কৃত্রিম তন্তুর পণ্যে ১০% প্রণোদনা চায় বিজিএমইএ

রপ্তানির নতুন ট্রেন্ড ধরতে এ খাতে আরও বিনিয়োগ প্রয়োজন বলে মনে করে সংগঠনটি।

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 17 April 2023, 06:43 PM
Updated : 17 April 2023, 06:43 PM

রপ্তানিমুখী পোশাক শিল্পে দ্বিগুণ প্রবৃদ্ধি অর্জনের লক্ষ্য পূরণে নন-কটন পণ্য বা কৃত্রিম তন্তুতে তৈরি পণ্য রপ্তানিতে আগামী বাজেটে ১০ শতাংশ হারে প্রণোদনা দাবি করেছে বিজিএমইএ।

সোমবার অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামালের কাছে পাঠানো এক চিঠিতে বিশেষ এ প্রণোদনার পক্ষে যুক্তি দেখিয়েছেন সংগঠনটির সভাপতি ফারুক হাসান।

তিনি লিখেছেন, বিশ্বে প্রতি বছর যে পরিমাণ পোশাক ব্যবহার হয়, বর্তমানে সেটির ৭৫ শতাংশ আসে কৃত্রিম তন্তু থেকে; বাকি ২৫ শতাংশ আসে তুলা থেকে। আর বর্তমানে বৈশ্বিক পোশাক বাণিজ্যের ৫২ শতাংশ পণ্য কৃত্রিম তন্তুতে তৈরি, সেখানে বাংলাদেশ এমন পোশাক রপ্তানি করে মাত্র ২৬ শতাংশ।

বর্তমানে বাংলাদেশ থেকে বছরে প্রায় ৪৫ বিলিয়ন ডলারের পোশাক পণ্য রপ্তানি হয়। সবশেষ ২০২১-২২ অর্থবছরে মোট পোশাক রপ্তানির ৭৩ শতাংশই ছিল সুতা বা কটনে তৈরি পণ্য।

বিশ্বজুড়ে পোশাকের ভোক্তারা কটন বা সুতির পোশাকের পরিবর্তে ধীরে ধীরে ম্যান মেইড ফাইবার বা কৃত্রিম ত্বন্তুর পোশাকের দিকে ঝুঁকছে। তবে গত ১০ বছরে বাংলাদেশে সুতির পোশাক উৎপাদনের হারই বেড়েছে।

এমন প্রেক্ষাপটে বিশ্ববাজারের সঙ্গে তাল মেলাতে বাংলাদেশে কৃত্রিম তন্তুর পণ্যে বিনিয়োগ বাড়ছে উল্লেখ করে ফারুক হাসান বলেন, তবে প্রতিযোগী দেশগুলোতে স্থানীয় পর্যায়ে এ শিল্পের কাঁচামালের যোগান থাকায় তারা প্রতিযোগী সক্ষমতায় অনেক এগিয়ে আছে।

এসব কারণে এ শিল্পের টেকসই প্রবৃদ্ধি নিশ্চিত করতে কৃত্রিম তন্তুর পোশাক রপ্তানি মূল্যের উপর ১০ শতাংশ হারে বিশেষ প্রণোদনা দিলে তা রপ্তানিতে নতুন দিগন্ত উন্মোচন করবে বলে তারা আশা করছেন।

প্রণোদনা পেলে তা কর্মসংস্থান বাড়াতেও ভূমিকা রাখবে বলে আশা সংগঠনটির।

এক্ষেত্রে সংগঠনের সভাপতি বাজার বহুমূখীকরণ ও নতুন বাজার তৈরিতে দেওয়া সর্বোচ্চ ৪ শতাংশ হারের প্রণোদনায় ফল পাওয়ার কথা তুলে ধরেন।

পাশাপাশি স্বল্পোন্নত দেশ হিসেবে বাংলাদেশ ইউরোপীয় ইউনিয়নের বাজারে সর্বাধিক শুল্কমুক্ত সুবিধা (ইবিএ) পেয়ে আসছে জানিয়ে বিজিএমই চিঠিতে লিখেছে, ইউরোপের বাজারে বর্তমানে সিঙ্গেল ট্রান্সফার বা ‘ফেব্রিক থেকে পোশাক’ তৈরি করেই শুল্কমুক্ত সুবিধা পাওয়া যায়।

তবে বাংলাদেশ এ সুবিধা হারালে ইউরোপে জিএসপি প্লাস ও স্ট্যান্ডার্ড জিএসপি সুবিধার আওতায় চলে যাবে। সেক্ষেত্রে ডাবল ট্রান্সফার রুলস অব অরিজিন, অর্থাৎ সুতা থেকে কাপড় এবং কাপড় থেকে পোশাক তৈরি করতে হবে।

এমন প্রেক্ষাপট তুলে ধরে বিজিএমইএর সভাপতি কৃত্রিম তন্তু খাতের ব্যাকওয়ার্ড লিংকেজ বা সহযোগী শিল্প শক্তিশালী করে বাজার ধরে রাখতে ওভেন ও নন-কটন খাতে আরও বিনিয়োগ প্রয়োজন হবে বলে উল্লেখ করেন। যে কারণে কৃত্রিম তন্তুর পোশাক রপ্তানির মূল্যের ওপর এ প্রণোদনা দিতে অনুরোধ করেন।