টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ
নেদারল্যান্ডসের বিপক্ষে হারের শঙ্কা থেকে দক্ষিণ আফ্রিকা ঘুরে দাঁড়িয়ে জিতেছে ৪ উইকেটে।
Published : 09 Jun 2024, 12:07 AM
ছোট্ট লক্ষ্যে ১২ রানে নেই ৪ উইকেট! আরেকটি বৈশ্বিক আসরে নেদারল্যান্ডের বিপক্ষে হারের তীব্র শঙ্কা তখন উঁকি দিচ্ছে দক্ষিণ আফ্রিকা শিবিরে। খাদের কিনারে থেকে দলকে পথ দেখালেন ডেভিড মিলার। অভিজ্ঞ এই ব্যাটসম্যানের চমৎকার ফিফটিতে জয়ের আনন্দে মাঠ ছাড়ল প্রোটিয়ারা।
নিউ ইয়র্কে শনিবার টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের ‘ডি’ গ্রুপের ম্যাচটি ৪ উইকেটে জিতেছে দক্ষিণ আফ্রিকা। আসরে নিজেদের প্রথম দুই ম্যাচেই জয়ের স্বাদ পেল দলটি।
নাসাউ কাউন্টি স্টেডিয়ামের মন্থর উইকেট ও আউটফিল্ডে আগে ব্যাটিংয়ে নেমে প্রোটিয়া পেসারদের তোপে কোনোমতে ১০৩ রান করে ডাচরা। অসাধারণ বোলিংয়ে প্রতিপক্ষের জন্য এই রানই কঠিন করে তোলে তারা। তবে সব দুর্ভাবনা উড়িয়ে মিলারের ব্যাটে ৭ বল আগে জয়ের বন্দরে পৌঁছায় দক্ষিণ আফ্রিকা।
২০২২ সালের টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে দক্ষিণ আফ্রিকাকে হারিয়ে চমক দেখিয়েছিল নেদারল্যান্ডস। এরপর গত বছরের ওয়ানডে বিশ্বকাপেও ডাচদের বিপক্ষে হারের তেতো স্বাদ পায় প্রোটিয়ারা। এবার আর দলকে হতাশায় ডুবতে দিলেন না মিলার।
জয় সঙ্গে নিয়ে মাঠ ছাড়া বাঁহাতি এই ব্যাটসম্যান ৫১ বলে করেন ৫৯ রান। ৪ ছক্কা ও তিন চারের ইনিংসে ম্যাচ সেরার পুরস্কার জেতেন তিনিই। অবদান কম নয় কঠিন সময়ে কার্যকর ৩৩ রান করা ট্রিস্টান স্টাবসের।
প্রথম ইনিংসে বল হাতে আলো ছড়ান দক্ষিণ আফ্রিকার জার্সিতে তৃতীয় টি-টোয়েন্টি খেলতে নামা ওটনিয়েল বার্টমান। ৪ ওভারে স্রেফ ১১ রান দিয়ে ৪ উইকেট নেন এই পেসার। দুটি করে প্রাপ্তি মার্কো ইয়ানসেন ও আনরিখ নরকিয়ার।
টস জিতে ফিল্ডিংয়ে নেমে তিন পেসারের দারুণ বোলিংয়ে প্রতিপক্ষকে চেপে ধরে দক্ষিণ আফ্রিকা। নিয়মিত বিরতিতে তুলে নিতে থাকে উইকেট। ম্যাচের তৃতীয় বলে মাইকেল লেভিটকে কট বিহাইন্ড করে শুরুটা করেন ইয়ানসেন।
তিনি ও বার্টমান মিলে পরপর দুই ওভারে ধরেন আরও দুই শিকার। ৩ উইকেটে ২০ রান নিয়ে পাওয়ার প্লে শেষ করে ডাচরা।
বাস ডে লেডেকে দ্রুত বিদায় করা নরকিয়া ভেঙে দেন তেজা নিদারমানুরুর স্টাম্প। নেদারল্যান্ডস অধিনায়ক স্কট এডওয়ার্ডস কাটা পড়েন রান আউটে। ৪৮ রানে ৬ উইকেট হারানো দলটি একশ পার করে সাইব্রান্ড এঙ্গেলব্রেশট ও লোগান ফন বিকের ৫৪ রানের জুটিতে।
১ ছক্কা ও ২ চারে ৪৫ বলে ৪০ রান করেন এঙ্গেলব্রেশট। ২২ বলে ২৩ রান করতে ফন বিক মারেন তিনটি চার।
অল্প রানের লক্ষ্যে দক্ষিণ আফ্রিকার শুরুটা হয় দুঃস্বপ্নের মতো। ইনিংসের প্রথম বলে রান আউট হয়ে ডায়মন্ড ডাকের তেতো স্বাদ পান কুইন্টন ডি কক। পরের ওভারে ফন বিক বোল্ড করে দেন রিজা হেনড্রিকসকে। এইডেন মারক্রামকে রানের খাতা খুলতে দেননি ভিভিয়ান কিংমা। এই মিডিয়াম পেসারকে ছক্কার চেষ্টায় ক্যাচ দিয়ে ফেরেন হাইনরিখ ক্লসেন।
ব্যাটিং লাইনআপের প্রথম পাঁচজনের চারজনই ফেরার পর স্টাবসকে নিয়ে দলের হাল ধরেন মিলার। দুজনেই এগোতে থাকেন সাবধানী ব্যাটিংয়ে। কিন্তু কাজ শেষ করে ফিরতে পারেননি স্টাবস। ডে লেডের ফুলটস বলে তার বিদায়ে ভাঙে ৬৫ রানের জুটি। এরপর ইয়ানসেনকেও হারায় তারা।
শেষ দুই ওভারে প্রয়োজন ছিল ১৬ রান, তবে ৫ বলেই ম্যাচের ইতি টেনে দেন মিলার। ডে লেডেকে ছক্কায় ওভার শুরুর দুই বল পর চার মেরে পূরণ করে নিজের ফিফটি, ৫০ বলে। পরের বলে আরেকটি ছক্কায় জয় নিশ্চিত করে হুঙ্কার দেন মিলার।
দক্ষিণ আফ্রিকা ও নেদারল্যান্ডসের পরের ম্যাচ বাংলাদেশের বিপক্ষে। সোমবার নিউ ইয়র্কে সাকিব-লিটনদের মুখোমুখি হবে প্রোটিয়ারা। বৃহস্পতিবার কিংসটাউনে বাংলাদেশের বিপক্ষে লড়বে ডাচরা।
সংক্ষিপ্ত স্কোর:
নেদারল্যান্ডস: ২০ ওভারে ১০৩/৯ (লেভিট ০, ও’ডাওড ২, ভিক্রামজিত ১২, এঙ্গেলব্রেশট ৪০, ডে লেডে ৬, এডওয়ার্ডস ১০, নিদামানুরু ০, ফন বিক ২৩, প্রিঙ্গল ০, ফন মেকেরেন ১*; ইয়ানসেন ৪-০-২০-২, রাবাদা ৪-০-২৭-০, রাবাদা ৪-০-২৭-০, বার্টম্যান ৪-০-১১-৪, নরকিয়া ৪-০-১৯-২, মহারাজ ৪-০-২৪-০)
দক্ষিণ আফ্রিকা: ১৮.৫ ওভারে ১০৬/৬ (হেনড্রিকস ৩, ডি কক ০, মারক্রাম ০, স্টাবস ৩৩, ক্লসেন ৪, মিলার ৫৯*, ইয়ানসেন ৩, মহারাজ ০*; কিংমা ৪-১-১২-২, ফন বিক ৪-১-২১-২, ফন মেকেরেন ৪-১-১৩-০, ডে লেডে ৩.৫-০-৩৪-১, প্রিঙ্গল ২-০-১৪-০, ভিক্রামজিত ১-০-১১-০)
ফল: দক্ষিণ আফ্রিকা ৪ উইকেটে জয়ী
ম্যান অব দা ম্যাচ: ডেভিড মিলার