“কলকাতার ব্যবসায়ীদের একটি আগ্রহপত্র মন্ত্রণালয়ে এসেছে; তবে এখনও আনুষ্ঠানিকতা শুরু হয়নি,” বলেন বাণিজ্য মন্ত্রাণালয়ের এক কর্মকর্তা।
Published : 11 Sep 2024, 08:59 PM
দুর্গাপূজা ঘিরে প্রতি বছরের মত এবারও বাংলাদেশ থেকে ইলিশ আমদানির কথা জানিয়েছেন ভারতের ব্যবসায়ীরা।
দেশটির ‘ফিশ ইমপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশন’ এ ব্যাপারে চিঠি দিয়েছে বলে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের একজন কর্মকর্তা বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে জানিয়েছেন।
ওই কর্মকর্তা বলেন, “পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে কলকাতার ব্যবসায়ীদের একটি আগ্রহপত্র মন্ত্রণালয়ে এসেছে। তবে এ বিষয়ে এখনও আনুষ্ঠানিকতা শুরু হয়নি।”
ভারতীয় ব্যবসায়ীদের চিঠিতে বলা হয়, ১৯৯৬ সালের পর থেকে প্রতিবছর গড়ে ৫ হাজার টন ইলিশ বাংলাদেশ থেকে ভারতে রপ্তানি হচ্ছিল। তবে ২০১২ সালের পর থেকে রপ্তানি অজ্ঞাত কারণে বন্ধ হয়ে গিয়েছিল। আবার গত পাঁচ বছর ধরে কেবল দুর্গাপূজাকে কেন্দ্র করে বিশেষ বিবেচনায় বাংলাদেশ থেকে ভারতে ইলিশ যাচ্ছিল।
সার্বিক পরিস্থিতি বিবেচনায় বাংলাদেশ থেকে ভারতে ইলিশ রপ্তানির সুযোগ চাওয়া হয় চিঠিতে।
বাংলাদেশে গণআন্দোলনে আওয়ামী লীগ সরকারের পতন ও অন্তর্বর্তী সরকারের দায়িত্বগ্রহণের পর মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ উপদেষ্টা ফরিদা আখতারের এক বক্তব্য ঘিরে ভারতে ইলিশ রপ্তানি নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে আলোচনা হচ্ছিল।
গত ১১ অগাস্ট সচিবালয়ে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে ফরিদা আখতার বলেন, দেশের মানুষের চাহিদা মিটিয়ে তারপর ইলিশ মাছ বিদেশে রপ্তানি করা হবে।
তিনি বলেন, “দেশের মানুষ যাতে ইলিশ মাছ পায় এবং দাম কমে, সেই উদ্যোগ নেওয়া হবে। দেশের মানুষ ইলিশ পাবে না, আর রপ্তানি হবে সেটা হতে পারে না।”
স্বল্প আয়ের মানুষের ধরাছোঁয়ার বাইরে চলে যাওয়া ইলিশ মাছের দাম নাগালের মধ্যে নিয়ে আসারও প্রতিশ্রুতি দেন উপদেষ্টা।
গত কয়েক বছর ধরেই দুর্গাপূজা উপলক্ষে ভারতে ইলিশ রপ্তানি করে আসছিল আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন সরকার। গত পূজার সময়েও ভারতে ইলিশের প্রথম যে চালান গেছে, একই দিন তার চেয়ে বেশি দামে ইলিশ কিনতে হয়েছে বরিশালবাসীকে।
এবার ৯ থেকে ১৩ অক্টোবর ভারতে দুর্গাপূজার আনুষ্ঠানিকতা চলবে। পূজা ঘিরে ভারতে ব্যাপক চাহিদা থাকায় আগের মতই ইলিশ আমদানিতে আগ্রহ দেখিয়েছেন ভারতীয় ব্যবসায়ীরা।
ভারতীয় ব্যবসায়ীদের হিসাবে দীর্ঘদিন বন্ধ থাকার পর ২০১৯ সালের সেপ্টেম্বরে ৫০০ টন রপ্তানি অনুমোদনের বিপরীতে পুরোটাই ভারতে রপ্তানি হয়েছে। পরের বছর ১ হাজার ৮৫০ টন রপ্তানির অনুমোদন দেওয়া হয়েছিল; সবগুলোই রপ্তানি হয়েছে।
২০২১ সালে ৪ হাজার ৬০০ টন ইলিশ রপ্তানির অনুমোদন দেওয়া হয়েছিল, সেবার রপ্তানি হয়েছে ১২০০ টন। ২০২২ সালে ২ হাজার ৯০০ টন ইলিশ রপ্তানির অনুমোদন দেওয়া হয়েছিল। সেবার রপ্তানি হয়েছে এক হাজার ৩০০ টন।
সবশেষ ২০২৩ সালে ৩ হাজার ৯৫০ টন ইলিশ রপ্তানির অনুমোদন দিয়েছিল বাংলাদেশ। সেখানে ১ হাজার ৩০০ টন রপ্তানি হয়েছে।