নিজেদের উন্নতি গোটা বিশ্বকে দেখাতে চান বাংলাদেশ অধিনায়ক

বিশ্বকাপ বাছাইয়ে উতরে যাওয়ার পর সামনে আর বাছাইপর্ব খেলতে চান না তারা।

ক্রীড়া প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 24 Sept 2022, 04:33 AM
Updated : 24 Sept 2022, 04:33 AM

একটির পর একটি জয়ে প্রত্যাশার পথ ধরে কাঙ্ক্ষিত ঠিকানায় বাংলাদেশ। নারী টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের বাছাইয়ের চ্যালেঞ্জ উতরে অনুমিতভাবেই আরও একটি বিশ্বকাপে জায়গা করে নিল দল। পথের সমাপ্তি অবশ্য এখানেই নয়। বিশ্বকাপে খেলা নিশ্চিত করার পর অধিনায়ক নিগার সুলতানার চাওয়া বাছাইয়ে চ্যাম্পিয়ন হওয়া। সামনের পথচলায় তিনি নিজেদের এগিয়ে চলার বার্তা ছড়িয়ে দিতে চান ক্রিকেট বিশ্বময়।

টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের বাছাইয়ে আবু ধাবিতে শুক্রবার থাইল্যান্ডকে ১১ রানে হারিয়ে ফাইনালে পা রাখে বাংলাদেশ। পাশাপাশি নিশ্চিত করে দক্ষিণ আফ্রিকায় অনুষ্ঠেয় আগামী নারী টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে খেলাও।

বাছাইয়ের গত তিন আসরে একবার রানার্স আপ ও দুইবার চ্যাম্পিয়ন হয়ে বিশ্বকাপের চূড়ান্ত পর্বে জায়গা করে নেয় বাংলাদেশ। এবারও তারাই ছিল ফেভারিট। প্রত্যাশিত সাফল্যের পর অধিনায়ক নিগারের কণ্ঠে ছিল স্বস্তি আর সামনে নিজেদের আরও মেলে ধরার তাড়না।

“আমরা এখানে এসেছিলাম টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে খেলা নিশ্চিত করতে এবং আমরা তা পেরেছি। এত বছর ধরে আমরা একসঙ্গে খেলছি, এখন সময় হয়েছে গোটা বিশ্বকে দেখিয়ে দেওয়ার যে আমরা কতটা ভালো, দল হিসেবে কতটা উন্নতি করেছি।”

থাইল্যান্ডের বিপক্ষে শুক্রবারের ম্যাচটিতে অবশ্য খানিকটা অস্বস্তি হানা দিয়েছিল। আবু ধাবির শেখ জায়েদ স্টেডিয়ামে ২০ ওভারে স্রেফ ১১৩ রান করতে পারে বাংলাদেশ। তবে দারুণ বোলিং ও ফিল্ডিংয়ে কোনো অঘটন ঘটতে দেয়নি তারা। থাই মেয়েরা শুরুর বিপর্যয় কাটিয়ে পরে ম্যাচ কিছুটা জমিয়ে তোলার ইঙ্গিত দেয়। তবে শেষ পর্যন্ত আর পারেনি তারা।

নিগার বললেন, ব্যাটিং এ দিন ভালো না হলেও জয়ের বিশ্বাস তাদের ছিল।

“পুরো টুর্নামেন্টে আমার মেয়েরা যেভাবে খেলেছে, অধিনায়ক হিসেবে আমি গর্ব অনুভব করি। আজকে যদিও একটু ক্লোজ ম্যাচ ছিল। তার পরও আমার বিশ্বাস ছিল সবার প্রতি। দলের সবারও বিশ্বাস ছিল যে আমরা ম্যাচটা বের করে আনতে পারব। মেয়েরা দারুণ বোলিং ও ফিল্ডিং করেছে।”

রোববার ফাইনালে বাংলাদেশের প্রতিপক্ষ আয়ারল্যান্ড। এবার প্রথম ম্যাচে তাদেরকে হারিয়ে আসর শুরু করেন নিগাররা। ফাইনালেও জয় ছাড়া অন্য কিছু ভাবছেন না অধিনায়ক।

“এখন অবশ্যই আমাদের নজর চ্যাম্পিয়নশিপের দিকে। আশা করি আমরা ফাইনালে আমাদের সেরাটা দিয়ে চ্যাম্পিয়ন হয়েই ফিরব।”

থাইল্যান্ডের বিপক্ষে এ দিন দারুণ বোলিংয়ে বাংলাদেশকে জয়ের পথে এগিয়ে নেন সানজিদা আক্তার মেঘলা। ৪ ওভারে স্রেফ ৭ রান দিয়ে ২ উইকেট নেন তিনি।

তিন বছরের আন্তর্জাতিক ক্যারিয়ারে এই আসরের আগে ম্যাচ খেলতে পেরেছিলেন তিনি স্রেফ ৪টি। এবার বাছাইয়ে খেললেন টানা ৪ ম্যাচ। ভালো বোলিং করেন প্রতি ম্যাচেই। ২১ বছর বয়সী স্পিনার উচ্ছ্বসিত নিজের ও দলের সাফল্যে।

“আমার জন্য এটা অনেক বড় অর্জন। কারণ প্রথমবার এত বড় ইভেন্টে খেলেছি দলের সঙ্গে। দলের সিনিয়ররা, সবাই আমাকে সাপোর্ট দিয়েছেন, সাহস দিয়েছেন। কোচ ও স্টাফরা সবসময় ইতিবাচক আবহ দিয়েছেন। আমাদের জন্য দোয়া করবেন।”

নারী দলের নির্বাচক মঞ্জুরুল ইসলাম এবার দলের সঙ্গে গেছেন ম্যানেজার হিসেবে। দলের লক্ষ্য পূরণ হওয়া তিনি খুশি। তবে সাবেক এই জাতীয় পেসার সামনে আর বাছাই খেলার ঝামেলায় যেতে চান না।

“বিশ্বকাপে কোয়ালিফাই করতে পেরে আমরা আনন্দিত। আনন্দের চেয়ে বড় যে বিষয়টা, দলের এটা প্রাপ্য ছিল। কোচিং স্টাফরা সবাই দারুণ সাপোর্ট করেছেন। তবে আমি চাইব সামনে যেন  এভাবে কোয়ালিফাই খেলে বিশ্বকাপে যেতে না হয়। দলের ক্রিকেটাররাও এই ভাবনায় একমত। বিশ্বকাপ খেলার সুযোগ আমাদের প্রাপ্য।”

দলের সিনিয়র ক্রিকেটার ও সবগুলি বিশ্বকাপে খেলা অলরাউন্ডার সালমা খাতুনের কণ্ঠেও প্রত্যয় ভবিষ্যতে বাছাইপর্ব এড়ানোর।

“আনন্দ লাগছে বিশ্বকাপে কোয়ালিফাই করতে পেরে। তবে বারবার এই বাছাই আমরা খেলতে চাই না। পরেরবার যেন এত কষ্ট করে, এসব ম্যাচ খেলে যেতে না হয়, ওই চেষ্টাই করব।”

আরেক সিনিয়র ক্রিকেটার রুমানা আহমেদ এখনই তাকাচ্ছেন বিশ্বকাপে। আগামী ফেব্রুয়ারিতে দক্ষিণ আফ্রিকায় হবে ১০ দলের এই আসর। আরেকটি বিশ্বকাপে খেলতে যেন তর সইছে না এই অলরাউন্ডারের।

“খুব ভালোভাবে আমরা বাছাইয়ের কাজটা করলাম। ইনশাল্লাহ, আপনাদের সঙ্গে দেখা হচ্ছে পরের বিশ্বকাপে, দক্ষিণ আফ্রিকা…।”