নতুন নোটের সরবরাহ কম থাকার সুযোগে দাম বাড়িয়ে প্রতি বান্ডিলে অতিরিক্ত ৪০০ টাকা হেঁকেছেন ফুটপাতের বিক্রেতারা।
Published : 11 Apr 2024, 12:48 AM
বাড়ির শিশু-কিশোরদের ঈদ আনন্দের বড় অনুষঙ্গ হয়ে ওঠা নতুন নোট সংগ্রহে বড়দের এবার বেশ ভোগান্তিতে পড়তে হয়েছে; দামও দিতে হয়েছে বেশি।
ব্যাংকগুলোর নির্দিষ্ট শাখা থেকে যেমন মেলেনি নতুন টাকার নোট, তেমনি বাংলাদেশ ব্যাংক এবার নতুন নোট বিক্রি না করায় গ্রাহকরা পড়েছেন মুশকিলে।
যে কারণে শেষ বেলায় রাজধানীর ফুটপাতে ভিড় বেড়েছে নতুন নোট সংগ্রহকারীদের; যেখানে সুযোগ বুঝে দাম বাড়িয়ে প্রতি বান্ডিলে অতিরিক্ত হাঁকা হচ্ছে ৪০০ টাকা।
এবার ঈদে নতুন নোট বিনিময় শুরুর পর ব্যাংক খোলা থাকার দিনগুলোতে প্রতি বান্ডিল (একশত পিস) নতুন টাকার নোট অতিরিক্ত ২০০ থেকে ৩০০ টাকার মধ্যে পাওয়া গেলেও মঙ্গলবার তা ৪০০ টাকায় ওঠে।
নতুন নোটের এমন চাহিদার মধ্যে গুলিস্তানের ফুটপাতে টাকা হাতবদলের দোকান যেখানে বেশি সেই এলাকায় পুলিশি অভিযান চলে দুপুরের পর। এতে সন্ধ্যা পর্যন্ত নতুন টাকা বিনিময় করতে পারেনি ভ্রাম্যমাণ ব্যবসায়ীরা।
এসময় অনেকে এসে দীর্ঘ সময় দাঁড়িয়ে থাকলেও টাকা না পেয়ে হতাশ হয়ে চলে যান। তখনই প্রতি বান্ডিল ৩০০ টাকা থেকে এক লাফে চলে যায় ৪০০ টাকায়।
সেখানে নতুন টাকা নিতে আসা রফিক উদ্দিন বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, ‘‘ঈদে প্রতিবার যাওয়ার সময় নতুন টাকা নিয়ে যাই। এবারতো বেশি দাম দিলেও টাকা পাচ্ছি না। বাচ্চা পোলাপান আমার আশায় আছে।
‘‘ছোটোদের ঈদ মানেই নতুন টাকা। তাদের আনন্দ মনে হয় এবার হবে না।’’
নতুন টাকা দিতে না পারার আক্ষেপ বিক্রেতা ইসমাইল হোসেনেরও। তিনি বলেন, ‘‘ব্যাংক (বাংলাদেশ ব্যাংক) এইবার নতুন টাকা দিল না। আমাদের কাছে যারা টাকা বিক্রি করতে আসতো, তারাও আগের মতো দিতে পারছে না, দাম তাই বাড়তি।’’
সাধারণত শবে ক্বদরের রাত থেকে ঈদের আগের রাত পর্যন্ত নতুন টাকা বিনিময় হয় সবচেয়ে বেশি।
রাজধানীতে বাংলাদেশ ব্যাংকের সামনে ছাড়াও গুলিস্তান, সদরঘাট, মিরপুর, ফার্মগেইট, রায়সাহেব বাজার এলাকায় নতুন নোটের পসরা বসিয়ে থাকেন নিয়মিত ও মৌসুমি ব্যবসায়ীরা।
গুলিস্তান এলাকায় ৪০ জনের মতো টাকা বদলে দেওয়ার ব্যবসা করেন। তাদের একজন আবু হাসান বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, ঈদের সময়ে গড়ে প্রতিদিন সাত থেকে আট লাখ টাকার নতুন নোট চলে যায়। কোনো কোনো দিন এর চেয়ে বেশি হয়। তবে ঈদের আগের দুই দিন সবচেয়ে বেশি বিক্রি হয় নতুন নোট।
এসময়ে কারও কারও ১২ লাখ টাকার মতো বিক্রি হওয়ার তথ্য দিলেন বিক্রেতারা।
এবার প্রথমবারের মতো বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে নতুন নোট বিনিময় বন্ধ রাখা হয়। দেশজুড়ে বাণিজ্যিক ব্যাংকের ৮৪টি শাখার মাধ্যমে নতুন নোট বিনিময় করা হয়। ব্যাংকগুলো গত ৩১ মার্চ থেকে ৫, ১০, ২০, ৫০ ও ১০০ টাকার নতুন বিতরণ করে গত ৯ এপ্রিল পর্যন্ত।
সাধারণত বছরে দুই ঈদে ২৫ থেকে ৩৩ হাজার কোটি টাকার নতুন নোট ছাড়া হয়।