বোর্ডের চুক্তিতে থাকলেও দীর্ঘদিন ধরে ইংল্যান্ডের কোনো সংস্করণের দলেই সুযোগ পাচ্ছেন না অভিজ্ঞ এই আগ্রাসী ক্রিকেটার।
Published : 27 Mar 2025, 12:24 PM
এক সময় জনি বেয়ারস্টোকে ছাড়া কোনো সংস্করণেই ইংল্যান্ড দল ভাবা যেত না। এখন তিনি সব সংস্করণ থেকেই বাইরে। বয়স পেরিয়ে গেছে ৩৫। তরুণরা উঠে আসছে একের পর এক। বাস্তবতা বলছে, তার দলে ফেরা খুবই কঠিন। তবে তিনি আশা ছাড়ছেন না মোটেও। অভিজ্ঞ ক্রিকেটারের মতে, আশা ছেড়ে দেওয়া হবে স্টুপিডের মতো কাজ।
ইংল্যান্ডের হয়ে বেয়ারস্টোর সবশেষ ম্যাচটির ঠিক ৯ মাস পূর্ণ হচ্ছে বৃহস্পতিবার। গত ২৭ জুন তিনি খেলেছিলেন টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের ম্যাচে। তার সবশেষ টেস্ট খেলার এক বছর পেরিয়ে গেছে এই মাসেই, ভারতের বিপক্ষে ধারামসালায় যে ম্যাচটি ছিল তার শততম টেস্ট। ২০২৩ বিশ্বকাপের পর ওয়ানডেতেও আর সুযোগ মেলেনি তার।
টেস্টে তাকে বাদ দিয়ে কিপার-ব্যাটসম্যান হিসেবে জেমি স্মিথকে নিয়েছে ইংল্যান্ড। টেস্ট ক্যারিয়ারের শুরুটা দুর্দান্ত করে বেয়ারস্টোকে প্রায় ভুলিয়ে দিয়েছেন তিনি। পারিবারিক কারণে স্মিথ যখন অনুপস্থিত ছিলেন, তার বদলে ইংল্যান্ড বেছে নিয়েছিল জর্ডান কক্সকে।
সেই কক্স যখন আঙুলের চোটে ছিটকে গেলেন, বদলি হিসেবে সুযোগ পান আরেক কিপার-ব্যাটার অলিভার রবিনসন। কিপার হিসেবে ঠেকার কাজ চালিয়ে টেস্ট খেলেছেন অলিভার পোপও। তার পরও বেয়ারস্টোর দিকে ফিরে তাকায়নি ইংল্যান্ড। সীমিত ওভারেও কিপার-ব্যাটসম্যান হিসেবে খেলছেন স্মিথ। এই দায়িত্ব পালন করেছেন ফিল সল্টও।
সবকিছুতেই ফুটে ওঠে, ইংল্যান্ডের ম্যানেজমেন্ট ও নির্বাচকদের ভাবনায় নেই বেয়ারস্টো। তবে এখনও তিনি কেন্দ্রীয় চুক্তিতে আছেন, যে চুক্তির মেয়াদ আগামী অক্টোবর পর্যন্ত।
ইয়র্কশায়ারের হয়ে কাউন্টি মৌসুম শুরুর আগে বেয়ারস্টো বললেন, চুক্তিতে আছেন বলে তার ফেরার আশাও অটুট।
“অবশ্যই (বাস্তবসম্মত), কারণ আমি এখনও চুক্তিবদ্ধ। আশা না করাটাই হবে স্টুপিডের মতো। সবকিছুর মূল ব্যাপারটাই হলো ইংল্যান্ডের হয়ে খেলার চেষ্টা করা। গোটা দলের জন্যই সেটি চ্যালেঞ্জ। সবাই চাই সামনে এগিয়ে যেতে এবং এটা (ইংল্যান্ডের হয়ে খেলা) করতে।”
একটা সময় নির্বাচকদের ভাবনায় প্রবলভাবে ছিলেন বলেই ২০২৩ সালে দুই বছরের জন্য চুক্তিতে রাখা হয় বেয়ারস্টোকে। কিন্তু ক্রমে ফর্ম হারিয়ে সব সংস্করণ থেকেই জায়গা হারান তিনি। ইয়র্কশায়ারের হয়ে পারফর্ম করেই সেই জায়গা ফিরে পাওয়ার প্রত্যয় তার।
“আমাকে দুই বছরের চুক্তিতে রাখা হয়েছিল, সেখানে তো আমার দায় নেই। আমি স্রেফ সেই আবহেই থাকতে চাই। প্রাক-মৌসুমে আমি ইয়র্কশায়ারে ছিলাম এবং যা কিছু করা সম্ভব, সব করেছি। ইয়র্কশায়ারে হয়ে প্রাক-মৌসুমের কাজ করেছি, ইয়র্কশায়ারের হয়ে মৌসুম শুরুর প্রস্তুতি নিচ্ছি, ড্রেসিং রুমে সবার জন্য সেরাটা দিতে এগিয়ে যাচ্ছি এবং দেখতে মুখিয়ে আছি, দল হিসেবে কোনটি আমাদের জন্য সেরা।”
“বাকিটা পুরোপুরি আমার নিয়ন্ত্রণের বাইরে। সেসব আমার ব্যাপার নয়। আমি বন্দুক লোড করতে পারি, ট্রিগার তো টানতে পারব না। অপেক্ষা করে দেখতে হবে এটা নিয়ে।”
আগামী ২২ মে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে টেস্ট দিয়ে শুরু হবে ইংল্যান্ডের আন্তর্জাতিক মৌসুম। এরপর ভারতের বিপক্ষে আছে পাঁচ ম্যাচের গুরুত্বপূর্ণ এক সিরিজ। নভেম্বরে আছে অস্ট্রেলিয়ায় অ্যাশেজের সফর। ভারতের বিপক্ষে দেশের মাঠে তার পারফরম্যান্স বেশ ভালো। অস্ট্রেলিয়াতেও দুটি সেঞ্চুরি আছে তার। এই দুই সিরিজে তাকিয়ে তাই ইয়র্কশায়ারের হয়ে জ্বলে উঠতে চান ইংল্যান্ডের হয়ে ২৮৭টি ম্যাচ খেলা ক্রিকেটার।
“এটা অবশ্যই অনেক গুরুত্বপূর্ণ এক গ্রীষ্ম। ভারত আসছে সফরে, এরপর অস্ট্রেলিয়া আছে। এই দুই দলের বিপক্ষে আমার পরিসংখ্যান বেশ ভালো, বিশেষ করে ইংল্যান্ডে ও অস্ট্রেলিয়ায়… অস্ট্রেলিয়ায় সবশেষ দুটি সফর ভালো কেটেছে আমার। ভারত যখন সবশেষ এখানে এসেছিল, খুব খারাপ করিনি। এবারও দেখব, কী হয়…।”
“আমার প্রথম ও মূল কাজ হলো ইয়র্কশায়ারের হয়ে মনোযোগ দেওয়া, মৌসুমের শুরুটা যেন আমরা ভালো করতে পারি। বাকিটা পরিস্থিতির ওপরই ছেড়ে দেব।”