দশ দিনের মধ্যে তদন্ত কমিটি গঠন করে বিচার প্রক্রিয়া শুরু না হলে আবারও ক্লাস বর্জন করে আন্দোলনের হুঁশিয়ারি দিয়েছেন তারা।
Published : 18 Feb 2024, 11:21 AM
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের অধ্যাপক নাদির জুনাইদের বিরুদ্ধে যৌন হয়রানির অভিযোগের তদন্তে কমিটি গঠন করে বিচার প্রক্রিয়া শুরু করতে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনকে ১০ দিন সময় বেঁধে দিয়ে ক্লাসে ফিরেছেন শিক্ষার্থীরা।
দশ দিনের মধ্যে তদন্ত কমিটি গঠন করে বিচার প্রক্রিয়া শুরু না হলে আবারও ক্লাস বর্জন করে আন্দোলনের হুঁশিয়ারি দিয়েছেন তারা।
রোববার সকালে বিশ্ববিদ্যালয়ের সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদ ভবন প্রাঙ্গণে প্রেস ব্রিফিং করে এই ‘আল্টিমেটাম’ দেন শিক্ষার্থীরা। এরপর তারা ক্লাসে ফিরে যান।
প্রেস ব্রিফিংয়ে লিখিত বক্তব্য পড়ে শোনান বিভাগের ত্রয়োদশ ব্যাচের শিক্ষার্থী রাফিজ খান।
তিনি বলেন, “আগামী ১০ দিনের মধ্যে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন যদি নিরপেক্ষ তদন্ত কমিটি গঠন করে বিচারিক প্রক্রিয়া এগিয়ে না নেয়, অথবা এতে কোনোরূপ অবহেলা, পক্ষপাত অথবা স্বচ্ছতার ঘাটতি পরিলক্ষিত হয়, অথবা কোনো মহল বিচার প্রক্রিয়াকে কোনোভাবে প্রভাবিত করছে বলে প্রতীয়মান হয়, তাহলে পুনরায় ক্লাস বর্জন করে আন্দোলনে ফিরতে বাধ্য হব।”
নম্বর কম দেওয়া নিয়ে স্নাতকোত্তরের একটি ব্যাচের বেশ কিছু শিক্ষার্থীর অভিযোগের মধ্যে গত ১০ ফেব্রুয়ারি অধ্যাপক নাদির জুনাইদের বিরুদ্ধে প্রক্টরের কাছে লিখিত দেন বিভাগের এক নারী শিক্ষার্থী। যৌন হয়রানি ও মানসিক নির্যাতনের অভিযোগ এনে কিছু অডিও রেকর্ড ও মেসেজের স্ক্রিনশট জমা দেন তিনি।
অভিযোগ অস্বীকার করে আসা অধ্যাপক নাদির জুনাইদ অবশ্য শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের পেছনে ‘অন্য কিছু’ দেখছেন। বিভাগের পরবর্তী চেয়ারম্যানের দায়িত্ব পাওয়ার আগে ‘ব্যক্তিগত আক্রমণের’ শিকার হচ্ছেন বলে তার ভাষ্য।
ওই অভিযোগের সুষ্ঠু তদন্ত ও বিচারের দাবিতে ১১ ফেব্রুয়ারি থেকে ক্লাস বর্জন করে বিক্ষোভ নামেন বিভাগের সব ব্যাচের শিক্ষার্থীরা।
শিক্ষক নাদির জুনাইদের অফিস কক্ষে তালা দেওয়ার পাশাপাশি শ্রেণিকক্ষের তালায় সিলগালা করে দেন আন্দোলনকারীরা।পাশাপাশি তারা উপাচার্য বরাবর স্মারকলিপি দেন।
এই আন্দোলনের মধ্যে অধ্যাপক নাদির জুনাইদকে তিন মাসের ছুটি দেয় বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। ছুটির চিঠিতে বলা হয়, অভিযোগের যথাযথ অনুসন্ধান ও তদন্ত করার জন্য বিষয়টি বিশ্ববিদ্যালয়ের পরবর্তী সিন্ডিকেট সভায় উপস্থাপন করা হবে এবং সিন্ডিকেটের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
পরে শিক্ষার্থীরা আন্দোলনের জন্য তাদের অ্যাকাডেমিক কার্যক্রমে কোনো প্রভাব পড়বে না– এমন লিখিত নিরাপত্তার আশ্বাস চান বিভাগের চেয়ারম্যানের কাছে।
গত ১৫ ফেব্রুয়ারি বিকেলে বিভাগের অ্যাকাডেমিক কমিটির বৈঠক শেষে শিক্ষার্থীদের অ্যাকাডেমিক নিরাপত্তা দেওয়ার লিখিত আশ্বাস দেন বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক আবুল মনসুর আহাম্মদ । এরই পরিপ্রেক্ষিতে শিক্ষার্থীরা রোববার থেকে রুটিন অনুযায়ী ক্লাসে ফেরার ঘোষণা দিলেন।