করোনাভাইরাস: ঈদে পরীক্ষা কমায় ১৩ মাসের সর্বনিম্ন শনাক্ত

ঈদের ছুটিতে নমুনা পরীক্ষা এক চতুর্থাংশে নেমে আসায় এক দিনে শনাক্ত কোভিড রোগীর সংখ্যা এক ধাক্কায় নেমে এসেছে এক বছরের সর্বনিম্ন পর্যায়ে।

নিজস্ব প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 15 May 2021, 10:25 AM
Updated : 15 May 2021, 12:24 PM

স্বাস্থ্য অধিদপ্তর জানিয়েছে, শনিবার সকাল পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টায় সারা দেশে ৩ হাজার ৭৫৮টি নমুনা পরীক্ষা করে ২৬১ জনের দেহে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ ধরা পড়েছে। এই সময়ে মৃত্যু হয়েছে আরও ২২ জনের।

গত এক দিনে নতুন আক্রান্তদের নিয়ে দেশে এ পর্যন্ত শনাক্ত রোগীর সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৭ লাখ ৭৯ হাজার ৭৯৬ জনে। আর আক্রান্তদের মধ্যে এ পর্যন্ত মোট ১২ হাজার ১২৪ জনের প্রাণ কেড়ে নিয়েছে এ ভাইরাস।

এর আগে এক দিনে এর চেয়ে কম রোগী শনাক্তের খবর এসেছিল গতবছরের ১৪ এপ্রিল। সেদিন ২০৯ জনের দেহে সংক্রমণ ধরা পড়ার কথা জানিয়েছিল স্বাস্থ্য অধিদপ্তর।

আর সর্বশেষ ২৩ মার্চ এর চেয়ে কম মৃত্যুর খবর এসেছিল; সেদিন মোট ১৮ মারা যাওয়ার কথা জানানো হয়েছিল সরকারের তরফ থেকে।

এর আগে চলতি বছরের শুরুতে সংক্রমণের হার যখন কমে এসেছিল, সে সময় ১৩ ফেব্রুয়ারি ২৯১ জন নতুন রোগী শনাক্তের খবর এসেছিল। কিন্তু এর নিচে আর নামেনি। মার্চ থেকে দেশে সংক্রমণ আবার দ্রুত বাড়তে শুরু করে এবং রেকর্ড উচ্চতায় পৌঁছায়।

গতবছর দুই ঈদের দিনও নমুনা পরীক্ষা তার আগের কয়েক দিনের তুলনায় অনেক কমে গিয়েছিল। আর তাতে ঈদের পরের দিন শনাক্ত রোগীর সংখ্যা কমে গিয়েছিল অনেকটা। তবে তখনও এতটা কমেনি, এবার রোজার ঈদের পরদিন যেটা দেখা গেল।  

স্বাস্থ্য অধিদপ্তর জানিয়েছে, গত ২৪ ঘণ্টায় সারা দেশে ৪৫৯টি ল্যাবে ৩ হাজার ৭৫৮টি নমুনা পরীক্ষা করা হয়েছে। আগের দিন এ সংখ্যা ছিল ৭ হাজার ৮৩৫টি। এর আগের দিন বৃহস্পতিবার নমুনা পরীক্ষা করা হয় ১৩ হাজার ৪৭১টি। অর্থাৎ, দুই দিনে পরীক্ষা কমে এক চতুর্থাংশে নেমে আসে শুক্রবার।

তারিখ

 

আগের ২৪ ঘণ্টায় নমুনা পরীক্ষার সংখ্যা

শনাক্ত রোগীর সংখ্যা

২৬ মে, ২০২০

আগের দিন ছিল রোজার ঈদ

৫৪০৭

১১৬৬

২ অগাস্ট, ২০২১

আগের দিন ছিল কোরবানির ঈদ

৩৬৮৪

৮৮৬

১৫ মে, ২১

আগের দিন ছিল রোজার ঈদ

৩৭৫৮

২৬১

সরকারি হিসাবে দেশে করোনাভাইরাসে আক্রান্তদের মধ্যে একদিনে আরও ৯৬৪ জন সুস্থ হয়ে উঠেছেন; এ পর্যন্ত সুস্থ মোট হয়েছেন ৭ লাখ ২১ হাজার ৪৩৫ জন।

বাংলাদেশে করোনাভাইরাসের প্রথম সংক্রমণ ধরা পড়েছিল গতবছর ৮ মার্চ; তা সাড়ে সাত লাখ পেরিয়ে যায় গত ২৭ এপ্রিল। সংক্রমণের দ্বিতীয় ঢেউয়ের মধ্যে গত ৭ এপ্রিল রেকর্ড ৭ হাজার ৬২৬ জন নতুন রোগী শনাক্ত হয়।

প্রথম রোগী শনাক্তের ১০ দিন পর গত বছরের ১৮ মার্চ দেশে প্রথম মৃত্যুর তথ্য নিশ্চিত করে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর। এ বছর ১১ মে তা সাড়ে ১২ হাজার ছাড়িয়ে যায়। এর মধ্যে ১৯ এপ্রিল রেকর্ড ১১২ জনের মৃত্যুর খবর দেয় স্বাস্থ্য অধিদপ্তর।

বিশ্বে শনাক্ত কোভিড-১৯ রোগীর সংখ্যা ইতোমধ্যে ১৬ কোটি ১৯ লাখ ছাড়িয়েছে। মৃত্যু হয়েছে ৩৩ লাখ ৫৮ হাজারের বেশি মানুষের।

 

স্বাস্থ্য অধিদপ্তর জানিয়েছে, গত ২৪ ঘণ্টায় নমুনা পরীক্ষার বিপরীতে শনাক্তের হার কমে দাঁড়িয়েছে ৬ দশমিক ৯৫ শতাংশে। এ পর্যন্ত মোট শনাক্তের হার ১৩ দশমিক ৬৮ শতাংশ। শনাক্ত বিবেচনায় সুস্থতার হার ৯২ দশমিক ৫২ শতাংশ এবং মৃত্যুর হার ১ দশমিক ৫৫ শতাংশ।

এ পর্যন্ত পরীক্ষা হয়েছে ৫৭ লাখ ২ হাজার ২৮৬টি নমুনা। এর মধ্যে সরকারি ব্যবস্থাপনায় ৪১ লাখ ৭৯ হাজার ৪৪৯টি নমুনা এবং বেসরকারি ব্যবস্থাপনায় ১৫ লাখ ২২ হাজার ৮৩৭টি নমুনা পরীক্ষা হয়েছে।

গত এক দিনে যারা মারা গেছেন, তাদের ১৭ জন পুরুষ আর নারী ৫ জন। তাদের ১৮ জন সরকারি হাসপাতালে এবং ৪ জন বেসরকারি হাসপাতালে মারা যান।

তাদের মধ্যে ১২ জনের বয়স ছিল ৬০ বছরের বেশি, ৬ জনের বয়স ৫১ থেকে ৬০ বছরের মধ্যে এবং ৪ জনের বয়স ৪১ থেকে ৫০ বছরের মধ্যে ছিল।

মৃতদের মধ্যে ১৩ জন ঢাকা বিভাগের, ৮ জন চট্টগ্রাম বিভাগের এবং ১ জন খুলনা বিভাগের বাসিন্দা ছিলেন।

এ পর্যন্ত মৃত ১২ হাজার ১২৪ জনের মধ্যে ৮ হাজার ৭৭৯ জন পুরুষ এবং ৩ হাজার ৩৪৫ জন নারী।