“আমাদের সামনের রাস্তা আরও কণ্টকাকীর্ণ। আমাদের বিরুদ্ধে দেশি-বিদেশি ‘ষড়যন্ত্র’ হচ্ছে, এসব একত্রে অতিক্রম করতে হবে”, বলেন হাসনাত আবদুল্লাহ।
Published : 04 Dec 2024, 10:23 PM
‘জুলাই বিপ্লবের’ চেতনাকে সমুন্নত রেখে ‘জাতীয় ঐক্য’কে শক্তিশালী করার ডাক এসেছে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় সাংবাদিক জোটের আয়োজনে 'বিপ্লবোত্তর ছাত্র ঐক্য' শিরোনামে একটি আলোচনায়।
বুধবার বিকাল ৪টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের সায়েন্স ফ্যাকাল্টিতে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় সাংবাদিক জোটের আয়োজনে এই আলোচনা হয়।
বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য থেকে শুরু করে বিভিন্ন পর্যায়ের শিক্ষক এবং বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের ছাত্র সংগঠনের নেতারা অংশ নেন। অংশ নেন সরকার পতন আন্দোলনে নেতৃত্ব দেওয়া বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের প্রতিনিধিও।
উপাচার্য মো. রেজাউল করিম বলেন, “এক সময় মনে করে ছিলাম এই জীবনে মনে হয় আর ‘মুক্তির’ স্বাদ পাব না, কিন্তু উপরওয়ালা আমার সেই ভুল ভেঙে দিয়েছেন। ঐক্যবদ্ধ হয়ে এই ‘স্বাধীনতা’ সার্বভৌমত্ব আজীবনের জন্য অমর করে রাখবে বলে আমি আশাবাদী।”
বিশ্ববিদ্যালয়ের কোষাধ্যক্ষ সাবিনা শরমিন বলেন, “আমরা ছাত্রসমাজের কাছে কৃতজ্ঞ, ছাত্ররা হ্যামিলিয়নের বাঁশিওয়ালার মত ডেকেছে আর আমরা সবাই সেখানে ছুটে গেছি। আর ছুটে যাওয়ার জন্যই আমাদের বিজয় সম্ভব হয়। এখন সেই বিজয়কে স্থায়ী করতে গেলে আমাদের ঐক্য প্রয়োজন।”
আন্দোলনে নিহত হিসাববিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী সাজিদ হকের বোন ফারজানা হক বলেন, “আমরা যেই একতায় দেশটাকে ‘দ্বিতীয়বার স্বাধীন’ করেছি, এই ঐক্যটা ধরে রাখতে হবে।”
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের আহ্বায়ক হাসনাত আব্দুল্লাহ বলেন, “এই মঞ্চে যারা আছে তারা যদি ব্যর্থ হয়, আজকে হাসিনাকে যেভাবে দায়ী করছি ঠিক সেভাবে আমাদের দায়ী করা হবে। বিভিন্ন ক্রিয়াশীল ছাত্রসংগঠনের প্রাথমিক মতপার্থক্য থাকবে। কিন্তু জাতীয় স্বার্থের প্রশ্নে আমাদের ইস্পাতসম ঐক্য বজায় থাকবে।
“আমাদের সামনের রাস্তা আরও কণ্টকাকীর্ণ। আমাদের বিরুদ্ধে দেশি-বিদেশি ‘ষড়যন্ত্র’ হচ্ছে, এসব একত্রে অতিক্রম করতে হবে।”
বিশ্ববিদ্যালয়ের ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগের অধ্যাপক রইছ উদ্দীন বলেন, “আজকে সাংবাদিক জোট ‘বিপ্লবোত্তর ঐক্যের’ ডাক দিয়েছে। আমাদের ‘প্রথম ঐক্য’ হবে কোনো ‘অপশক্তির সাথে’ আপস না করা; ‘দ্বিতীয় ঐক্য’ হবে এই দেশ আমার জন্মভূমি, এই দেশকে সবার ঊর্ধ্বে তুলে রাখতে হবে; ‘তৃতীয় ঐক্য’ হবে ভারতের ‘রক্তচক্ষুর’ বিপক্ষে দাঁড়ানো।”
জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় সভাপতি রাকিবুল ইসলাম রাকিব বলেন, “চার মাসের মাথায় ‘ফ্যাসিস্ট’ হাসিনার ১৬ বছরের ‘গুম, খুন’, ভুলে গেলে চলবে না। আমরা যদি তাদের ত্যাগ ভুলে যাই তাহলে ঐক্য গঠিত হবে না। যাদের আত্মত্যাগের বিনিময়ে ‘ফ্যাসিস্টমুক্ত’ ক্যাম্পাস পেয়েছি তাদেরকে আমরা ভুলবো না।”
ইসলামী ছাত্রশিবিরের কেন্দ্রীয় সভাপতি মঞ্জুরুল ইসলাম বলেন, “আসুন ঐক্যবদ্ধ আন্দোলনের মাধ্যমে আমরা আমাদের জাতিকে পৃথিবীর মানচিত্রে একটি সম্মানজনক জায়গায় নিয়ে যাই।”
জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রদলের সভাপতি আসাদুজ্জামান আসলাম, সাধারণ সম্পাদক সুজন মোল্লা, বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রশিবিরের সভাপতি ইকবাল হোসেন শিকদার, সমাজতান্ত্রিক ছাত্রফ্রন্টের কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক রাফিকুজ্জামান ফরিদ, বাংলাদেশ ছাত্র অধিকার পরিষদের কেন্দ্রীয় সভাপতি বিন ইয়ামিন মোল্লাও এ সময় বক্তব্য রাখেন।
অনুষ্ঠানের সভাপতিত্ব করেন বিশ্ববিদ্যালয় সাংবাদিক সমিতির সভাপতি মাহমুদুল হাসান তানভীর, সঞ্চালনা করেন বিশ্ববিদ্যালয় প্রেস ক্লাবের সভাপতি সুবর্ণ আসসাইফ।