দেশি মানি চেঞ্জার ও বিদেশি মানি এক্সচেঞ্জ হাউজগুলোর সঙ্গে বৈঠক করে এ বিষয়ে কঠোর বার্তা দেওয়ার কথা জানিয়েছেন বাংলাদেশ ব্যাংকের মুখপাত্র।
Published : 14 Nov 2023, 09:48 PM
বাফেদা ও এবিবির বেঁধে দেওয়া দরেই বৈদেশিক মুদ্রা লেনদেন করতে দেশি মানি চেঞ্জার ও বিদেশি মানি এক্সচেঞ্জ হাউজগুলোকে আবারও কঠোর বার্তা দিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক।
খোলা বাজার হিসেবে পরিচিত মানি চেঞ্জার কোম্পানিগুলোর পাশাপাশি বিদেশি এক্সচেঞ্জ হাউজ এ গত কয়েকদিন ধরেই চড়া দামে ডলার কেনাবেচা হচ্ছে। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের নির্দেশনা মেনে বাফেদা ও এবিবির নির্ধারণ করে দরের চেয়ে ২ থেকে ৮ টাকা পর্যন্ত বেশি দরে লেনদেন হওয়ার খবর এসেছে।
এরপরই দেশি মানি চেঞ্জার ও বিদেশি মানি এক্সচেঞ্জ হাউজগুলোর সঙ্গে বৈঠক করে নিয়ম মেনে চলার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন বাংলাদেশ ব্যাংকের মুখপাত্র ও নির্বাহী পরিচালক মেজবাউল হক।
মঙ্গলবার মতিঝিলে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের কার্যালয়ে দেশি মানি চেঞ্জারগুলোর সংগঠন মানি চেঞ্জার অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের নেতাদের সঙ্গে বৈঠক করেন বাংলাদেশ ব্যাংকের বৈদেশিক মুদ্রা নীতি বিভাগের কর্মকর্তারা। আগের দিন বৈঠক হয় বিদেশি এক্সচেঞ্জ হাউজের প্রতিনিধিদের সঙ্গে।
মুখপাত্র মেজবাউল বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, নির্ধারিত দর মানার ক্ষেত্রে কোনো ব্যাতয় হলে প্রমাণ স্বাপেক্ষে আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে। বিষয়টি তাদের জানিয়ে দেওয়া হয়।
বৈঠকে বিদেশি এক্সচেঞ্জ হাউজের প্রতিনিধিরাও নির্দিষ্ট দরেই লেনদেন করতে সম্মত হয়েছেন বলে জানান তিনি।
নির্ধারিত দরেই তারা ডলার কেনাবেচা করেন দাবি করে মানি চেঞ্জার অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের সাধারণ সম্পাদক হেলাল শিকদার বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, ‘‘আমরা আমাদের বক্তব্য দিয়েছি। আমরা তো নির্ধারিত দরেই ডলার বিক্রি করছি। বাইরে যারা বিক্রি করছে তাদের উপর তো আমাদের কোনো নিয়ন্ত্রণ নেই।’’
বৈঠকে তারা দৈনিক কেনাবেচা শেষে ডলার মজুদের সীমা বাড়ানোর প্রস্তাব দিয়েছেন বলে জানান তিনি।
আগের দিন সোমবার বিদেশি এক্সচেঞ্জ হাউজের দেশি লিয়াজোঁ অফিস ও প্রতিনিধিদের সঙ্গে বৈঠকে ওয়েস্টার্ন ইউনিয়ন, মানিগ্রাম, রিয়া মানি ট্রান্সফার, এনইসি মানি ট্রান্সফার, ইনস্ট্যান্ট ক্যাশ, ট্রান্সফাস্ট, মার্চেন্টেড এশিয়া, স্মল ওয়ার্ল্ড ও প্লাসিড এর প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন।
খোলা বাজারে গত কয়েকদিন থেকে আবার অস্থির হয়ে উঠেছে ডলারের দর। বিদেশি এক্সচেঞ্জ হাউজগুলোর কাছ থেকে রেমিটেন্সের নির্ধারিত দর ১১৬ টাকার চেয়ে ব্যাংকগুলোর ৮ টাকা পর্যন্ত বেশি দামে ডলার কেনার খবর এসেছে। খোলা বাজারেও ডলারের দর হঠাৎ লাফ দিয়ে ওঠানামা করে ১২৫ টাকা ছাড়িয়ে যায়।
এতে বৈদেশিক মুদ্রা বাজার আরও অস্থিতিশীল হয়ে উঠলে বাংলাদেশ ব্যাংক তাদের নিয়ে বৈঠকে বসে।
বিনিময় হার একটি কাঠামোতে আনতে ২০২২ সালের সেপ্টেম্বর থেকে বাংলাদেশ ফরেইন এক্সচেঞ্জ ডিলার অ্যাসোসিয়েশন-বাফেদা ও ব্যাংক নির্বাহীদের সংগঠন অ্যাসোসিয়েশন অব ব্যাংকার্স, বাংলাদেশ (এবিবি) ডলার দর নির্ধারণ করে দিচ্ছে।
সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, ব্যাংকের নগদ অর্থে ডলার বিক্রির দরের চেয়ে খোলা বাজারে ডলার দরে ব্যবধান হবে সর্বোচ্চ এক টাকা ৫০ পয়সা। হুন্ডি রোধে ব্যাংক ও খোলা বাজারের মধ্যে দরের এ পার্থক্য রাখে বাংলাদেশ ব্যাংক।
বাফেদার ঠিক করে দেওয়া দর প্রতিদিন সদস্যদের জানিয়ে দিচ্ছে মানি চেঞ্জার অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ।
বর্তমানে ব্যাংকগুলোতে রেমিটেন্স ছাড়া ডলার ক্রয় দর ১১০ টাকা ৫০ পয়সা ও বিক্রয় দর সর্বোচ্চ ১১১ টাকা। রেমিটেন্সে প্রণোদনসহ সর্বোচচ দর হবে ১১৬ টাকা।