‘এত সুন্দর কারখানা আগে কখনও দেখিনি’

নারায়ণগঞ্জের দুটি সবুজ কারখানা ঘুরে দেখেন ১৭ কূটনীতিক; তাদেরই একজন ঢাকায় ইউরোপীয় ইউনিয়নের রাষ্ট্রদূত চার্লস হোয়াইটলি এমন মন্তব্য করেন।

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 28 Jan 2023, 06:38 PM
Updated : 28 Jan 2023, 06:38 PM

পরিবেশবান্ধব দুই পোশাক কারখানার খুঁটিনাটি ঘুরে দেখলেন ঢাকায় বিভিন্ন দেশের ১৭ কূটনীতিক।

শনিবার পোশাক রপ্তানিকারকদের সংগঠন বিজিএমইএর উদ্যোগে তারা নারায়ণগঞ্জের মিথিলা টেক্সটাইল ও ফকির ফ্যাশনের কারখানা ঘুরে দেখেন।

প্রতিনিধি দলের সদস্যরা কারখানা দুটির কর্মপরিবেশ, শ্রমিকদের সুযোগ-সুবিধা, পরিবেশবান্ধব প্রযুক্তি, কারখানা অবকাঠামো ও জ্বালানি সাশ্রয়ী বিভিন্ন কৌশল সম্পর্কে খোঁজখবর নেন।

দুপুরের আগে আড়াইহাজার উপজেলায় মিথিলা গ্রুপের কারখানা পরিদর্শন শেষে বিকালে প্রতিনিধি দলটি যায় রূপগঞ্জের ফকির ফ্যাশনের কারখানা দেখতে। সেখানে কারখানার ছাদে সৌর বিদ্যুৎ প্লান্ট, কোম্পানির নিজস্ব ডিজাইন ল্যাব, পরিবেশবান্ধব সেলাই ও কাটিং ফ্লোর, ডে কেয়ার সেন্টার ও বর্জ্য পরিশোধন প্ল্যান্ট ঘুরে দেখেন দলের সদস্যরা।

প্রতিনিধি দলটি কারখানা চত্বরে আয়োজিত মতবিনিময় সভায় বক্তব্য রাখেন, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান উপভোগ করেন।

সভায় ঢাকায় ইউরোপীয় ইউনিয়নের রাষ্ট্রদূত চার্লস হোয়াইটলি বলেন, “এ ধরনের একটি স্টেট অব আর্ট কারখানায় আমন্ত্রিত হয়ে আমি খুবই অভিভূত। এত সুন্দর কারখানা আমি আগে কখনও দেখিনি। এখানে শ্রমিকদের প্রতি মালিকদের যত্নশীলতা, অটোমেশন, উদ্ভাবন ও পরিবেশবান্ধব উদ্যোগগুলো খুবই উৎসাহজনক।

Also Read: এ বছর সর্বোচ্চ সংখ্যক কারখানা পেল পরিবেশবান্ধব লিড সনদ

Also Read: পরিবেশবান্ধব লিড সনদ পেল আরও ২ পোশাক কারখানা

“ইউরোপীয় ইউনিয়ন বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় ক্রেতা হতে পেরে গর্বিত বোধ করছি। মনে হয়েছে সত্যিকারের সোনার বাংলায় আমি এসেছি।”

সংক্ষিপ্ত বক্তব্যে বিজিএমইএ সভাপতি ফারুক হাসান বলেন, “বাংলাদেশে বিশ্বের সর্বোচ্চ সংখ্যক লিড সার্টিফায়েড গ্রিন (পরিবেশবান্ধব) কারখানা রয়েছে। বর্তমানে বাংলাদেশে সনদধারী গ্রিন ফ্যাক্টরি বা পরিবেশবান্ধব কারখানার সংখ্যা ১৮৪টি। বিশ্বের সেরা ১০০ কারখানার মধ্যে ৪৮টি এখন বাংলাদেশের।

“আমরা এখানে গ্যাস-বিদ্যুতের সাশ্রয় করতে নতুন নতুন কৌশল উদ্ভাবন করেছি। মিথিলা টেক্সটাইলের পাশেই তাদের রাইসমিল রয়েছে। তারা কারখানার বয়লার থেকে বাস্প নিয়ে সেটা ধান ভাঙানোর কাজে ব্যবহার করছে। এভাবেই আমরা আমাদের সেক্টরকে টেকসই ও জ্বালানি সাশ্রয়ী করে তুলছি।”

পররাষ্ট্র সচিব মাসুদ বিন মোমেন বলেন, “মিথিলা টেক্সটাইল কীভাবে তাদের পরিবেশ সম্মত উদ্যোগ গ্রহণ করে সারা বিশ্বে শ্রেষ্ঠত্বের আসন নিয়েছে- আজ আপনারা তা দেখলেন। আমরা আমাদের এই অর্জন বিশ্বের কাছে তুলে ধরতে চাই। ঢাকায় অবস্থানরত হাই কমিশনাররা নিশ্চয় এই বিষয়গুলো নিজ নিজ দেশে তুলে ধরবেন।

“কেবল মিথিলা টেক্সটাইল নয়, বিশ্বের সেরা ১০টি পরিবেশ সম্মত কারখানার মধ্যে সাতটিই বাংলাদেশে অবস্থিত। এসব নিয়েই বাংলাদেশ বিশ্বের দ্বিতীয় পোশাক রপ্তানিকারক দেশ।”

মিথিলা টেক্সটাইল বাংলাদেশের প্রথম লিড কারখানা হিসাবে বিশ্বের স্বীকৃতি পেয়েছে জানিয়ে কোম্পানির ব্যবস্থাপনা পরিচালক আজহার খান বলেন, “কারখানার ডায়িং, প্রিন্টিং ও ফিনিশিং লাইনে প্রতিমাসে আমরা প্রায় ৬ মিলিয়ন মিটার কাপড় উৎপাদন করি। আমরা প্রাকৃতিক আলো ও বাতাসের পরিবেশে কর্মীদের কাজ করার ব্যবস্থা করেছি। ফলে এখানকার কর্মপরিবেশ অত্যন্ত পরিবেশ সম্মত ও স্বাস্থ্যসম্মত।”

প্রতিনিধি দলে ঢাকায় জার্মান রাষ্ট্রদূত আখিম ট্র্যোস্টার, ব্রুনাই দারুসসালামের হাইকমিশনার হারিস বিন ওসমান, ভিয়েতনামের রাষ্ট্রদূত ফাম ভিয়েত চিয়েন, নরওয়ের রাষ্ট্রদূত এসপেন রিকটার-সভেন্ডসেন, সৌদি রাষ্ট্রদূত ইসা ইউসেফ ইসা আল দুহাইলান, নেপালের রাষ্ট্রদূত ঘনশ্যাম ভাণ্ডারী, থাই রাষ্ট্রদূত মাকাওয়াদে সুমিতমোর উপস্থিত ছিলেন।

এছাড়া অস্ট্রেলিয়া, নেদারল্যান্ডস, চীন, সুইজারল্যান্ড ও যুক্তরাষ্ট্রের কূটনীতিকরা প্রতিনিধি দলে ছিলেন।