২০১৯ সালে আবরার ফাহাদ হত্যাকাণ্ডের পর বুয়েটে ছাত্ররাজনীতি নিষিদ্ধ করা হয়।
Published : 20 Jul 2023, 12:56 PM
বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ে (বুয়েট) ছাত্র রাজনীতি নিষিদ্ধ থাকার বিষয়টি মনে করিয়ে দিয়ে ফের বিজ্ঞপ্তি দিয়েছে কর্তৃপক্ষ।
বুধবার বুয়েটের রেজিস্ট্রার অধ্যাপক মো. ফোরকান উদ্দিন স্বাক্ষরিত ওই বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, নিষেধাজ্ঞা না মেনে শিক্ষার্থীরা রাজনীতিতে জড়ালে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, “এ বিশ্ববিদ্যালয়ের সকল রাজনৈতিক সংগঠন এবং এর কার্যক্রম ইতোমধ্যে নিষিদ্ধ করা হইয়াছে। সুতরাং কোনো শিক্ষার্থী অনুমোদিত ক্লাব/সোসাইটি ব্যতীত কোনো রাজনৈতিক দলের বা এর অঙ্গসংগঠনের অথবা অন্য কোনো সংগঠনের সদস্য হইতে বা তার কার্যক্রমে অংশগ্রহণ করিতে পারিবে না।
“শিক্ষার্থীগণকে বিশ্ববিদ্যালয় অধ্যাদেশে বর্ণিত নিয়মসমূহ যথাযথভাবে পালন করিতে হইবে এবং ইহা অমান্য করিলে অধ্যাদেশে বর্ণিত বিধি মোতাবেক তাহাদের বিরুদ্ধে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হইবে।”
সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম বা অন্য কোন মাধ্যমে কোনো শিক্ষার্থীর সাংগঠনিক বা রাজনৈতিক পরিচয় ব্যবহার না করতেও নির্দেশ দিয়েছে বুয়েট কর্তৃপক্ষ।
গত ১৩ জুলাই ৩০১ সদস্য বিশিষ্ট কেন্দ্রীয় কমিটি ঘোষণা দেয় ছাত্রলীগ, সেখানে বুয়েটের দুই শিক্ষার্থীকে পদ দেওয়া হয়। তাদের মধ্যে হাসিন আজফার পান্থ তথ্য-প্রযুক্তি বিষয়ক সম্পাদক এবং ইমতিয়াজ হোসেন রাহিম রাব্বি সদস্য পদ পেয়েছেন।
হাসিন আজফার পান্থ বুয়েটের ইলেকট্রিক্যাল অ্যান্ড ইলেকট্রনিক্স ইঞ্জিনিয়ারিং (ইইই) বিভাগের ১৭ ব্যাচের শিক্ষার্থী, থাকেন বুয়েটের আহসান উল্লাহ হলে। আর ইমতিয়াজ হোসেন রাহিম রাব্বি সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের ২১ ব্যাচের শিক্ষার্থী, তিনি তিতুমীর হলে থাকেন।
এ নিয়ে নানা আলোচনা তৈরি হওয়ায় ছাত্রলীগ থেকে অব্যাহতি চেয়ে আবেদন করেছেন ইমতিয়াজ হোসেন রাহিম রাব্বি।
২০১৯ সালের ৬ অক্টোবর বুয়েটের শেরেবাংলা হলে তড়িৎ ও ইলেকট্রনিক প্রকৌশল বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্র আবরার ফাহাদকে পিটিয়ে হত্যা করে বুয়েট শাখা ছাত্রলীগের একদল নেতা-কর্মী। ওই ঘটনার পর শিক্ষার্থীদের ক্লাস-পরীক্ষা বর্জনের কারণে প্রায় তিন মাস অচল ছিল বুয়েট। পরে শিক্ষার্থীদের দাবির মুখে ক্যাম্পাসে সাংগঠনিক ছাত্ররাজনীতি নিষিদ্ধ করতে বাধ্য হয় বুয়েট কর্তৃপক্ষ।
২০১৯ সালের ১৬ নভেম্বর বুয়েটের রেজিস্ট্রার অধ্যাপক এসএম মাহবুবুর রহমান স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে বুয়েটে ছাত্ররাজনীতি নিষিদ্ধ করা হয়।
ওই বছর ২ ডিসেম্বর বুয়েটের ছাত্রকল্যাণ পরিদপ্তরের পরিচালক (ডিএসডব্লিউ) অধ্যাপক মিজানুর রহমান স্বাক্ষরিত এক আদেশে বলা হয়, প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে ( যে কোনো মিডিয়ার মাধ্যমে) কোনো রাজনৈতিক সম্পৃক্ততা; রাজনৈতিক পদ ধারণ করা বা রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড পরিচালনা করা (যার মধ্যে প্রচারণা, মিছিলে অংশগ্রহণ, সভা, গ্রাফিতি বা পোস্টার লাগানো ইত্যাদি অন্তর্ভুক্ত), বিশ্ববিদ্যালয়ের নাম যুক্ত করা; অন্যদের উপরোক্ত কার্যকলাপে অংশ নিতে বাধ্য করা, প্ররোচিত করা বা অনুপ্রাণিত করলে সতর্কতা, জরিমানা আরোপ, যেকোনো সময়ের জন্য বহিষ্কার কিংবা আজীবনের জন্য বহিষ্কার করা হবে।