রপ্তানিতে নিষেধাজ্ঞা ৫০ হাজার টনের চুক্তিতে পড়বে না, বলেন টিটু।
Published : 24 Mar 2024, 09:40 PM
ভারত পেঁয়াজ রপ্তানিতে নিষেধাজ্ঞা দিলেও আগের চুক্তি অনুযায়ী ৫০ হাজার টন পেঁয়াজ আসবে বলে নিশ্চিত করেছেন বাণিজ্য প্রতিমন্ত্রী আহসানুল ইসলাম টিটু।
তিনি বলেন, “এই পেঁয়াজ ধীরে ধীরে বাংলাদেশে আসবে। আমাদের পেঁয়াজ ইতোমধ্যেই ট্রেনে চড়েছে, যা দর্শনা রুট দিয়ে দুই বা তিন দিনের মধ্যে পৌঁছাবে।”
রোববার ঢাকায় ইন্টারন্যাশনাল বিজনেস ফোরাম অব বাংলাদেশ (আইবিএফবি) আয়োজিত ‘প্রয়োজনীয় জিনিসের দামের উপর সিন্ডিকেট এবং প্রতিযোগিতার প্রভাব’ শীর্ষক এক সেমিনারে তিনি একথা বলেন।
অভ্যন্তরীণ বাজার ঠিক রাখতে প্রথম ধাপে পেঁয়াজের সর্বনিম্ন রপ্তানি মূল্য প্রতিটন ৮০০ ডলার বেঁধে দেওয়ার পর দ্বিতীয় দফায় ৩১ মার্চ পর্যন্ত পেঁয়াজ রপ্তানিতে নিষেধাজ্ঞা দেয় ভারত। সম্প্রতি পেঁয়াজ রপ্তানির নিষেধাজ্ঞা অনির্দিষ্টকালের জন্য বাড়ানো হয়। এই তথ্যে দেশে পেঁয়াজের বাজার আবার চড়তে দেখা যাচ্ছে।
বাণিজ্য প্রতিমন্ত্রী বলেন, “বাজারের স্থিতিশীলতা পণ্যের চাহিদা, যোগান ও অন্যান্য বেশ কিছু বিষয়ের উপর নির্ভর করে। প্রাকৃতিক দুর্যোগ, মহামারী এবং বৈশ্বিক সংঘাতের মত বিভিন্ন সমস্যা কখনও কখনও বাজারকে মারাত্মকভাবে ব্যাহত করে। বাজারে কোনো অনৈতিক আচরণ শনাক্ত হলে সরকার প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিয়ে থাকে।”
বাজারের অস্থিরতার কারণে ক্ষতিগ্রস্ত ব্যক্তিদের সহায়তায় সরকারের ভূমিকা তুলে ধরে তিনি বলেন, “সরকার ১০ মিলিয়ন পরিবারকে টিসিবির পরিবার কার্ডের মত কর্মসূচির মাধ্যমে সহায়তা করে যাচ্ছে।”
বাণিজ্য সচিব তপন কান্তি ঘোষ বলেন, “বাজারের আনুষ্ঠানিকীকরণ, বাজারের অপূর্ণতা যাচাই করার ব্যবস্থা এবং তথ্যের ফাঁক কমানো অত্যাবশ্যক।”
পুলিশিং এবং মূল্য নির্ধারণের মত পদক্ষেপগুলো কৃষি পণ্যের বাজারের গতিশীলতায় কাজ করে না বলেও মত প্রকাশ করেন তিনি।
সেমিনারে প্রবন্ধের প্রধান উপস্থাপক মোহাম্মদ হেলাল উদ্দিন আহমেদ বলেন, “বাজারে সিন্ডিকেশনের বড় ধরনের অভিযোগ রয়েছে। আসলে মূল্য স্তর এবং মূল্য ওঠানামার মধ্যে পার্থক্য রয়েছে। যেহেতু মানুষের আয় দামের ওঠানামার সঙ্গে আনুপাতিকভাবে বাড়ছে না, তাই তারা মূল্য স্তরের পরিবর্তন নিয়ে উদ্বিগ্ন।”
তিনি একটি উন্নত সরবরাহ শৃঙ্খল, কৃষিপণ্যের সঠিক মজুদ এবং কৃষি প্রক্রিয়াকরণের পরামর্শ দেন। বাজারের কারসাজি রোধে ডিজিটাল লেনদেনের সুযোগ বাড়ানোর ওপরও জোর দেন।
তিনি বলেন, ২০০০ সাল থেকে বিশ্বব্যাপী খাদ্য মূল্য সূচক মোটামুটি তিনগুণ বেড়েছে। বাংলাদেশে এটা পাঁচ গুণ বেড়েছে।
বাংলাদেশ প্রতিযোগিতা কমিশনের সদস্য হাফিজুর রহমান বলেন, “সব মূল্যবৃদ্ধি বাজারের সিন্ডিকেশনের ফল নয়। দাম বাড়ার পেছনে রয়েছে নানা কারণ। দেশের কর ব্যবস্থায় বিভিন্ন পরিবর্তন হয়েছে। বৈদেশিক মুদ্রার বিনিময় হারের অস্থিরতার কারণে মূল্যবৃদ্ধি হয়েছে।”
জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক এএইচএম সফিকুজ্জামান বলেন, “কিছু অর্থনৈতিক তত্ত্ব দৃশ্যত বাংলাদেশের পণ্য বাজারে কাজ করে না। ভোক্তাদের আচরণ শিক্ষিত করার জন্য একটি শক্তিশালী প্রচারণার প্রয়োজন আছে। এছাড়াও বিভিন্ন পণ্যের বাজারের চাহিদা এবং উৎপাদনের ডেটা প্রাপ্যতা অত্যাবশ্যক।”
এনবিআরের সাবেক চেয়ারম্যান মুহাম্মদ আবদুল মজিদ বলেন, “করের হার পরিবর্তনের ওপর গবেষণা হওয়া উচিত।”
শুল্ক বাড়ানোর পর ফল আমদানি করা হলেও ভালো বিক্রি হচ্ছে মন্তব্য করে তিনি বলেন, “যা বোঝায় সক্ষম ভোক্তা রয়েছে।”
আয় বৈষম্য এখন দেশের জন্য একটি বড় সমস্যা বলে মত দেন তিনি।