রঙ-তুলির আঁচড়ে জগন্নাথে অবন্তিকা-অংকনকে স্মরণ

“আমরা অঙ্কনের মাধ্যমে শিক্ষার্থীদের জানাতে চাই- তাদের ভয় পাওয়ার কোনো কারণ নেই, আমরা তাদের সাথে আছি,” বলেন এক চিত্রশিল্পী।

জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিনিধিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 21 March 2024, 02:51 PM
Updated : 21 March 2024, 02:51 PM

জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের শিক্ষার্থী ফাইরুজ সাদাফ অবন্তিকা ও ইংরেজি বিভাগের শিক্ষার্থী অংকন বিশ্বাসের স্মৃতিতে দেয়ালে চিত্র এঁকে প্রতিবাদ জানিয়েছেন শিক্ষার্থীরা। 

বৃহস্পতিবার বিকালে বিশ্ববিদ্যালয়ের বিবিএ ভবনের নিচতলায় এ চিত্রাঙ্কন শুরু হয়। 

অবন্তিকার আত্মহত্যার ঘটনায় গড়ে ওঠা আন্দোলনের মধ্যে এই অঙ্কনকে সাংস্কৃতিক প্রতিবাদ হিসেবে বর্ণনা করছেন চিত্রশিল্পীরা। 

চারুকলা বিভাগের শিক্ষার্থী ইভা বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “আমরা অঙ্কনের মাধ্যমে সাংস্কৃতিক প্রতিবাদ জানাচ্ছি। অবন্তিকা ও অংকন বিশ্বাস আমাদের ছেড়ে চলে গেছেন। তাদেরকে সবার মধ্যে ছড়িয়ে দিতে আমাদের এই আয়োজন।” 

চারুকলার আরেক শিক্ষার্থী নাঈম বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “আমরা চিত্রশিল্পী। আমাদের প্রতিবাদের ভাষা চিত্রাঙ্কন। এর মাধ্যমেই আমরা আমাদের প্রতিবাদ জানাই। 

“আমাদের একজন বোন অবন্তিকার স্মৃতি সবার মনে গেঁথে রাখতে আমাদের ছোট্ট প্রয়াস। পাশাপাশি এটা একটা নীরব প্রতিবাদ।” 

গত ১৫ মার্চ রাত ১০টার দিকে কুমিল্লা শহরের বাগিচাগাঁও ফায়ার সার্ভিস সংলগ্ন এলাকার বাসায় আত্মহত্যা করেন অবন্তিকা। এর আগে নিজের ফেইসবুক আইডিতে তার এমন মৃত্যুর জন্য দায়ী করেন দুইজনকে। তারা হলেন-সহপাঠী রায়হান সিদ্দিকী আম্মান এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের সহকারী প্রক্টর দ্বীন ইসলাম। 

ঘটনার পরদিন রায়হান সিদ্দিকী আম্মানকে বহিষ্কার ও দ্বীন ইসলামকে সহকারী প্রক্টরের দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি দেওয়ার কথা জানায় বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। পাশাপাশি ম্যানেজমেন্ট স্টাডিজ বিভাগের সহকারী অধ্যাপকের পদ থেকে দ্বীনকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়। তারা দুজনেই বর্তমানে কারাগারে আছেন। 

এর আগে ২০২২ সালের ৮ মে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান ইংরেজি বিভাগের ১২ তম ব্যাচের শিক্ষার্থী অংকন বিশ্বাস। সেসময় স্ট্রোক করে তার মৃত্যুর কথা বলা হলেও শিক্ষার্থীদের একটি অংশের ভাষ্য, তার স্বামী আইন বিভাগের সাবেক শিক্ষার্থী শাকিল আহমেদের নির্যাতনের কারণে তার মৃত্যু হয়েছে। 

আন্দোলনরত শিক্ষার্থী সুমাইয়া সোমা বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “সাধারণ শিক্ষার্থীদের স্বাভাবিক রাখতে ও তাদেরকে সচেতন করতে আমাদের এই উদ্যোগ। 

“আমরা অঙ্কনের মাধ্যমে শিক্ষার্থীদের জানাতে চাই- তাদের ভয় পাওয়ার কোনো কারণ নেই, আমরা তাদের সাথে আছি।” 

অবন্তিকা ও অংকন সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডের সঙ্গে সম্পৃক্ত ছিলেন জানিয়ে তিনি বলেন, “আমরা তাদেরকে হারিয়েছি, তারা আমাদের সাংস্কৃতিক সংগঠনের ভবিষ্যৎ ছিল। তাদের স্মরণে আমাদের এ উদ্যোগ।”