সংস্করণ ভিন্ন হলেও চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির আগে ম্যাচ অনুশীলনের ঘাটতি রয়ে যাচ্ছে নাজমুল হোসেন শান্তর, তাকে বরিশালের একাদশে জায়গা না দেওয়ার কারণ ব্যাখা করলেন অধিনায়ক তামিম।
Published : 30 Jan 2025, 08:42 AM
ঢাকা ক্যাপিটালসের বিপক্ষে বুধবার যখন টস করছেন ফরচুন বরিশালের অধিনায়ক তামিম ইকবাল, তখন বাউন্ডারি সীমানার বাইরে দিয়ে চক্কর দিয়ে চলেছেন নাজমুল হোসেন শান্ত। তখনই পরিষ্কার হয়ে যায়, একাদশে নেই শান্ত। খুব বিস্ময়কর অবশ্য ছিল না। আগের কয়েক ম্যাচের ধারাবাহিকতাই চলতে থাকল শুধু। জাতীয় দলের অধিনায়ক টানা পাঁচ ম্যাচে জায়গা পেলেন না তার বিপিএল দলের একাদশে।
ম্যাচের পর সংবাদ সম্মেলনে বরিশাল অধিনায়ক তামিম ইকবাল বললেন, দলীয় সমন্বয়ের কারণেই মূলত শান্তকে তারা ঠাঁই দিতে পারছেন না একাদশে।
ফ্র্যাঞ্চাইজি ক্রিকেটের একটি দল অবশ্যই নিজেদের সম্ভাব্য সেরা পছন্দই বেছে নিতে চাইবে। তবে চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির আগে অধিনায়কের এভাবে বাইরে বসে থাকা বাংলাদেশ ক্রিকেটের জন্য একটু অস্বস্তির কারণ বটে। যদিও চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি ওয়ানডে সংস্করণের, তার পরও ম্যাচ অনুশীলনের ঘাটতি তো রয়েই যাবে শান্তর।
সবশেষ ওয়ানডে ম্যাচটি তিনি খেলেছেন গত ৯ নভেম্বর আফগানিস্তানের বিপক্ষে। ডিসেম্বরে ওয়েস্ট ইন্ডিজ সফরে যেতে পারেননি চোটের কারণে। এবারের বিপিএলে খেলেছেন বরিশালের ১১ ম্যাচের মধ্যে কেবল ৫টিতে। .
শান্তর ব্যাপারটি অনুভব করতে পারছেন তামিমও। ঢাকার বিপক্ষে ম্যাচের পর সংবাদ সম্মেলনে সতীর্থের প্রতি সহমর্মিতা জানিয়ে নিজেদের টিম ম্যানেজমেন্টের অবস্থানও তুলে ধরলেন বরিশাল অধিনায়ক।
“এটা খুবই দুর্ভাগ্যজনক। আমাকে স্বীকার করতেই হবে, ওকে যতটা খেলানো উচিত ছিল বা সুযোগ দেওয়া উচিত ছিল, আমরা দিতে পারছি না। কারণ, আমার দল যদি দেখেন, আমাদের কম্বিনেশন মেলাতে খুব কঠিন হচ্ছে। এমনকি প্রথম তিন-চার ম্যাচে কম্বিনেশন মেলাতেই পারিনি ঠিকমতো। তার পরও তাকে প্রথম দিকে খেলানোর চেষ্টা করেছি।”
প্লেয়ার্স ড্রাফটের পর অবশ্য অনুমান করা যাচ্ছিল যে, এই স্কোয়াড থেকে একাদশে জায়গা পাওয়া একটু কঠিনই হবে শান্তর জন্য। টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটে বেশ কিছুদিন ধরেই ভালো ফর্মে নেই তিনি। ২০২৩ বিপিএলে সিলেট স্ট্রাইকার্সের হয়ে ৫১৬ রান করার পর ক্যারিয়ারের মোড় ঘুরে গিয়েছিল তার। কিন্তু একই দলের হয়ে গত বিপিএলে ১২ ইনিংস খেলে মোটে ১৭৫ রান তিনি করতে পেরেছিলেন ১৪.৫৮ গড় ও ৯৩.৫৮ স্ট্রাইক রেটে। জাতীয় দলেও এই সংস্করণে তার পারফরম্যান্স একদমই অনুজ্জ্বল। নেতৃত্বের ২৪ ম্যাচে তার ফিফটি কেবর একটি, স্ট্রাইক রেট ১০৪। সবশেষ ১৮ ইনিংসে ফিফটির দেখা পাননি।
তার পরও বরিশালের হয়ে এবার দলের প্রথম ছয় ম্যাচের পাঁচটিতে খেলার সুযোগ পেয়েছিলেন। রংপুর রাইডার্সের বিপক্ষে এক ম্যাচে ৩০ বলে ৪১ রান করতে পারলেও বাকি চার ইনিংস মিলিয়ে তার রান ১৫।
তামিম অবশ্য বললেন, পারফরম্যান্সের ঘাটতির কারণে শান্ত বাদ পড়েননি।
“সে পারফরম্যান্সের কারণে বাইরে বসে নেই, এটা নিশ্চিত। কারণ রংপুরের বিপক্ষে খুব ভালো একটি ইনিংস খেলেছে। স্রেফ কম্বিনেশনের কারণে ওকে জায়গা দিতে পারছি না… ওকে কোন জায়গায় ব্যাটিং করাব…।”
বরিশালের হয়ে এখন ইনিংস শুরু করছেন তামিম ও তাওহিদ হৃদয়। তিনে খেলছেন দাভিদ মালান। ডান-বাঁহাতি সমন্বয়ের কথাও তুলে ধরলেন বরিশাল অধিনায়ক।
““ডানহাতি-বাঁহাতি ব্যাপারটিও একটি ইস্যু হয়ে দাঁড়ায়। চাই না যে টানা তিনজন বাঁহাতি একের পর এক আসুক (ক্রিজে)…। অনেক কিছুই কারণ আছে, সব কিছুর উত্তর দেওয়া জরুরি নয় এখানে।”
তবে টানা একাদশের বাইরে থাকলেও শান্ত ব্যাপারটি যেভাবে ক্রীড়াসুলভ মানসিকতায় নিয়েছেন, তাতে মুগ্ধ তামিম।
“আমাকে অবশ্যই বলতে হবে, দলের প্রতি ওর ‘অ্যাটিটিউড’ দারুণ। বাংলাদেশ দলের অধিনায়ক, দেশের সেরা ব্যাটসম্যানদের একজন, কিন্তু ঘরোয়া একটি টুর্নামেন্টে, ফ্র্যাঞ্চাইজি টুর্নামেন্টে খেলার সুযোগ পাচ্ছে না। কিন্তু দলের সিনিয়র-জুনিয়রদের প্রতি ওর মানসিকতা পুরোপুরি দুর্দান্ত এবং এটার দারুণ প্রশংসা করি আমি।”