‘কাউকে নিষিদ্ধ করলে এসব বন্ধ হবে’, গম্ভির-কোহলির দ্বন্দ্ব নিয়ে বললেন শেবাগ

ভারতের ব্যাটিং গ্রেট শেবাগের মতে, গম্ভির-কোহলির প্রকাশ্য বিবাদের মতো ঘটনাগুলি থামানো যাবে কড়া শাস্তি দিলে।

স্পোর্টস ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 4 May 2023, 06:31 AM
Updated : 4 May 2023, 06:31 AM

আইপিএলের ম্যাচ শেষে গৌতম গম্ভির ও বিরাট কোহলির প্রকাশ্য বিবাদের ঘটনা টিভিতে সরাসরি দেখেননি বিরেন্দর শেবাগ। তবে পরে এই ঘটনা দেখে তিনি অবাক ও বিরক্ত। ভারতের ব্যাটিং গ্রেটের মতে, বোর্ড কাউকে কড়া শাস্তি দিলেই কেবল এই ধরনের ঘটনা কমবে বা বন্ধ হবে। আরেক সাবেক ক্রিকেটার, কোচ ও ধারাভাষ্যকার রবি শাস্ত্রীর চাওয়া, গম্ভির ও কোহলি যেন দ্রুতই নিজেদের মধ্যে ঝামেলা মিটিয়ে ফেলেন। 

গত সোমবার আইপিএলে রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স বেঙ্গালোর ও লক্ষ্ণৌ সুপার জায়ান্টসের ম্যাচ শেষে গম্ভির ও কোহলির এই ঘটনা ঘটে। মাঠেই বেশ এক চোট লেগে যায় দুজনের। সতীর্থরা বারবার চেষ্টা করেও থামাতে পারছিলেন না তাদের। এক পর্যায়ে অবশ্য দুজনকে আলাদা করা সম্ভব হয়, তবে ততক্ষণে বেশ কদর্য রূপ নেয় লক্ষ্ণৌর মেন্টর ও বেঙ্গালোরের ব্যাটিং গ্রেটের এই বিবাদ। টিভি পর্দায় তার ফুটে ওঠে অনেকটাই। 

পরে পুরো ঘটনার ভিডিও ছড়িয়ে পড়ে সামাজিক মাধ্যমে। দুজনকেই ম্যাচ ফির শতভাগ জরিমানা করা হয়। ট্রল ও আলোচনা-সমালোচনার ঝড়ও বয়ে যায়। 

সেই ঝড় চলছে এখনও। ক্রিকেট ওয়েবসাইট ক্রিকবাজ-এ আলোচনায় শেবাগ বললেন, গম্ভির-কোহলিদের মনে রাখা উচিত যে তারা অসংখ্য মানুষের আদর্শ। 

“ম্যাচ শেষে আমি টিভি বন্ধ করে ফেলেছিলাম। কোনো ধারণাই ছিল না ম্যাচ শেষে কী হয়েছিল। পরদিন সকালে উঠে দেখি সামাজিক মাধ্যমে তুমুল হইচই চলছে এটা নিয়ে। যা হয়েছে, মোটেও ঠিক হয়নি। হেরে যাওয়ার পর তা মেনে নিয়ে চলে যাওয়া উচিত, জয়ী দল তো উদযাপন করবেই।” 

“তাদের কেন এমন কিছু করতে হবে এবং পরস্পরের দিকে কিছু বলতে হবে! আমি সবসময়ই একটা কথা বলি, এই লোকগুলি আমাদের দেশের আইকন। তারা কিছু বললে বা করলে, লাখ লাখ বাচ্চা তা অনুসরণ করে এবং তারা মনে করেন, ‘আমাদের আইকনরা এটা করেছে মানে আমিও করতে পারি।’ এই ব্যাপারগুলি তাই মাথায় রাখা উচিত, এই ধরনের আচরণ বন্ধ করা উচিত।” 

গম্ভির ও কোহলির এভাবে মাঠে লেগে গিয়েছিল ১০ বছর আগেও, যখন তারা দুজনই ছিলেন আইপিএল দলের অধিনায়ক। শুধু এই দুজনের নয়, মাঠে এই ধরনের ঘটনা দেখা যায় আরও। শেবাগের মতে, বোর্ডের এখানে শক্ত ভূমিকা রাখা উচিত। 

“বিসিসিআই যদি কাউকে নিষিদ্ধ করার সিদ্ধান্ত নেয়, তাহলে হয়তো এই ধরনের ঘটনা প্রায় ঘটবেই না বা একেবারে বন্ধ হয়ে যাবে। আগেও এরকম ঘটনা হয়েছে। এসব ব্যাপার ড্রেসিং রুমের ভেতরে নিয়ন্ত্রিত পরিবেশে হওয়াই ভালো। মাঠে এসব ভালো দেখায় না।” 

“আমার নিজের বাচ্চারাই তো ঠোঁট পড়ে বুঝতে পারে কী বলা হচ্ছে। এখানেই আমার খারাপ লাগে। এই ধরনের কথা বললে, আমার বাচ্চারা যদি বুঝতে পারে, আরও অনেক বাচ্চাও তা বুঝতে পারবে। এই বাচ্চারা ভাববে, ‘গম্ভির-কোহলিরা এসব বললে আমরাও বলতে পারব।’ খুব ভালো নিদর্শন নয় এসব।”

গম্ভির ও কোহলির শীতল সম্পর্কের কথা ভারতীয় ক্রিকেটে মোটামুটি প্রকাশ্যই। সেই মনোমালিন্যের অবসান চান রবি শাস্ত্রী। সাবেক এই অলরাউন্ডার, ভারতীয় দলের সাবেক কোচ ও জনপ্রিয় ধারাভাষ্যকার স্টার স্পোর্টসে বললেন, একসঙ্গে বসে দুজনের মিটমাট করে নেওয়া উচিত। 

“আমার মনে হয়, দুই-একদিনের মধ্যেই তারা বুঝতে পারবে। তারা উপলব্ধি করবে যে, এটা অনেক ভালোভাবে সামলানো যেত। তারা একই রাজ্য দলের হয়ে খেলেছে, দুজনই অনেক ক্রিকেট খেলেছে। গৌতম দুটি বিশ্বকাপজয়ী ক্রিকেটার, বিরাট দেশের একজন আইকন। দুজনই দিল্লির ক্রিকেটার। আমার মনে হয়, সবচেয়ে ভালো হয় দুজন একসঙ্গে বসে ব্যাপারটি খতম করে দেওয়া, আজীবনের জন্য।” 

“যে-ই আগে করুক না কেন, যত দ্রুত করা যায়, ততই ভালো। কারণ, এটার রেশ আরও ছড়িয়ে পড়া কারও কাম্য নয়। নইলে পরেরবার দুজনের দেখা হলে আবার কথার লড়াই হবে এবং এটা কেবল বাড়তেই থাকবে। দ্রুতই এটা শেষ করা উচিত।”