ডকাসুর সাবেক সমাজসেবা সম্পাদক ও গণতান্ত্রিক ছাত্রশক্তির সভাপতি আখতার হোসেন সেখান থেকে সরে যেতে অস্বীকার করলে পুলিশ তাকে ধরে নিয়ে যায়।
Published : 17 Jul 2024, 04:17 PM
পুলিশ ও ছাত্রলীগের সঙ্গে সংঘর্ষের মধ্যে নিহতদের স্মরণে গায়েবানা জানাজা ও কফিন মিছিলে অংশ নিতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাজু ভাস্কর্যের সামনে জড়ো হওয়া কোটাবিরোধী আন্দোলনকারীদের সাউন্ড গ্রেনেড ছুড়ে ছত্রভঙ্গ করে দিয়েছে পুলিশ।
পূর্ব ঘোষণা অনুযায়ী আন্দোলনকারীরা বুধবার দুপুরে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে ঢোকার চেষ্টা করলে পুলিশ তাদের বাধা দেয়।
ক্যাম্পাসের ভেতরে থাকা শিক্ষার্থীরা বেলা আড়াইটার দিকে রাজু ভাস্কর্যের সামনে জড়ো হওয়ার চেষ্টা করেন। এ সময় পুলিশ পর পর চারটি সাউন্ড গ্রেনেড নিক্ষেপ করে তাদের ছত্রভঙ্গ করে দেন।
ডকাসুর সাবেক সমাজসেবা সম্পাদক ও গণতান্ত্রিক ছাত্রশক্তির সভাপতি আখতার হোসেন সেখান থেকে সরে যেতে অস্বীকার করলে পুলিশ তাকে ধরে নিয়ে যায়।
পরে আন্দোলনকারীরা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের বাসভবনের সামনে অবস্থান নিয়ে বিক্ষোভ করেন। বিকাল সাড়ে ৩টা পর্যন্ত তারা সেখানে অবস্থান করেন।
আন্দোলনকারীদের একজন নেতা বলেছেন, ক্যাম্পাসের ভেতরে যারা আছেন, তারা উপচার্যের বাসভবনের সামনেই গায়েবানা জানাজা পড়বেন।
কোটা সংস্কার আন্দোলনকারীদের প্ল্যাটফর্ম বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের অন্যতম সমন্বয়ক নাহিদ ইসলাম বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “রাজু ভাস্কর্যে সামনে দুপুর ২টায় গায়েবানা জানাজা ও কফিন মিছিলের কর্মসূচি ছিল। কিন্তু পুলিশ কাউকে ক্যাম্পাসে প্রবেশ করতে দিচ্ছে না। সব কটা প্রবেশ পথ আটকে রেখেছে। কোথাও কোথাও পুলিশ অ্যাটাক করছে।”
কোটা সংস্কারের দাবিতে চলমান আন্দোলনের অংশ হিসেবে মঙ্গলবার বিকালে দেশের সব ক্যাম্পাসে বিক্ষোভ সমাবেশের কর্মসূচি ঘোষণা করেছিল আন্দোলনকারীরা। তবে বেলা ১১টা থেকেই ঢাকাসহ বিভিন্ন স্থানে সড়ক অবরোধ করে শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভ শুরু করে।
পরে বিভিন্ন স্থানে আন্দোলনকারীদের সঙ্গে সরকারদলীয় সংগঠনের নেতাকর্মী ও পুলিশের সংঘর্ষ বাঁধে। এসব ঘটনায় চট্টগ্রামে তিনজন, ঢাকায় দুজন এবং রংপুরে একজনের মৃত্যু হয়।
পরে রাতে গায়েবানা জানাজা ও কফিন মিছিলের ঘোষণা করেন কোটাবিরোধী আন্দোলনকারীরা।
পুরনো খবর
ঢাবিতে হলছাড়া ছাত্রলীগ নেতারা, কক্ষে ভাঙচুর
কোন বিশ্ববিদ্যালয়ে হল ছাড়তে হবে কখন
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে বেলা ২টায় রাজু ভাস্কর্যের পাদদেশে এবং সারাদেশে সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ও জেলায় জেলায় এ কর্মসূচি পালন করতে শিক্ষার্থীদের প্রতি আহ্বান জানান কোটা সংস্কার আন্দোলনকারীদের প্ল্যাটফর্ম বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের অন্যতম সমন্বয়ক আসিফ মাহমুদ।
এদিকে মঙ্গলবার রাতেই দেশের সব স্কুল, কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ ঘোষণা করে শিক্ষার্থীদের হল ত্যাগের নির্দেশ দিতে বলে সরকার।
এর মধ্যেই রাতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন হল থেকে ছাত্রলীগ নেতাদের বের করে দেন শিক্ষার্থীরা। কোনো কোনো হলে ছাত্রলীগ নেতাদের না পেয়ে তাদের কক্ষে ভাঙচুর চালানো হয়। পাশাপাশি ১৪টি হলে ‘ছাত্ররাজনীতি নিষিদ্ধ' মর্মে অঙ্গীকারনামায় প্রাধ্যক্ষদের স্বাক্ষর আদায় করেন তারা।
এদিকে মঙ্গলবার রাতেই ক্যাম্পাসে ঢোকার পথ বন্ধ করে দেয় পুলিশ। ক্যাম্পাসে মোতায়েন করা হয় বিজিবি।
বুধবার সকাল থেকে বাইরের কাউকে ক্যাম্পাসে ঢুকতে দেয়নি পুলিশ। তবে শিক্ষার্থীদের বের হতে দেওয়া হচ্ছে।
বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরী কমিশনের নির্দেশনা অনুযায়ী এদিন দুপুরে সিন্ডিকেটের জরুরি সভায় বিশ্ববিদ্যালয় অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ ঘোষণা করা হয়। সেই সঙ্গে বুধবার সন্ধ্যা ৬টার মধ্যে শিক্ষার্থীদের হল ছাড়ার নির্দেশ দেয় বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।
বিশ্ববিদ্যালয়ের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, “পরবর্তীতে হল খোলার পর মেধার ভিত্তিতে সিট বরাদ্দ করে শিক্ষার্থীদের হলে ওঠানো হবে। বহিরাগত কাউকে ক্যাম্পাসে প্রবেশ ও অবস্থান না করার জন্য নির্দেশনা দেওয়া হল।”
পুরনো খবর
ছাত্র রাজনীতি ‘নিষিদ্ধের' অঙ্গীকারনামায় প্রাধ্যক্ষদের সই নিয়েছে ঢাবির হলের শিক্ষার্থীরা