“অনিয়মে জড়িত ব্যক্তির বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে। তবে কোনো প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে না।”
Published : 20 Aug 2024, 05:03 PM
দুর্বল হয়ে পড়া ব্যাংকগুলোকে বেআইনিভাবে আর তারল্য সহায়তা দেওয়া হবে না বলে জানিয়ে দিয়েছেন বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর আহসান এইচ মনসুর।
মঙ্গলবার কেন্দ্রীয় ব্যাংকে সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময়ে সদ্য দায়িত্ব পাওয়া গভর্নর বলেন, “শরিয়াভিত্তিক ব্যাংকগুলোকে বেআইনিভাবে তারল্য সহায়তা দিয়ে সমস্যা সমাধান করবে না বাংলাদেশ ব্যাংক। আর আমানতকারী কোন ব্যাংকে আমানত রাখবে সেটা আমানতকারীর সিদ্ধান্ত। এখানে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের কিছু করার নেই।
“যেসব ব্যাংক আস্থাহীনতায় ভুগছে তার জন্য ওইসব ব্যাংকের পর্ষদই দায়ী। যেসব ইসলামী ব্যাংকের গ্রাহকরা যদি টাকা বা আমানত উঠিয়ে নেয় সেটার জন্য সেই ব্যাংকই দায়ী। অন্য কেউ দায়ি নয়। সরকার সেখানে কোনো হস্তক্ষেপ করবে না। সব সময় এসব অনিয়মে জড়িত ব্যাংকগুলোকে উদ্ধার করা ঠিক নয়।”
গত কয়েক বছরে ব্যাংক খাতের দুর্বলতা কাটাতে বাংলাদেশ ব্যাংক যেসব উদ্যোগ নিয়েছে, তাতে রোগ সারেনি।
সদ্য বিদায়ী গভর্নর আব্দুর রউফ তালুকদারের সময়ে শরিয়াভিত্তিক ব্যাংকগুলোকে প্রয়োজনীয় জামানত ছাড়াই হাজার হাজার কোটি টাকার তারল্য সুবিধা দিয়েছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক।
ব্যবসায়িক গোষ্ঠী এস আলম গ্রুপের মালিকানাধীন ইসলামী ব্যাংকসহ ছয়টি শরিয়াহভিত্তিক ব্যাংকের ঋণ দেওয়ার সীমা বেঁধে দেওয়ার কারণও ব্যাখ্যায় গভর্নর বলেন, অনিয়ম ঠেকাতেই এই ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।
অনুমোদন ছাড়া দিতে পারবে না এই ছয় ব্যাংক পাঁচ কোটি টাকার বেশি ঋণ বিতরণ করতে পারবে না বলে সোমবার কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সংশ্লিষ্ট বিভাগ থেকে ব্যাংকগুলোকে এ নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।
আহসান এইচ মনসুর বলেন, “ব্যাংকিং কমিশন হলে এসব ইসলামী ব্যাংকগুলোকে আলাদাভাবে দুর্বল ব্যাংক হিসেবে চিহ্নিত করা হবে। তাই বলে টাকা দিয়ে সহায়তা করা যেমন কোনো সমাধান নয়, ঠিক তেমনি বন্ধ করে দেওয়াও সমাধান নয়। আমানতকারিদের স্বার্থ রয়েছে।
“অনিয়মে জড়িত ব্যক্তির বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে। তবে কোনো প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে না। কেননা প্রতিটা প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে কর্মসংস্থান জড়িত রয়েছে। এছাড়া দুর্বল ব্যাংকের পর্ষদ ভেঙে দেয়ার বিষয়টিও বিবেচনাধীন রয়েছে।”
মূল্যস্ফীতি কমা না পর্যন্ত নীতি সুদহার বাড়ানো হবে বলেও জানান তিনি।
“যখন মূল্যস্ফীতি কমবে তখন নীতি সুদহারকে থামিয়ে রাখা হবে।”
ডলার দর বর্তমানে তুলনামূলকভাবে স্থিতিশীল রয়েছে জানিয়ে তিনি বলেন, “আশা করা যায় এই দর এখানেই থাকবে। তাতে মূল্যস্ফীতি কমবে বলে আশা করা যায়।
“আগে কেন্দ্রীয় ব্যাংক টাকা ছাপিয়ে সরকারকে দিয়েছে। এই সমস্যা সমাধান করা কঠিন। রেমিটেন্স প্রবাহ বাড়িয়ে আমানত বাড়াতে হবে। তাতে তারল্য সংকট কমবে।”
হাজার টাকার নোট বাতিলের এক প্রশ্নে গভর্নর বলেন, “এক হাজার টাকার নোট বাতিলের কোনো সিদ্ধান্ত হয় না। বাদ করার কোনো চিন্তাও নেই।”