জাতীয় ক্রিকেট লিগ
জাতীয় ক্রিকেট লিগের প্রথম রাউন্ডে জয় পেয়েছে রংপুর ও ঢাকা মেট্রো।
Published : 22 Oct 2024, 08:02 PM
চার দিনের ম্যাচে দেড় দিনের বেশি সময় ভেসে গেল বৃষ্টিতে। তবু জিততে কোনো সমস্যা হলো না রংপুরের। চট্টগ্রামকে দুইবার অলআউট করে ইনিংস ব্যবধানে জিতে শিরোপা পুনরুদ্ধারের অভিযান শুরু করল তারা।
জাতীয় ক্রিকেট লিগের প্রথম রাউন্ডে জয় পেয়েছে ঢাকা মেট্রোও। এছাড়া ড্র হয়েছে রাজশাহী-খুলনা ও ঢাকা-সিলেট ম্যাচ।
রংপুরের দাপুটে জয়
বগুড়ার শহীদ চান্দু স্টেডিয়ামে চট্টগ্রামকে ইনিংস ও ৮১ রানে হারিয়েছে রংপুর। ফলো-অনে পড়ে দ্বিতীয় ইনিংসে মাত্র ৮৯ রানে গুটিয়ে গেছে ইয়াসির আলি, শাহাদাত হোসেনদের দল।
বৃষ্টিবিঘ্নিত ম্যাচের প্রথম ইনিংসে ৯ উইকেটে ২৭৩ রান করে ইনিংস ঘোষণা দেয় রংপুর। পরে ১০৩ রানে অলআউট হয় চট্টগ্রাম। ১৭০ রানে এগিয়ে থাকায় তাদের আবার ব্যাটিংয়ে নামায় রংপুর।
দুই ইনিংসে গুরুত্বপূর্ণ সময়ে ২টি করে উইকেট নিয়ে ম্যাচ সেরার পুরস্কার জিতেছেন অভিষিক্ত চৌধুরি মোহাম্মদ রিজওয়ান।
ম্যাচ বাঁচানোর লড়াইয়ে শেষ দিন আরও একবার হতাশ করেন চট্টগ্রামের ব্যাটসম্যানরা। মাত্র ৩২.১ ওভারে গুঁড়িয়ে যায় তাদের ইনিংস।
৪৭ রানে ৮ উইকেট হারানোর পর দলের সর্বোচ্চ ২৬ রান করেন ইয়াসিন আরাফাত। এছাড়া দুই অঙ্ক ছুঁতে পারেন আর কেবল তিন জন।
রংপুরের পক্ষে সর্বোচ্চ ৩ উইকেট নেন অধিনায়ক আব্দুল্লাহ আল মামুন। রিজওয়ান, রিশাদ হোসেন ও মুকিদুল ইসলামের শিকার ২টি করে উইকেট।
সংক্ষিপ্ত স্কোর
রংপুর ১ম ইনিংস: ২৭৩/৯ (ডি.)
চট্টগ্রাম ১ম ইনিংস: ১০৩
চট্টগ্রাম ২য় ইনিংস: (ফলো-অন) ৩২.১ ওভারে ৮৯ (সাদিকু ০, সাব্বির ২, সাদ্দাম ১৬, শাহাদাত ১১, ইয়াসির ৪, ইরফান ০, ইফতেখার ৮, আশরাফুল ০, ইফরান ১৫, ইয়াসিন ২৬, ফাহাদ ২*; মুকিদুল ৯-৩-২১-২, শরিফুল ৪-০-১১-১, রিজওয়ান ৮-২-১৯-২, মামুন ৮-৪-১০-৩, রিশাদ ৩.১-০-২৩-২)
ফল: রংপুর ইনিংস ও ৮১ রানে জয়ী
ম্যান অব দা ম্যাচ: চৌধুরি মোহাম্মদ রিজওয়ান
বরিশালকে হারাল ঢাকা মেট্রো
সিলেট আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়ামের দুই নম্বর মাঠে বরিশালকে ৮ উইকেটে হারিয়েছে ঢাকা মেট্রো। ম্যাচের শেষ দিনের শেষ ভাগে ৬৩ রানের লক্ষ্য ১৫.৪ ওভারে ছুঁয়ে ফেলেছে মার্শাল আইয়ুবের নেতৃত্বাধীন দল।
ফলো-অনে পড়ে দ্বিতীয় ইনিংসে ২৫১ রানে গুটিয়ে যায় বরিশাল। এর আগে মেট্রোর ৪০৮ রানের জবাবে তারা করে ২১৯ রান।
প্রথম ইনিংসে ৫ উইকেটের পর দ্বিতীয়বার ৩ উইকেট নিয়ে অভিষেকে ম্যাচ সেরার পুরস্কার জিতেছেন ঢাকার অফ স্পিনার আশরাফুল ইসলাম।
কোনো উইকেট না হারিয়ে ৩২ রান নিয়ে শেষ দিনের খেলা শুরু করে বরিশাল। প্রথম তিন ব্যাটসম্যানের সবাই ২০ ছুঁলেও কেউই ইনিংস বড় করতে পারেননি।
তিন নম্বরে নেমে ১০৭ বলে ৬২ রানের ইনিংস খেলেন তাসামুল হক। এছাড়া মইন খান ৪২ ও সোহাগ গাজী ৩৬ রান করলে কোনোমতে আড়াইশ পার করে বরিশাল।
ছোট লক্ষ্যে আনিসুল ইসলাম ও আইচ মোল্লার উইকেট হারালেও ম্যাচ জিততে কোনো সমস্যা হয়নি মেট্রোর।
সংক্ষিপ্ত স্কোর
ঢাকা মেট্রো ১ম ইনিংস: ৪০৮/৫ (ডি.)
বরিশাল ১ম ইনিংস: ২১৯
বরিশাল ২য় ইনিংস: (ফলো-অন) ৮৭.১ ওভারে ২৫১ (আগের দিন ৩২/০) (মজিদ ২৮, ইফতেখার ২৩, ফজলে মাহমুদ ৩৫, তাসামুল ৬২, জসিম ০, মইন ৪২, সোহাগ ৩৬, তানভির ১২*, রুয়েল ০, মহিউদ্দিন ১; শহিদুল ১৬-৪-৪৭-৩, আরিফ ২৪-৭-৫১-১, আনিসুল ৯-১-২৯-০, আল আমিন ১০-২-১৯-১, আশরাফুল ১৯.১-৩-৫৯-৩, শামসুর ১-১-০-০, আমিনুল ৮-০-৪৪-২)
ঢাকা মেট্রো ২য় ইনিংস: (লক্ষ্য ৬৩) ১৫.৪ ওভারে ৬৩/২ (ইমরানুজ্জামান ১১ আহত অবসর, আনিসুল ৮, আইচ ৪, মার্শাল ১৪*, শামসুর ১৫*; রুয়েল ৮-০-২৩-১, তানভির ৬-১-১৩-১, মহিউদ্দিন ১-০-১২-০, ফজলে মাহমুদ ০.৪-০-৪-০)
ফল: ঢাকা মেট্রো ৮ উইকেটে জয়ী
ম্যান অব দা ম্যাচ: আশরাফুল ইসলাম
জিয়াউর-পারভেজের দৃঢ়তায় হার এড়াল খুলনা
সিলেট আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়ামে শেষ দিনে রাজশাহীকে রুখে দিয়েছে খুলনা। ৫১৬ রানের বিশাল লক্ষ্যে তারা ৭ উইকেটে ৩১১ রান করার পর ড্র হয় ম্যাচ।
দিনের খেলার ২৫ ওভার বাকি থাকতে সপ্তম উইকেট হারায় খুলনা। এরপর প্রতিপক্ষকে আর সুযোগ দেননি জিয়াউর রহমান ও শেখ পারভেজ রহমান। দুজনের ১৫০ বলে ২২ রানের জুটিতে পরাজয় এড়ায় খুলনা।
দ্বিতীয় ইনিংসে ক্যারিয়ার সেরা ১৫০ রান করে ম্যান অব দা ম্যাচ হয়েছেন রাজশাহীর সাব্বির হোসেন।
কোনো উইকেট না হারিয়ে ১২০ রানে শেষ দিন শুরু করে খুলনা। দিনের শুরুতেই ফিরে যান সৌম্য সরকার। ১০ চার ও ২ ছক্কায় ৮৯ রান করেন বাঁহাতি ওপেনার। তিন নম্বরে নেমে এনামুল হক বেশিক্ষণ টিকতে পারেননি।
এরপর মোহাম্মদ মিঠুনকে নিয়ে কিছুটা এগিয়ে যান আরেক ওপেনার অমিত মজুমদার। ত্রিশ ছুঁয়ে ফেরেন মিঠুন। সৌম্যর মতো আশি পেরিয়ে আউট হন অমিত। ২৫৭ বলের ইনিংসে ৮ চার ও ১ ছক্কায় ৮৭ রান করেন অভিজ্ঞ ওপেনার।
নুরুল হাসান সোহান, নাহিদুল ইসলাম, শেখ মেহেদি হাসানরা হতাশ করলে পরাজয়ের শঙ্কায় পড়ে যায় খুলনা। তবে জিয়াউর ও পারভেজের অবিচ্ছিন্ন জুটিতে ড্র নিয়ে মাঠ ছাড়ে তারা। জিয়াউর ৯৮ বলে ২৩ ও পারভেজ ৭৫ বলে করেন ৯ রান।
সংক্ষিপ্ত স্কোর
রাজশাহী ১ম ইনিংস: ৪২৬
খুলনা ১ম ইনিংস: ১৯৪
রাজশাহী ২য় ইনিংস: ২৮৩/৬ (ডি.)
খুলনা ২য় ইনিংস: (লক্ষ্য ৫১৬) ১২৩ ওভারে ৩১১/৭ (আগের দিন ১২০/০) (অমিত ৮৭, সৌম্য ৮৯, এনামুল ২০, মিথুন ৩০, সোহান ১৬, নাহিদুল ১৭, জিয়াউর ২৩*, মেহেদি ৪, পারভেজ ৪*; শফিকুল ১৪-৩-৩৪-১, মোহর ২৩-৫-৬৫-২, মেহেরব ২৭-৯-৫২-০, আসাদুজ্জামান ১৮-১-৬৪-০, সাব্বির ১৩-৫-১৭-১, সানজামুল ২৮-৯-৬৬-৩)
ফল: ম্যাচ ড্র
ম্যান অব দা ম্যাচ: সাব্বির হোসেন
অমীমাংসিত ঢাকা-সিলেট লড়াই
খুলনার শেখ আবু নাসের স্টেডিয়ামে ঢাকা-সিলেট ম্যাচেও ফল আসেনি। বৃষ্টিবিঘ্নিত ম্যাচে এক দিনের বেশি সময় খেলাই হয়নি।
ম্যাচের শেষ দিন সিলেট দ্বিতীয় ইনিংসে ৮ উইকেটে ২৫৭ রান করার পর ড্র মেনে নেয় দুই দল।
এর আগে প্রথম ইনিংসে ১৪৬ রানে গুটিয়ে যায় সিলেট। পরে ২২৪ রান করে ৭৮ রানের লিড পায় ঢাকা। তবে দ্বিতীয় ইনিংসে সেটি তেমন কাজে লাগাতে পারেনি তারা।
শেষ দিন ৫৭ রানে ভাঙে সিলেটের উদ্বোধনী জুটি। এরপর মাইশুকুর রহমান ফেরেন দ্রুতই। চার নম্বরে নামা অমিত হাসানের সঙ্গে ৬৮ রানের জুটি গড়ে তোলেন পিনাক ঘোষ। ৩ চার ও ১ ছক্কায় ৬২ রান করে ফেরেন বাঁহাতি ওপেনার।
তৃতীয় উইকেট জুটিতে আসাদুল্লা আল গালিবকে নিয়ে ৭৮ রান যোগ করেন অধিনায়ক অমিত। তার ব্যাট থেকে আসে ৬১ রান। পরে আসাদুল্লা ফিফটি পূর্ণ করার পরপরই ড্র মেনে নেয় দুই দল।
সংক্ষিপ্ত স্কোর
সিলেট ১ম ইনিংস: ১৪৬
ঢাকা ১ম ইনিংস: ২২৪
সিলেট ২য় ইনিংস: ১০৬.২ ওভারে ২৫৭/৮ (আগের দিন ৫২/০) (পিনাক ৬২, তৌফিক ৩৪, মাইশুকুর ০, অমিত ৬১, আসাদুল্লা ৫০*, নাসুম ০, রাহাতুল ১২, তানজিম ১, তাওহিদ ০, আবু জায়েদ ৮*; সুমন ১৪-০-৩৬-০, সালাউদ্দিন ১৪-৪-৩৭-২, এনামুল ৯-২-২৪-০, নাজমুল ৩৮.২-৮-৮৮-৪, তাইবুর ২৬-৭-৩৯-২, আরিফুল ৪-২-৮-০, রুবেল ১-০-৫-০)
ফল: ম্যাচ ড্র
ম্যান অব দা ম্যাচ: নাজমুল ইসলাম