আচমকা অবসরে অস্ট্রেলিয়ার বিশ্বকাপজয়ী অধিনায়ক

৩১ বছর বয়সে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটকে বিদায় জানালেন মেগ ল্যানিং।

স্পোর্টস ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 9 Nov 2023, 06:31 AM
Updated : 9 Nov 2023, 06:31 AM

স্বাস্থ্যগত সমস্যায় পরপর তিন সিরিজ বাইরে থাকার পর হুট করে জাতীয় দল থেকে অবসর নিয়েছেন মেগ ল্যানিং। কঠিন সিদ্ধান্ত হলেও এটিই সঠিক সময় বলে মনে করছেন অস্ট্রেলিয়ার ৩১ বছর বয়সী তারকা ব্যাটার। 

বৃহস্পতিবার এক বিবৃতিতে আন্তর্জাতিক ক্রিকেট থেকে বিদায়ের ঘোষণা দিয়েছেন ল্যানিং। তবে বিগ ব্যাশসহ ঘরোয়া ক্রিকেটে নিয়মিতই খেলবেন অস্ট্রেলিয়া নারী দলকে ৪টি টি-টোয়েন্টি ও ১টি ওয়ানডে বিশ্বকাপ জেতানো অধিনায়ক। 

দক্ষিণ আফ্রিকায় গত ফেব্রুয়ারিতে হওয়া টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের শিরোপা জেতার পর আর জাতীয় দলের হয়ে খেলা হয়নি ল্যানিংয়ের। জুন মাসে অপ্রকাশিত স্বাস্থ্য সমস্যায় ইংল্যান্ড সফরে যাননি তিনি। 

পরে ফিট থেকেও গত মাসে ঘরের মাঠে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে ওয়ানডে ও টি-টোয়েন্টি সিরিজ খেলেননি ল্যানিং। একই সময়ে চলা উইমেন'স ন্যাশনাল ক্রিকেট লিগ দিয়ে মাঠে ফেরেন তিনি। 

অবশ্য গত ১৮ মাস ধরেই জাতীয় দলে অনিয়মিত অস্ট্রেলিয়ার সফল এই অধিনায়ক। গত বছর কমনওয়েলথ গেমসের স্বর্ণপদক জেতার পর ক্রিকেট থেকে বিরতি নিয়ে মেলবোর্নে একটি কফিশপে কাজ করেন তিনি। 

গত বছরের ডিসেম্বরে দলের সঙ্গে ভারত সফরেও যাননি তিনি। পরে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের আগে পুনরায় যোগ দেন দলে এবং তার নেতৃত্বেই চ্যাম্পিয়ন হয় অস্ট্রেলিয়া। ওই টুর্নামেন্টের পর থেকে বিভিন্ন ব্যক্তিগত কারণে আবারও জাতীয় দলের বাইরে ল্যানিং। 

সব কিছু বিবেচনায় তাই তার কাছে এখনই বিদায়ের উপযুক্ত সময় মনে হয়েছে।

“আন্তর্জাতিক ক্রিকেট থেকে সরে দাঁড়ানোর সিদ্ধান্ত নেওয়া খুব কঠিন ছিল। তবে আমার মনে হয়, এটিই সঠিক সময়। প্রায় ১৩ বছর আন্তর্জাতিক ক্যারিয়ার উপভোগ করতে পেরে আমি ভাগ্যবান। তবে আমি জানি, নতুন কিছুর জন্য এগিয়ে যাওয়ার এখনই সঠিক সময়।”

“দলীয় সাফল্যের জন্য মূলত এই খেলাটি খেলা। আমি যা কিছু অর্জন করতে পেরেছি, তা নিয়ে গর্বিত এবং সতীর্থদের সঙ্গে কাটানো মুহূর্তগুলো সবসময় আমার হৃদয়ে বড় জায়গাজুড়ে থাকবে।”

২০১০ সালে টি-টোয়েন্টি সংস্করণ দিয়ে আন্তর্জাতিক অভিষেক ল্যানিংয়ের। পরের বছর পার্থে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে স্রেফ ১৮ বছর ২৮৮ দিন বয়সে সেঞ্চুরি করে গড়েন দেশের হয়ে সবচেয়ে কম বয়সে তিন অঙ্ক ছোঁয়ার রেকর্ড।

সিডনিতে ২০১২ সালে নিউ জিল্যান্ডের বিপক্ষে ৪৫ বলে ১০০ রান করার পথে দেশের দ্রুততম সেঞ্চুরির রেকর্ডও নিজের করে নেন ল্যানিং। 

অস্ট্রেলিয়ার হয়ে ২৪১টি ম্যাচ খেলেছেন ল্যানিং। অধিনায়কত্ব করেছেন ১৮২ ম্যাচে। তার নেতৃত্বে ২০১৪, ২০১৮, ২০২০ ও ২০২৩ সালের টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ জেতে অস্ট্রেলিয়া। গত বছর ওয়ানডে বিশ্বকাপেও দলকে চ্যাম্পিয়ন করান তিনি। একইবছর কমনওয়েলথ গেমসের সাফল্যেও অধিনায়ক ছিলেন ল্যানিং। 

ল্যানিংয়ের ব্যক্তিগত ক্যারিয়ারও দুর্দান্ত। ১০৩ ওয়ানডেতে ৫৩.৫১ গড়ে তার সংগ্রহ ৪ হাজার ৬০২ রান। ২১টি ফিফটির সঙ্গে সেঞ্চুরি ১৫টি। এই সংস্করণে তার চেয়ে বেশি সেঞ্চুরি নেই আর কোনো ব্যাটারের। অন্তত ৪ হাজার রান করা ১১ জন ব্যাটারের মধ্যে তার গড়ই সর্বোচ্চ। 

টি-টোয়েন্টিতে ১৩২ ম্যাচের ১২১ ইনিংস ব্যাট করে ৩৬.৬১ গড়ে ল্যানিংয়ের নামের পাশে ৩ হাজার ৪০৫ রান। ১৫ ফিফটির পাশাপাশি দুইটি সেঞ্চুরি করেছেন তারকা ব্যাটার। এই সংস্করণে তার চেয়ে বেশি রান করেছেন শুধু নিউ জিল্যান্ডের সুজি বেটস। 

সাফল্যমন্ডিত ক্যারিয়ারে তার আক্ষেপের জায়গা হতে পারে কোনো টেস্ট সেঞ্চুরি না থাকা। প্রায় ১৩ বছরের ক্যারিয়ারে স্রেফ ছয়টি টেস্ট খেলেছেন ল্যানিং। গত বছর ইংল্যান্ডের বিপক্ষে করেছেন সর্বোচ্চ ৯৩ রান।