গত ১৬ মার্চ গঠিত কমিটিকে যত দ্রুত প্রতিবেদন দিতে বলা হয়েছিল।
Published : 06 Apr 2024, 11:59 PM
জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের ছাত্রী ফাইরুজ সাদাফ অবন্তিকার আত্মহত্যার ঘটনার করা বিশ্ববিদ্যালয়ের তদন্ত কমিটি তিন সপ্তাহেও প্রতিবেদন দিতে পারেনি। কমিটির প্রধান বলছে, ঈদের ছুটি শেষেও আরো সময় লাগবে।
গত ১৬ মার্চ গঠিত ওই কমিটিকে প্রতিবেদন দিতে কোনো সময় বেঁধে দেওয়া না হলেও ‘দ্রুততম সময়ে’র কথা বলা হয়।
গত ১৫ মার্চ রাত ১০টার দিকে কুমিল্লার বাগিচাগাঁওয়ের বাসায় ফ্যানের সঙ্গে ওড়না পেঁচিয়ে ফাঁস নেন অবন্তিকা। মৃত্যুর আগে ফেইসবুক পোস্টে বিশ্ববিদ্যালয়ের সহকারী প্রক্টর দ্বীন ইসলাম ও আম্মান সিদ্দিকীকে জড়িয়ে দীর্ঘ পোস্ট লিখে যান।
শিক্ষার্থীদের ক্ষোভের মধ্যে অবন্তিকার মায়ের করা মামলায় গ্রেপ্তার হয়েছেন দ্বীন ও আম্মান। পুলিশের পাশাপাশি তদন্ত কমিটি করে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষও।
এর প্রধান করা হয় বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির সভাপতি জাকির হোসেনকে।
গত ২২ মার্চ কমিটির ৫ সদস্য অবন্তিকার বাসায় গিয়ে তার মা তাহমিনা শবনমের সঙ্গে প্রায় আড়াই ঘণ্টা বৈঠক করেন তারা। পরে তারা কুমিল্লা কেন্দ্রীয় কারাগারে গিয়ে প্রক্টর দ্বীন ইসলাম ও আম্মান সিদ্দিকীর সঙ্গেও কথা বলেন।
মামলার তদন্ত কর্মকর্তা কুমিল্লা কোতয়ালি মডেল থানার পরিদর্শক (তদন্ত) শিবেন বিশ্বাসের সঙ্গেও আলোচনা করেছেন তারা।
প্রতিবেদন নিতে এত সময় লাগছে কেন, এই প্রশ্নে অধ্যাপক জাকির হোসেন বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “আমাদের কাজ অনেক দূর এগিয়েছে। এরই মধ্যে আমরা তদন্ত কমিটি ৯ বার বৈঠক করেছি। ঈদের পর বিশ্ববিদ্যালয় চালু হলে যত দ্রুত সম্ভব আমরা তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেব।
“অবন্তিকার মোবাইলের কল লিস্ট, গ্যালারিতে থাকা স্ক্রিনশট, মেসেঞ্জার, হোয়াটসঅ্যাপ টেক্সট, ময়নাতদন্ত প্রতিবেদনসহ সকল সামাজিক মাধ্যমের কথোপকথনের বিষয়ে তথ্য চেয়ে পুলিশের কাছে চিঠি দেওয়া হয়েছে। পুলিশের কাছ থেকে তথ্য পেলে প্রতিবেদনটি জমা দিতে সুবিধা হবে।”
গত ২৫ মার্চ প্রথমে ওই চিঠি জেলা পুলিশ সুপারের কাছে ই-মেইলে পাঠানো হয়। কিন্তু সাড়া মেলেনি। সবশেষ বৃহস্পতিবার ডাক যোগে একই চিঠি পাঠানো হয়েছে বলেও জানান জাকির হোসেন।
কুমিল্লা কোতয়ালি মডেল থানার ওসি ফিরোজ হোসেন বলেন, “এমন কোনো চিঠি আমরা এখনও পাইনি। চিঠি পেলে জগন্নাথের তদন্ত দলকে প্রয়োজনীয় সহায়তা করা হবে।”
অবন্তিকার মায়ের করা মামলার তদন্ত কর্মকর্তা শিবেন বিশ্বাস বলেন, “অবন্তিকার মোবাইল ফোন আদালতের অনুমতিক্রমে ফরেনসিক ল্যাবে পাঠানো হবে। তবে ঈদের পর ছাড়া এসব প্রক্রিয়া সম্পন্ন করা সম্ভব হবে না। অবন্তিকার মোবাইল ফোন এ মামলার গুরুত্বপূর্ণ আলামত।”
আত্মহত্যার প্ররোচনার অভিযোগ এনে ১৬ মার্চ রাতে কুমিল্লা কোতয়ালি মডেল থানায় মামলা করেন অবন্তিকার মা। এতে দ্বীন ইসলাম ও আম্মান সিদ্দিকীকে আসামি করা হয়। তারা দুই জন বর্তমানে কুমিল্লা কেন্দ্রীয় কারাগারে বন্দি।