বাবরের সেঞ্চুরির পর লিডের আশায় ইংল্যান্ড

রাওয়ালপিন্ডি টেস্টে তৃতীয় দিনের শেষ সেশনে চার উইকেট নিয়ে বড় লিডের আশা জাগিয়েছে ইংলিশরা।

স্পোর্টস ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 3 Dec 2022, 03:38 PM
Updated : 3 Dec 2022, 03:38 PM

‘আমি স্কুল বাদ দিয়ে কিং বাবরকে দেখতে এসেছি’, লেখা প্লেকার্ড নিয়ে রাওয়ালপিন্ডি ক্রিকেট স্টেডিয়ামে এক কিশোরের ছবি ঘুরছে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে। তাকে হতাশ করেননি বাবর আজম। আরেকবার দেখিয়েছেন ব্যাটিং মাস্টারক্লাস। পাকিস্তান অধিনায়ক করেছেন দুর্দান্ত সেঞ্চুরি। তার আগে তিন অঙ্কের স্বাদ পেয়েছেন আবদুল্লাহ শফিক ও ইমাম-উল-হকও। রাওয়ালপিন্ডির মরা উইকেটে তৃতীয় সেশনে ৪ উইকেট নিয়ে অবশ্য বড় লিডের আশা জাগিয়েছে ইংল্যান্ড। 

সিরিজের প্রথম টেস্টে ব্যাটসম্যানদের দাপট দেখা গেছে যথারীতি তৃতীয় দিনেও। শনিবারের খেলা শেষে পাকিস্তানের সংগ্রহ ৭ উইকেটে ৪৯৯ রান। এখনও ১৫৮ রানে পিছিয়ে আছে তারা। 

ইংল্যান্ডের চার জনের পর পাকিস্তানের তিন জন- ম্যাচের প্রথম তিন দিনে সেঞ্চুরি হয়েছে সাতটি। একটি বিরল কীর্তিরও সাক্ষী হয়ে গেছে এই ম্যাচ। টেস্ট ইতিহাসে এই প্রথম কোনো ম্যাচের প্রথম দুই ইনিংসে চার ওপেনারই সেঞ্চুরি করলেন। 

ম্যাচের তিন কিংবা চার ইনিংস যদি ধরা হয়, সেক্ষেত্রে এমন কিছু দেখা গেছে আর মাত্র একবার। ১৯৪৮ সালে পোর্ট অব স্পেনে ইংল্যান্ডের প্রথম ইনিংসে সেঞ্চুরি করেন বিলি গ্রিফিথ, দ্বিতীয় ইনিংসে জ্যাক রবার্টসন। ওয়েস্ট ইন্ডিজের প্রথম ইনিংসে শতক করেন অ্যান্ডি গানটৌমি ও জর্জ ক্যারু। গানটৌমি টেস্ট খেলেছেন ওই একটিই। 

পাকিস্তান তৃতীয় দিন শুরু করে বিনা উইকেটে ১৮১ রান নিয়ে। প্রথম দিন সেঞ্চুরি থেকে ইমাম ১০ ও শফিক ১১ রান দূরে ছিলেন। 

কাঙ্ক্ষিত ঠিকানায় আগে পৌঁছেন শফিক। আট টেস্টে তার সেঞ্চুরি হয়ে গেল তিনটি। ইমামকেও বেশিক্ষণ অপেক্ষায় থাকতে হয়নি। জো রুটকে চার মেরে ১৮০ বলে তিন অঙ্ক স্পর্শ করেন বাঁহাতি ব্যাটসম্যান। 

ইমামেরও এটি তৃতীয় টেস্ট সেঞ্চুরি। সবগুলিই এই মাঠে, টানা তিন ইনিংসে! গত মার্চে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে করেছিলেন জোড়া সেঞ্চুরি। 

অফ স্পিনে শফিককে ফিরিয়ে ২২৫ রানের উদ্বোধনী জুটি ভাঙেন অভিষিক্ত উইল জ্যাকস। স্বাভাবিকভাবে তার প্রথম উইকেট এটি।  

কাট করতে গিয়ে কিপারের গ্লাভসে ধরা পড়া শফিক ২০৩ বলে ১৩ চার ও ৩ ছক্কায় করেন ১১৪ রান। 

ইমামও এরপর বেশিদূর যেতে পারেননি। বাঁহাতি স্পিনার জ্যাক লিচের বলে তিনি ক্যাচ দেন লং-অনে। ২০৭ বলে ১৫ চার ও ২ ছক্কায় গড়া তার ১২১ রানের ইনিংস। 

একবার জীবন পেয়ে সুযোগ কাজে লাগাতে পারেননি সাবেক অধিনায়ক আজহার আলি (২৭)। দ্বিতীয় নতুন বল হাতে নিয়ে প্রথম ওভারেই তাকে এলবিডব্লিউ করে দেন লিচ। 

এরপর সৌদ শাকিলকে সঙ্গে নিয়ে দলকে এগিয়ে নেন বাবর। দ্বিতীয় সেশন নির্বিঘ্নে কাটিয়ে দেন দুজন। দারুণ সব শটের পসরা মেলে ৬৮ বলে পঞ্চাশ ছুঁয়ে বাবর অষ্টম সেঞ্চুরিতে পা রাখেন ১২৬ বলে। 

চা-বিরতির পর প্রথম ওভারে শাকিলকে (৯৪ বলে ৩৭) ফিরিয়ে ১২৩ রানে জুটি ভাঙেন অলি রবিনসন। 

উইকেটে গিয়ে আগ্রাসী ব্যাটিং শুরু করেন মোহাম্মদ রিজওয়ান। জ্যাকসের এক ওভারে মারেন চারটি চার। জ্যাকস পরে থামান বাবরকে। পাকিস্তান অধিনায়ক ক্যাচ দেন পয়েন্টে। ১৬৮ বলে ১৯ চার ও এক ছক্কায় তিনি করেন ১৩৬ রান। 

পরের ওভারেই জেমস অ্যান্ডারসনের বলে শর্ট মিড উইকেটে ক্যাচ দেন রিজওয়ান (৪৪ বলে ২৯)। টেস্ট ক্যারিয়ারের ৬৬৮ নম্বর উইকেটের দেখা পেয়ে গেলেন টেস্ট ইতিহাসের সফলতম পেসার। ১৭৬ টেস্টের ক্যারিয়ারে পাকিস্তানের মাটিতে ৪০ বছর বয়সী বোলারের প্রথম টেস্ট ও প্রথম উইকেট এটি! 

দিনের শেষ দিকে নাসিম শাহকে ফিরিয়ে দেন লিচ। তাতে ইংল্যান্ডের বড় লিডের সম্ভাবনাও উজ্জ্বল হয়। 

আগা সালমান ১০ ও জাহিদ মাহমুদ ১ রান নিয়ে চতুর্থ দিনের ব্যাটিং শুরু করবেন। 

সংক্ষিপ্ত স্কোর: 

ইংল্যান্ড ১ম ইনিংস: ৬৫৭ 

পাকিস্তান ১ম ইনিংস: ১৩৬ ওভারে ৪৯৯/৭ (আগের দিন ১৮১/০) (শফিক ১১৪, ইমাম ১২১, আজহার ২৭, বাবর ১৩৬, শাকিল ৩৭, রিজওয়ান ২৯, সালমান ১০*, নাসিম ১৫, জাহিদ ১*; অ্যান্ডারসন ২০-৪-৪৭-১, রবিনসন ১৮-২-৬৪-১, লিচ ৪২-৫-১৬০-২, জ্যাকস ৩৩-৫-১৩২-৩, রুট ১৬-৩-৫৪-০, স্টোকস ৭-০-৩৫-০)