেকিয়ে দেন তুষার। এক বল পর মারেন বাউন্ডারি। মুকিদুলের পরের ওভারে তিনি মারেন টানা দুই চার। ডানহাতি পেসার পরের ওভারে এসে ফিরিয়ে দেন অমিত মজুমদারকে।

তখন ১৯ রানে ৩ উইকেট হারিয়ে বিপদে খুলনা। এরপর শুরু তুষারের লড়াই। প্রথমে সোহানের সঙ্গে ৭৪ রানের জুটিতে সামাল দেন শুরুর ধাক্কা। সোহান ফেরেন থিতু হয়ে। নবিন ইসলামের বলে ডিপ স্কয়ার লেগ ফিল্ডারের হাতে ক্যাচ দেওয়া খুলনা অধিনায়ক ৪৪ বলে ৩ চার ও এক ছক্কায় করেন ৩১।

নাহিদুলের সঙ্গে আরেকটি পঞ্চাশোর্ধ জুটিতে দলকে এগিয়ে নেন তুষার। নাহিদুলও থিতু হয়ে ইনিংস বড় করতে পারেননি। ৪২ বলে ৪টি চারে ২৯ রান করা এই ব্যাটসম্যানকে কট বিহাইন্ড করে ৬৩ রানের জুটি ভাঙেন আরিফুল হক।

জিয়াউর রহমান ৯ বল খেলে খুলতে পারেননি রানের খাতা। তুষার একাই চালিয়ে যান লড়াই। ৯৮ থেকে আরিফুলকে বাউন্ডারি হাঁকিয়ে সেঞ্চুরিতে পা রাখেন তিনি। ৫৯ বলে স্পর্শ করেছিলেন পঞ্চাশ, ১১৩ বলে পূর্ণ করেন শতরান।   

প্রথম শ্রেণির ক্রিকেটে ৩২তম সেঞ্চুরির স্বাদ পেলেন তুষার ইমরান। ফাইল ছবি

তিন অঙ্ক ছোঁয়ার পর আর বেশিদূর এগোতে পারেননি তুষার। মুকিদুলের বলে ধরা পড়েন শর্ট থার্ড ম্যানে।

মুকিদুল পরে আব্দুল হালিমকে ফিরিয়ে পূর্ণ করেন পাঁচ উইকেট। আর মিনহাজুর রহমানকে কট বিহাইন্ড করে গুটিয়ে দেন খুলনার ইনিংস।

আরিফুল ও নবিন নেন ২টি করে উইকেট। লেগ স্পিনার রিশাদ সাত নম্বর বোলার হিসেবে বোলিংয়ে এসে সুযোগ পান কেবল এক ওভার। 

ব্যাটিংয়ে রংপুরের শুরুটাও ভালো হয়নি। দ্বিতীয় ওভারে মাসুম খানের বলে বোল্ড হয়ে গোল্ডেন ডাকের স্বাদ পান নবিন। থিতু হয়ে ফেরেন সোহরাওয়ার্দী শুভ (৩৪ বলে ১৫) ও জাহিদ জাবেদ (৪৮ বলে ৩২)।

৬৩ রানে ৩ উইকেট হারানো দলের হাল ধরেন তানবীর হায়দার ও নাসির হোসেন। দিনের বাকি সময়টা কাটিয়ে দেন এই দুজন। ৮৩ বলে ৪০ রানের জুটিতে অবিচ্ছিন্ন আছে তারা। ৪৭ বলে ৪টি চারে ২৯ রানে অপরাজিত তানবীর। ৪৫ বলে ৩ চারে ১৯ রানে খেলছেন প্রথম রাউন্ডে সেঞ্চুরি করা নাসির।

সংক্ষিপ্ত স্কোর:

খুলনা ১ম ইনিংস: ৪৯.২ ওভারে ২২১ (রবি ০, অমিত ৪, ইমরুল ০, তুষার ১১৬, সোহান ৩১, নাহিদুল ২৯, জিয়াউর ০, মাসুম ৬, হালিম ৯, মিনহাজুর ৯, টিপু ৪*; মুকিদুল ১৩.২-১-৬৪-৬, সাজেদুল ৮-২-৩৫-০, আরিফুল ১৫-২-৫৪-২, মাহমুদুল ১-০-৬-০, সোহরাওয়ার্দী ২-০-১৪-০, নবিন ৯-০-৩১-২, রিশাদ ১-০-৬-০)

রংপুর ১ম ইনিংস: ২৯ ওভারে ১০৩/৩ (জাহিদ ৩২, নবিন ০, সোহরাওয়ার্দী ১৫, তানবীর ২৯*, নাসির ১৯*; হালিম ৮-১-৩৪-১, মাসুম ৮-২-২৪-১, জিয়াউর ১১-২-৩৮-১, নাহিদুল ১-০-৫-০, মিনহাজুর ১-০-১-০)