গাইবান্ধার সুন্দরগঞ্জ উপজেলায় অনাবাদি চরের ৬৫০ একর জমিতে গড়ে উঠেছে দেশের সবচেয়ে বড় এবং এশিয়ার অন্যতম বড় এই সৌরবিদ্যুৎ কেন্দ্র।
Published : 02 Aug 2023, 10:15 PM
দেশের উত্তরাঞ্চলে নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ সরবরাহের প্রতিশ্রুতি নিয়ে গাইবান্ধার সুন্দরগঞ্জে আনুষ্ঠানিক যাত্রা করল দেশের সবচেয়ে বড় সৌরবিদ্যুৎ কেন্দ্র তিস্তা সোলার লিমিটেড।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বুধবার রংপুর জিলা স্কুল মাঠের সমাবেশ থেকে ২০০ মেগাওয়াট ক্ষমতার এই বিদ্যুৎকেন্দ্রের উদ্বোধন করেন।
বিকালে রংপুর থেকে ঢাকা ফেরার পথে হেলিকপ্টারের জানালা দিয়ে বিদ্যুৎকেন্দ্রটি তিনি এক ঝলক দেখেও নেন।
গাইবান্ধার সুন্দরগঞ্জ উপজেলায় অনাবাদি চরের ৬৫০ একর জমিতে গড়ে উঠেছে দেশের সবচেয়ে বড় এবং এশিয়ার অন্যতম বড় এই সৌর বিদ্যুৎকেন্দ্র। বেক্সিমকোর গ্রুপের সহযোগী প্রতিষ্ঠান বেক্সিমকো পাওয়ার লিমিটেড এ বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণ করেছে।
তিস্তা পাড়ের লাটশালা এলাকায় বিশাল এই কেন্দ্রটির নির্মাণ শুরু হয় ২০১৭ সালে। বসানো হয় সাড়ে পাঁচ লাখ সোলার প্যানেল। বুধবার আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন হলেও এ কেন্দ্রের বিদ্যুৎ জাতীয় গ্রিডে যুক্ত হচ্ছে গত ডিসেম্বর থেকে।
সেজন্য সুন্দরগঞ্জের তিস্তা পাড় থেকে রংপুর পর্যন্ত নির্মাণ করা হয়েছে ১২২টি টাওয়ারের ১৩২ কিলো ভোল্টের ৩৫ কিলোমিটার বিদ্যুৎ সঞ্চালন লাইন। নির্মাণ করা হয়েছে সাবস্টেশন, বসানো হয়েছে ইনভার্টারসহ সব ধরনের যন্ত্র।
বন্যা, নদী ভাঙনের মত প্রাকৃতিক দূর্যোগ থেকে বিদ্যুৎকেন্দ্রটি রক্ষায় নির্মাণ করা হয়েছে বাঁধ ও চলাচলের জন্য সাত কিলোমিটার সড়ক। যার সুবিধা পাচ্ছেন স্থানীয়রাও।
রংপুর সফরে এসে উত্তরের মানুষে জীবনমান উন্নয়নের প্রতিশ্রুতি পূরণের অংশ হিসেবে এই বিদ্যুতকেন্দ্র উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
বেক্সিমকো পাওয়ার লিমিটেডের চেয়ারম্যান শায়ান এফ রহমান বলেন, ''মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর একটা রোডম্যাপ আছে গ্লোবাল ওয়ার্মিং নিয়ে, পরিবেশ রক্ষা নিয়ে। সরকার এটা নিয়ে অনেক কাজ করছে। বেক্সিমকো অনেক খাতে পায়োনিয়ার। আমরা মনে করি, এই নবায়নযোগ্য জ্বালানি খাত ভবিষ্যত জ্বালানির জন্য অনেক গুরুত্বপূর্ণ হবে। তাই আমরা এখাতে বিনিয়োগের সিদ্ধান্ত নিই।
প্রকল্পটির ‘শতভাগ মালিকানা’ বেক্সিমকো পাওয়ার লিমিটেডের জানিয়ে তিনি বলেন, “এই প্রকল্পে অর্থায়নে আমরা দেশে প্রথম সুকুক বন্ড চালু করি। এ প্রকল্পে আমাদের প্রায় ৩০০ মিলিয়ন ডলার খরচ হয়েছে। ভবিষ্যতে আমরা সরকারের পরিকল্পনা অনুযায়ী আরো সৌর বিদ্যুৎ কেন্দ্র স্থাপনের চিন্তা করছি।"
এ প্রকল্প উত্তরবঙ্গে বিদ্যুৎ সরবরাহ বাড়ানোর পাশাপাশি ব্যবসা বাণিজ্যের সহায়ক পরিবেশ তৈরিতে ভূমিকা ও কর্মসংস্থান সৃষ্টিতে অবদান রাখবে বলে আশা প্রকাশ করেন শায়ান এফ রহমান৷
বিশ্বব্যাপী পরিবেশ রক্ষায় সৌরবিদ্যুৎ উৎপাদনে জোর দেওয়া হচ্ছে। উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা অর্জন ও জ্বালানি আমদানি কমাতে সরকারও এ খাতে জোর দিয়েছে।