চালের আড়তদারদের বেচাকেনার হিসাব দিতে হবে নিয়মিত: খাদ্যমন্ত্রী

“যখন ব্যবসায়ীদের সাথে মিটিং করা হয়, তখন চালের দাম কমে; তারপর আবার বাড়ে,” বলেন সাধন চন্দ্র মজুমদার।

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 21 March 2023, 03:25 PM
Updated : 21 March 2023, 03:25 PM

চালের আড়তদারদের জবাবদিহিতা নিশ্চিতে সরকার উদ্যোগ নিচ্ছে বলে জানিয়েছেন খাদ্যমন্ত্রী সাধন চন্দ্র মজুমদার।

তিনি বলেছেন, “লাইসেন্স ছাড়া কেউ এদেশে ধান-চালের ব্যবসা করতে পারবে না। এটা করতে হলে তার ফুড গ্রেইন লাইসেন্স থাকতে হবে। আড়তদারদেরও এ লাইসেন্স থাকতে হবে। ১৫ দিন পর পর কতটুকু তিনি ক্রয় করেছেন, কতটুকু বিক্রয় করেছেন- তার রিটার্ন দাখিল করতে হবে।”

রোজা সামনে রেখে মঙ্গলবার খাদ্য অধিদপ্তরে চাল ব্যবসায়ীদের সঙ্গে  এক মতবিনিময় সভায় তিনি এ কথা বলেন বলে এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে।

সাধন চ্ন্দ্র মজুমদার বলেন, “দেশে চালের কোনো অভাব নেই। কৃত্রিম সংকট তৈরি করে দাম বাড়ানো হয়। কেউ কৃত্রিম সংকট করলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”

চালের দাম বৃদ্ধির পেছনে ব্যবসায়ীদের হাত থাকার ইঙ্গিত দিয়ে তিনি বলেন, “যখন ব্যবসায়ীদের সাথে মিটিং করা হয়, তখন চালের দাম কমে; তারপর আবার বাড়ে। বাড়ার সময় ৫ টাকা বাড়লেও কমার সময় সেভাবে কমে না। ব্যবসায়ীরা এক টাকা কমিয়ে বলে চালের দাম কমেছে।”

ব্যবসায়ীদের এ প্রবণতা ত্যাগ করার আহ্বান জানিয়ে খাদ্যমন্ত্রী বলেন, ২০২৩ সালে দুর্ভিক্ষ হতে পারে- বিশ্ব ব্যাংকের এমন ঘোষণার পর অনেকেই অনায্যভাবে চালের দাম বাড়িয়েছেন, মজুদ করেছেন। সেটা নিয়ন্ত্রণে ওএমএস বাজারে ছাড়তে হয়েছে। সরকার আমদানি করেছিল বলে বিতরণ করতে পেরেছে।

“অনেকেই প্রশ্ন করেন, উদ্বৃত্ত হলে আমদানি করেন কেন? আমদানির পথ খোলা থাকলে অবৈধ মজুদকারীরা কারসাজি করতে পারে না।”

অনুষ্ঠানে নওগাঁ ধান-চাল আড়তদার ও ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি নিরোধ বরণ সাহা চন্দন বলেন, “ধান চালের সাথে সম্পৃক্ত নন- এমন লোকেরা অবৈধ মজুদ গড়ে তোলে। তাদের অতি মুনাফা লাভের আশা- বাজারে কৃত্রিম সংকট তৈরি করে।

“চাল আমদানির কোনো প্রয়োজন নেই। দেশে যে ধান উৎপাদন হয়, তা প্রয়োজনের তুলনায় উদ্বৃত্ত।”

বাবু বাজার পাইকারি চাল ব্যবসায়ী সমিতির সাধারণ সম্পাদক নিজাম উদ্দিন বলেন, “চালের বাজার ডিমান্ড ও সাপ্লাইয়ের ওপর নির্ভর করে। আমদানি চালু থাকলে বাজার ঠিক থাকে। ধানের বাজার স্থিতিশীল রাখতে পারলে চালের বাজারও স্থিতিশীল থাকবে।”

বাংলাদেশ অটো, মেজর অ্যান্ড হাসকিং মিল মালিক সমিতির সভাপতি আব্দুর রশিদ বলেন, “সরকার মিল মালিকদের কথা চিন্তা করে না। চাল আমদানির ফলে দেশের হাজার হাজার চালের মিল বন্ধ হয়ে যাচ্ছে। বর্তমান পরিস্থিতিতে চালের বাজার বাড়ার সম্ভাবনা নেই, স্থিতিশীল থাকবে।“

খাদ্য মন্ত্রণালয়ের সচিব ইসমাইল হোসেনের সভাপতিত্বে অন্যদের মধ্যে খাদ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক শাখাওয়াত হোসেন, নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান আব্দুল কাইয়ুম সরকার, খাদ্য অধিদপ্তরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক আব্দুল্লাহ আল মামুন অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেন।